আবাসন নির্মাতাদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ওয়াকফ আইনে সংশোধন করা হয়েছে বলে দাবি করলেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের প্রধান মাহমুদ মাদানি। তাঁর দাবি, আবাসন নির্মাতারা যাতে শহরের মুখ্য স্থানগুলিতে জমি পান সেই লক্ষ্যেই ওই আইন তৈরি করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ধর্মীয় আচরণ পালনে হস্তক্ষেপ হতে পারে এমন কোনও সংশোধনী আনতে পারে না সরকার।
সম্প্রতি দেশে বলবৎ হয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী আইন। মুসলিম সমাজের একটি বড় অংশ ওই আইনের বিরোধিতায় পথে নেমেছে। আজ ওই আইনের বিরুদ্ধে কী ভাবে লড়াই চালানো হবে তার রূপরেখা স্থির করতে বৈঠকে বসেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সদস্যেরা। বৈঠকের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে মাদানি বলেন, ‘‘আগের ওয়াকফ আইনে ওয়াকফ বোর্ড যা ইচ্ছে তাই করতে পারত, যে জমি চাইত সেই জমি দখল করে নিতে পারত বলে একটি ভাষ্য তৈরিতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে আগের ওয়াকফ বোর্ড নিয়ম মেনেই গঠন করা হত।’’ তার মতে, গোটা বিষয়টি নিয়ে এমন ভাবে জনমত তৈরি করা হচ্ছে যাতে মুসলিমদের নিচু চোখে দেখা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘এই আইন আদৌ দেশের স্বার্থে আনা হয়নি। আনা হয়েছে আবাসন নির্মাতাদের সুবিধের কথা মাথায় রেখেই। যাতে শহরের মুখ্য স্থানগুলিতে ওয়াকফের জমি দখল করতে পারেন তাঁরা।’’ আজ মাদানির আশঙ্কাকে উস্কে দিয়ে ওয়াকফ আইন প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘‘বেনামী ওয়াকফ জমিতে আবাসন, স্কুল, হাসপাতাল গড়া হবে।’’ তবে তিনি এও যোগ করেছেন, গরিব মানুষের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখেই আবাসন-স্কুল তৈরি করা হবে।
আজ বৈঠকের পরে একাধিক প্রস্তাব পাশ করেছে ওই সংগঠন। মাদানি জানান, সরকার যাতে ওয়াকফ আইন প্রত্যাহার করে নেয় সেই দাবি জানানো হবে। ওয়াকফ যে ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ তা মেনে নিতে হবে। ওয়াকফ আইনে কোনও ধরনের সংশোধনী আনা যাবে না। সরকার যাতে শরিয়তি আইনে হস্তক্ষেপ না করে সে দিকটি মাথায় রাখার পাশাপাশি মুসলিম সম্পত্তি রক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণে আইন আনতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের নামে যে হিংসাত্মক আন্দোলন হচ্ছে তা বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালানোর পরামর্শ দিয়েছে সংগঠন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)