আলাপচারিতা: ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। শনিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: রয়টার্স।
জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে বাছাবাছি করা যাবে না বলে এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়ে দিল ভারত ও ইরান। নাম না করলেও দিল্লির নিশানায় যে পাকিস্তান, তা নিয়ে সন্দেহ নেই কূটনীতিকদের।
আজ দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি। তার পরে এক যৌথ বিবৃতিতে ভারত ও ইরান জানিয়েছে, সন্ত্রাস ও উগ্রপন্থা নিয়ে দু’দেশের অবস্থান একই। জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে বাছাবাছি করা চলবে না। একই ভাবে জঙ্গিরা যাতে কোথাও আশ্রয় না পায় তাও সুনিশ্চিত করতে হবে। যে সব কারণে সন্ত্রাসের জন্ম হয় তাও নির্মূল করার চেষ্টা করা প্রয়োজন।
ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে জটিল কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে হচ্ছে দিল্লিকে। তেহরানের চরম বিরোধী আমেরিকা ও ইজরায়েল। তাদের মতে, পশ্চিম এশিয়া তথা বিশ্বে সন্ত্রাসের অন্যতম মদতদাতা ইরান। সিরিয়ায় ইরানের সঙ্গে ইজরায়েলের মুখোমুখি সংঘর্ষও শুরু হয়েছে।
কিন্তু তেলের অন্যতম উৎসব হওয়ার পাশাপাশি এশিয়ায় অন্যতম মিত্র দেশ হিসেবে ভারতের কাছে ইরানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ফলে ইজরায়েল-আমেরিকার চাপ সত্ত্বেও তেহরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছে দিল্লি। কূটনীতিকদের মতে, নাম না করলেও ইরানের মতো গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম দেশের সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে পাকিস্তানকে নিশানা করে বক্তব্য রাখতে পারাকে সাফল্য হিসেবেই দেখছে দিল্লি।
পাকিস্তানকে এড়িয়ে মধ্য এশিয়ায় পা রাখতে ইরানের চাবাহার বন্দরের উপরে বাজি ধরেছে দিল্লি। পাকিস্তানে চিনা উদ্যোগে তৈরি গ্বদর বন্দর থেকে মাত্র ৯০ কিলোমিটার দূরে চাবাহার।
এই বন্দরের মাধ্যমে পাকিস্তানকে এড়িয়ে আফগানিস্তানে পণ্য সরবরাহ করছে ভারত। আজ এই বন্দরের একটি অংশ ভারতীয় সংস্থাকে ‘লিজ’ দিয়েছে ইরান। সেখানে একটি ‘কন্টেনার টার্মিনাল’ তৈরি হবে। এ দিন মোট ৯টি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দু’দেশ। ভারতীয়দের জন্য ভিসা নীতিও শিথিল করছে ইরান।
ইরানের সঙ্গে ছয় দেশের পরমাণু চুক্তি নিয়েও আজ মুখ খুলেছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি করে আমেরিকা-সহ ছ’টি দেশ। তাতে ইরানের বিতর্কিত পরমাণু প্রকল্পের উপরে রাশ টানা হয়। তার বদলে ইরানের উপর থেকে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি সেই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার হুমকি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চুক্তিতে আরও বড় ধরনের পরিবর্তন চান তিনি।
আজ দিল্লিতে রোহানি বলেন, ‘‘ইরান শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত পরমাণু চুক্তি মেনে চলবে। আমেরিকা চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে গেলে তার ফল তাদের ভুগতে হবে।’’ রোহানির মতে, এই চুক্তির পিছনে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্য দেশগুলিরও সমর্থন ছিল। তাই আমেরিকা এক তরফা ভাবে এই চুক্তি নাকচ করলে ওয়াশিংটনকে বিপাকে পড়তে হবে। যৌথ বিবৃতিতে পরমাণু চুক্তি কার্যকর করার উদ্যোগকে সমর্থন করেছে ভারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy