পাকিস্তানের বালুচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস বিদ্রোহীদের দখলে। এখনও সেখানে পণবন্দিরা আটকে রয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করতে পদে পদে বাধা পাচ্ছেন নিরাপত্তাবাহিনীর আধিকারিকেরা। কারণ, বিদ্রোহীরা পণবন্দিদের ঘিরে রয়েছেন। তাঁদের পরনে বিস্ফোরক ভর্তি জ্যাকেট। আত্মঘাতী সেই পোশাক পরেই তাঁরা পাক নিরাপত্তাবাহিনীর মোকাবিলা করছেন। অনেক ক্ষেত্রে নিরপরাধ যাত্রীদের ‘মানবঢাল’ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১০ জন পণবন্দিকে মেরেও ফেলা হয়েছে বলে দাবি বিদ্রোহীদের।
নিরাপত্তাবাহিনী সূত্রে খবর, পণবন্দি যাত্রীদের মধ্যে মহিলা এবং শিশুরাও রয়েছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁদেরই ‘মানবঢাল’ করছেন বিদ্রোহীরা। ফলে তাঁদের সরাসরি আক্রমণ করা যাচ্ছে না। যাত্রীদের সুরক্ষাকেই প্রাধান্য দিচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনী। তাদের অভিযান জটিল হয়ে পড়েছে। এগোতে হচ্ছে অতি সন্তর্পণে। বুধবার সকাল থেকে চলছে গুলির লড়াই।
আরও পড়ুন:
বালুচিস্তানের বিদ্রোহীরা জানিয়েছেন, ১০ জন পণবন্দিকে হত্যা করা হয়েছে। এখনও তাঁদের দখলে মহিলা ও শিশু-সহ ২১৪ জন। পাক নিরাপত্তাবাহিনীকে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা। পাকিস্তানের সরকারের তরফে এই আক্রমণকে ‘সন্ত্রাসবাদী হামলা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ জানিয়েছেন, বালুচিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকায় নিরাপত্তাবাহিনীকে সাহায্য করতে হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার বালুচিস্তানের কাচ্চি জেলার বোলান এলাকায় একটি সুড়ঙ্গে ঢোকার মুখে যখন জাফর এক্সপ্রেসটিকে অপহরণ করা হয়, তখন ওই ট্রেনে ছিলেন অন্তত ৪৫০ জন। বুধবার পর্যন্ত ১৫০ জন যাত্রীকে বিদ্রোহীদের হাত থেকে উদ্ধার করেছে নিরাপত্তাবাহিনী। তাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত ২৭ বিদ্রোহী। এই আক্রমণের দায় স্বীকার করেছে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। যাত্রীদের পণবন্দি করে তারা পাকিস্তানের জেল থেকে বন্দি বিনিময়ের দাবি জানিয়েছে। বিএলএ-র অনেক সদস্যকে সন্ত্রাসবাদী হিসাবে চিহ্নিত করে জেলবন্দি করা হয়েছে। তাঁদের ফেরত চায় সংগঠনটি। সেই উদ্দেশ্যেই ট্রেন অপহরণ। পাক সরকার বিএলএ-র দাবির বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। এই ধরনের দাবি অতীতে একাধিক বার পাক সরকার নাকচ করে দিয়েছে।