ইউরোপীয় পার্লামেন্টে চাকরি দেওয়ার ভুয়ো প্রতিশ্রুতি ও জনসাধারণের তহবিল তছরুপের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলেন ফ্রান্সের অতি দক্ষিণপন্থী নেত্রী মারিন ল্য পেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জনসাধারণের তহবিলের টাকায় নিজের দল ন্যাশনাল র্যালির কর্মী নিয়োগ করেছেন। অন্তত ২৯ লক্ষ ইউরোর এই আর্থিক দুর্নীতিতে সোমবার একটি ফরাসি আদালত তাঁকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।
তবে তার মধ্যে দু’বছর সাসপেন্ডেড সেন্টেন্স, অর্থাৎ স্থগিত শাস্তি। তবে তাঁকে পায়ে ইলেকট্রনিক ট্যাগ লাগাতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তার পরেই প্রবল প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন তাঁর দলের সদস্যরা।
পাশাপাশি, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে আগামী পাঁচ বছর তাঁর ভোটে দাঁড়ানোর উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আদালতের রায়, মারিন যদি রায়ের বিরুদ্ধে আপিলও করেন, তা হলেও ভোটে দাঁড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। অর্থাৎ, ২০২৭ সালে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না তিনি। এ দিন অবশ্য সম্পূর্ণ সাজা ঘোষণার আগেই আদালত কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান মারিন ল্য পেন।
মারিনের সঙ্গে তাঁর দল ন্যাশনাল র্যালির আরও আট জন নেতা এই প্রতারণা চক্রে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। অভিযোগ, সংসদীয় সহকারীর পদে চাকরি দেওয়ার খরচ দেখিয়ে লোক নিয়োগ করতেন তাঁরা। তার পর তাঁদের কাজে লাগানো হত দলের নানাবিধ প্রচারের কাজে। দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ১২ জন সহকারীও, তাঁদের বিরুদ্ধে উঠেছে প্রতারণার বিষয়টি গোপন করার অভিযোগ। ল্য পেন অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি কোনও অন্যায় করেননি। তাঁর রাজনৈতিক জীবন ও সম্মান ধ্বংস করার জন্য বিরোধীরা এই মামলা করেছেন।
তিন বার প্রেসিডেন্টের পদের জন্য ভোটে দাঁড়িয়েছেন মারিন, ২০২৭ সালে তাঁর জেতার সম্ভাবনা প্রবল বলেই মত বহু বিশেষজ্ঞদের। ন্যাশনাল র্যালি অবশ্য এই মামলাটিকে ‘জুডিশিয়াল ওভাররিচ’ তথা কোর্টের এক্তিয়ারের বহির্ভূত সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানও এই রায়ের সমালোচনা করে মারিনের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। ল্য পেনের রাজনৈতিক বিরোধী তথা ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রুর মতে, কারা লড়বেন, তার উপর আদালতের হস্তক্ষেপ উদ্বেগের। ফরাসি বামপন্থী দলের জাতীয় সচিব ফাবিয়েন রাসেল অবশ্য এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)