আবার আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে বিদ্রোহী দমন অভিযান শুরু করল পাক বাহিনী। বৃহস্পতিবার রাত থেকে লোয়ার দীর জেলায় তিমেরগারা পাহাড়ে দু’পক্ষের তুমুল লড়াই চলছে। এখনও পর্যন্ত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর দুই নেতা নিহত হয়েছেন বলে পাক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি।
সরকারি সূত্রের খবর, আফগান সীমান্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধাসেনা ফ্রন্টিয়ার কোর এবং সেনা কমান্ডোরা এই অভিযানে অংশ নিয়েছে। পাক সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের দাবি, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হয়েছে। নিহতদের মধ্যে টিটিপির প্রথম সারির কমান্ডার খারজি হাফিজুল্লা রয়েছেন বলে প্রকাশিত খবরে দাবি। হাফিজুল্লার বিরুদ্ধে পাক সেনার বিরুদ্ধে একাধিক প্রাণঘাতী হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছিল টিটিপি। বিদ্রোহী ওই পাশতুন গোষ্ঠীর অভিযোগ ছিল, সংঘর্ষবিরতি ভেঙে পাক সেনা এবং ‘কাউন্টার টেররিজ়ম ডিপার্টমেন্ট’ (সিটিডি)-এর যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করার ফলেই অশান্তি ছড়িয়েছে খাইবার-পাখতুনখোয়ায়। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশ লাগোয়া আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে হামলা চালিয়েছিল পাক বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান। ইসলামাবাদের দাবি, টিটিপি বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছে।
যদিও আফগানিস্তানের শাসক তালিবানের অভিযোগ, বারমাল জেলায় লামান-সহ সাতটি গ্রাম লক্ষ্য করে একের পর এক বিমান হামলা চালানো হয়েছিল। তাতে মৃত্যু হয়েছিল মহিলা, শিশু-সহ ৪৬ জন সাধারণ মানুষের। সে সময় পাক সেনাকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তালিবান। সীমান্তে কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। আমেরিকায় ড্রোন হামলায় নিহত জঙ্গিনেতা বায়তুল্লা মেহসুদ প্রতিষ্ঠিত টিটিপি বরাবরই পাক সরকারের বিরোধী। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে শতাধিক পড়ুয়াকে খুন করেছিল টিটিপি যোদ্ধারা। তার পর একাধিক অভিযান চালিয়েও তাদের বাগে আনতে পারেনি পাক সেনা। গত দেড় দশকে একাধিক অভিযান চালিয়েও তাদের বাগে আনতে পারেনি পাক সেনা। ২০০৯ সালে টিটিপি-র বিরুদ্ধে ‘অপারেশন রাহ-ই-নিজত’ চালিয়েছিল পাক সেনা। কিন্তু টিটিপি-কে বাগে আনতে পারেনি ইসলামাবাদ।