নাসার ক্যামেরায় ধরা পড়ল ইউরেনাসের এক নতুন রূপ। গ্রহটির মেরুপ্রদেশে ঘূর্ণিঝড়ের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। ঝড় উঠেছে ইউরেনাসের উত্তর মেরুতে। এর আগে এই গ্রহতে এমন কোনও ঝড়ের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
নাসার জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরি-র তরফে ইউরেনাসের এই নতুন রূপের কথা প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। পৃথিবী থেকে ৩০৮ কোটি ৫০ লক্ষ কিলোমিটার দূরে ইউরেনাস। এটি সৌরজগতের সপ্তম গ্রহ। এই গ্রহে গ্যাসীয় পদার্থের পরিমাণ অনেক বেশি। গ্রহটির উত্তরমেরুতে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড়ের আভাস পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীদের। এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে রেডিয়ো তরঙ্গ গ্রহটি থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসছে, তা-ও ধরা পড়েছে নাসার ক্যামেরায়।
আরও পড়ুন:
নিউ মেক্সিকোর একটি পর্যবেক্ষণকেন্দ্র থেকে ইউরেনাসের মেঘ ফুঁড়ে ভিতরে চোখ রেখেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, গ্রহের উত্তর মেরুতে বাতাসের প্রবাহ বেশ উষ্ণ এবং শুষ্ক। যা তীব্র শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের পরিচায়ক।
এই পর্যবেক্ষণের ফলে ইউরেনাস নিয়ে গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে গেল বলে মনে করা হচ্ছে। দূরত্বের কারণেই সৌরজগতের এই গ্রহটি সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে নেই। দীর্ঘ কয়েক দশক ইউরেনাসের মেরুপ্রদেশ পৃথিবীর দিকে মুখ করে ছিল না। ২০১৪ সাল থেকে গ্রহের উত্তর মেরু পৃথিবীমুখী হয়েছে। ফলে সেখানকার গতিবিধি বিজ্ঞানীদের ক্যামেরায় ধরা পড়ছে। আরও নতুন তথ্য হাতে পাচ্ছেন তাঁরা। যা গ্রহটি সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা বদলে দিচ্ছে।
ইউরেনাস সূর্য থেকেও বহু দূরে। সূর্যকে এক বার প্রদক্ষিণ করতে এর সময় লাগে পৃথিবীর ক্যালেন্ডারের হিসাবে ৮৪ বছর। গ্রহটি আদ্যোপান্ত কঠিন বরফে মোড়া। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ইউরেনাসের ঘূর্ণিঝড় পৃথিবীর মতো নয়। সেখানে ঘূর্ণিঝড়ে বাতাস প্রবাহিত হয় না, বরং বরফের উপর এক জায়গায় আটকে থাকে। নাসা আরও জানিয়েছে, সৌরজগতের প্রায় সব ক’টি গ্রহতেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রমাণ মিলেছে। কেবল বুধে এখনও পর্যন্ত সেই সম্ভাবনা দেখা যায়নি। কারণ, সেই গ্রহের আবহাওয়াই ঘূর্ণিঝড় গড়ে ওঠার অনুকূল নয়।