ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছিল নদিয়ার নবদ্বীপে। সেই সময় বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়ে একটি লরি। তাঁদের আটকাতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়লেন পুলিশকর্মীও! বিক্ষোভকারীদের ‘তাড়া’ খেয়ে ওই পুলিশকর্মীকে আশ্রয় নিতে হল পেট্রোল পাম্পে। এমনই দৃশ্য ধরা পড়ল নবদ্বীপ বিধানসভার কোতয়ালি থানার কানাইনগর বটতলা এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার। বুধবার ওই পেট্রোল পাম্পের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে একটি সংখ্যালঘু সংগঠন পথে নেমেছিল। প্রথমে নবদ্বীপ থানা এলাকার দেপারায় একটি সভা করেন তারা। সভা শেষে কানাইনগর বটতলা পর্যন্ত একটি মিছিলও হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, মিছিলের পর সেখানে কিছু ক্ষণের জন্য পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান এক দল জনতা। ওই সময়েই একটি লরির উপর জনতার ক্ষোভ গিয়ে পড়ে। লরি ভাঙচুরের চেষ্টা করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশকর্মী পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে তিনিও জনতার রোষের মুখে পড়েন। বিক্ষোভকারীদের ‘তাড়া’ খেয়ে তিনি কোনওক্রমে পাশের পেট্রোল পাম্পের একটি ঘরে আশ্রয় নেন। ঘটনাস্থলের যে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে (আনন্দবাজার ডট কম ওই ভিডিয়ো রং সত্যতা যাচাই করেনি) পুলিশকর্মীর পিছনে দৃশ্যত মারমুখী ভঙ্গিতে ছুটছেন একদল জনতা।
মঙ্গলবারের এই ঘটনা প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে জানিয়েছেন, ‘ওভার স্পিডিং’ একটি ট্রাক বিক্ষোভস্থল দিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় ট্রাকের গতি নিয়ে বিক্ষোভকারীরা আপত্তি জানান। সেখানেই বিতর্কের সূত্রপাত। তার পরে বেশ কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, “দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মী বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। কিছুটা ক্ষোভ তাঁর উপরে এসে পড়ে। উনি কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে একটি পেট্রোল পাম্পে আশ্রয় নেন। বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে অনেকেই তাঁকে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে দেন। পরবর্তী সময়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি মিটে যায়। গোটা ঘটনাটি ভুল বুঝাবুঝি ছাড়া আর কিছু নয়।”
আরও পড়ুন:
ওই ঘটনার রাজ্যের শাসন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। জেলা বিজেপির মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদারের বক্তব্য, “আইনের শাসন সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে এই রাজ্যে। এর দৃষ্টান্তমূলক প্রতিকার দরকার।” ওয়াকফ আইন নিয়ে আপত্তি রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। তবে এই ধরনের ঘটনা যে কাম্য নয়, তা স্পষ্ট করেছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও। শাসক শিবিরের বক্তব্য, বিলের বিরোধিতা সবাই করছে। কিন্তু হিংসার আশ্রয় নিলে, তার বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হবে।