পাকিস্তান সরকারের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি।—ফাইল চিত্র।
আফগানিস্তান পুনর্গঠনে ভারতের ভূমিকায় বরাবর জোর দিয়ে এসেছে আমেরিকা। আর সেই বার্তাকে কখনওই সে ভাবে গুরুত্ব দেয়নি ইসলামাবাদ। কিন্তু এই প্রথম বার আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নয়াদিল্লিরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে স্বীকার করে নিল পাকিস্তান সরকার। গত কাল পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে আফগানিস্তান পুনর্গঠন নিয়ে মুখ খুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। সেখানেই উঠে এসেছে ভারতের প্রসঙ্গ।
পাক বিদেশমন্ত্রী প্রথমে জানান, আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা একটি সংগঠিত আঞ্চলিক প্রচেষ্টার মাধ্যমেই ফলপ্রসূ হতে পারে। সেই সঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছু বৈঠক হয়েছে (সংশ্লিষ্ট দেশগুলির মধ্যে)। ভারতেরও এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আর তাতে নয়াদিল্লির সহযোগিতা প্রয়োজন।’’ প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, ‘‘শুধুমাত্র সামরিক শক্তি দিয়ে আফগানিস্তান সমস্যার সমাধান হওয়ার নয়। এখন আমেরিকা, পাকিস্তান, আফগান সরকার এমনকি তালিবানও আলোচনার মাধ্যমেই সমস্ত সমস্যার সমাধান খোঁজার চেষ্টা করছে।’’
পাক সরকারের মুখে আচমকা ভারতের ভূমিকার কথা শুনে চমকে উঠছেন কূটনীতিকরা। আসলে গত বছর নয়া আফগান নীতি ঘোষণার সময়েই ভারতকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বারবার বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে তোপ দেগেছিলেন পাক সরকারের বিরুদ্ধে। আফগানিস্তানে একের পর পর এক হামলা চালানো জঙ্গিরা যে আদতে পাকিস্তানের মাটিতে মদত পাচ্ছে, তা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তান সদর্থক ভূমিকা নিতে না পারলে মোটা আর্থিক অনুদান বন্ধের হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন। এক বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে যাওয়ার পরে সেই একই অভিযোগ তুলে খুব সম্প্রতি পাকিস্তানকে দেওয়া বিপুল অঙ্কের সামরিক অনুদান বন্ধের কথা ঘোষণা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে তখন পাক সরকারের মন্ত্রীরা আমেরিকার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। কিন্তু আফগানিস্তানে ভারতের ভূমিকার কথা স্বীকার করাটা মার্কিন চাপেরই ফল বলে মনে করছেন অনেকে। ভারত সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
কাশ্মীর সমস্যা নিয়েও মুখ খুলেছেন কুরেশি। জানিয়েছেন, করতারপুর করিডর খুলে দিয়ে পাক সরকার পড়শি দেশের পুণ্যার্থীদের প্রতি যে সৌহার্দের বার্তা দিয়েছে, তাঁর আশা, ভারত তার বিনিময়ে কাশ্মীর প্রসঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হবে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক অবশ্য আগেই জানিয়েছিল, ধর্মীয় সৌহার্দের যে বার্তা পাক সরকার দিয়েছে, তাকে ভারত স্বাগত জানায়। কিন্তু কাশ্মীরের মতো রাজনৈতিক বিষয়কে এর সঙ্গে জড়িয়ে পাক সরকার দু’দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy