—ছবি রয়টার্স।
আগামী দিনের বারাক ওবামা হিসেবে ধরা হচ্ছিল তাঁকে। জর্জিয়া থেকে জিতলে তিনিই হতেন দেশের প্রথম মহিলা কৃষ্ণাঙ্গ গভর্নর। কিন্তু রিপাবলিকান প্রার্থী ব্রায়ান কেম্পের কাছে হেরে গেলেন সেই স্টেসি অ্যাব্রামস। ভেরমন্টে ডেমোক্র্যাট ক্রিস্টিন হ্যালকুইস্টের উপরেও বাজি ধরেছিলেন অনেকে। জিতলে তিনিই হতেন দেশের প্রথম রূপান্তরকামী গভর্নর। পারলেন না ক্রিস্টিন-ও। বরং শিরোনামে কম থেকেও দেশের প্রথম ‘ঘোষিত’ সমকামী পুরুষ হিসেবে কলোরাডোর গভর্নর হতে চলেছেন জ্যারে়ড পলিস। এমন টুকরো কিছু চমক থাকলেও, কার্যত ১-১ গোলেই খেলা শেষ! মধ্যবর্তী নির্বাচনে দীর্ঘ ৮ বছর পরে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে এল বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিন্টনের ডেমোক্র্যাট দল। সেনেটে যদিও নিজেদের আসন বাড়াতে চলেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলই।
এ বার? ভোটারদের অনেকেই বলছেন, ‘‘নীল ঝ়ড় না উঠুক, কংগ্রেসের উপর যে আর কারও একার নিয়ন্ত্রণ থাকল না, সেটাই সবচেয়ে বড় পাওনা।’’ আর কূটনীতিকেরা বলছেন— প্রেসিডেন্ট যে আর মর্জিমাফিক চলতে পারবেন না, সেটা ব্যালটেই বুঝিয়ে দিয়েছেন শহর ও শহরতলির ভোটাররা। ওবামা টুইটারে লিখেছেন, ‘‘বদলের শুরু।’’
৩৬টি রাজ্যের গভর্নর নির্বাচনের পাশাপাশি, ভোট হয়েছে সেনেটের ১০০টির মধ্যে ৩৫টি এবং হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সব ক’টি অর্থাৎ ৪৩৫টি আসনেই। এখনও খবর, হাউসের দখল নিতে প্রয়োজনীয় ২১৮টির বেশিই আসন পেয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। শহরের মহিলা এবং সংখ্যালঘু ভোটারদের যে অংশটা ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে পাঠিয়েছিল, সেখানে আজ প্রত্যাখ্যানের ছবিটা স্পষ্ট। তবে ইন্ডিয়ানা, মিসৌরি, নর্থ ডাকোটার লড়াইয়ে শেষমেশ জিতেছেন রিপাবলিকানরাই।
জানুয়ারিতে শপথ নেবেন কংগ্রেসের নতুন সদস্যেরা। সব ঠিক থাকলে ফের হাউসের স্পিকার হতে চলেছেন ডেমোক্র্যাট নেত্রী ন্যান্সি পেলোসি। ফল ঘোষণা হতেই ওয়াশিংটনে সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের ধন্যবাদ। নতুন দিন আসছে আমেরিকায়।’’
আরও পড়ুন: পেলোসিকে স্পিকার পদে চাইছেন ট্রাম্পও!
এ দিকে হাউস খুইয়েও, স্বমেজাজে ট্রাম্প। সেনেট ধরে রাখার খুশিতে নিজেই নিজেকে ‘জাদুকর’ তকমা দিয়ে আজ টুইট করলেন, ‘‘১০৫ বছরে মাত্র ৫ বার সেনেট নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে কোনও ক্ষমতাসীন দল। ভোট কী ভাবে টানতে হয়, মিস্টার ট্রাম্প আবার তা দেখিয়ে দিলেন। জাদু জানেন তিনি! রিপাবলিকানরা তাঁকে নেতা হিসেবে পেয়ে ধন্য হয়েছেন।’’ আজ হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে একটি চ্যানেলের সাংবাদিকের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডাতেও জড়ান প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের চাপে আজ ইস্তফা দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস।
সেনেটে ৫১টি আসন ছিল রিপাবলিকানদের, বাড়তে পারে আরও ৩টি। দেশের এগ্জিকিউটিভ ও বিচার বিভাগীয় পদে নিয়োগ এবং অন্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির রাশ তাই ট্রাম্পের হাতেই। কিন্তু কী হবে মেক্সিকো-সীমান্তে দেওয়ালের? ডেমোক্র্যাটরা হাউসে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যাওয়ায় প্রশ্নটা উঠছেই। কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, স্বাস্থ্য বিমা থেকে অভিবাসন নীতি, নয়া কর ব্যবস্থা নিয়ে ট্রাম্প এত দিন যা করতে চেয়েছেন, তার অনেকটাই আটকে দিতে পারে ডেমোক্র্যাটরা। সে ক্ষেত্রে আইনি জটিলতায় ফাঁসলে ট্রাম্প হয় বিরোধীদের বিরুদ্ধে সুর চড়াবেন, না হয় ঠিক ঘুরপথে রাজি হয়ে যাবেন বিকল্পে! কিছু জনমত সমীক্ষায় বলা হচ্ছিল, কংগ্রেসে ক্ষমতা খোয়ালে ইমপিচমেন্টের মুখে পড়তে হতে পারে প্রেসিডেন্টকে। আপাতত সেটা হচ্ছে না। কারণ, এতে সেনেটেরও দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন। তাই শুধু হাউসের দখল নিয়ে ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের বিভিন্ন পদক্ষেপে কতটা বাধা দিতে পারবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy