গত বছর এ ছবিই দেখেছিল গোটা বিশ্ব।
সেই মুখ, আর এই মুখ! দুয়ের মধ্যে ফারাক অনেকটাই। শুধু মুখে নয়, পরিস্থিতিতেও রয়েছে বিস্তর ফারাক।
ছবিটা ঠিক কী রকম?
অ্যাম্বুল্যান্সের কমলা আসনে বসে আছে একরত্তি ছেলেটি। ধুলোমাখা কপাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে রক্ত। গত বছর ওমরান দাকনিশের সেই ছবিই হয়ে উঠেছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার মুখ। গৃহযুদ্ধে দীর্ণ সিরিয়ায় তখন প্রায় প্রতি দিনই বলি হচ্ছে হাজার হাজার ওমরান। তা নিয়ে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে।
ওমরানের ছবি ফের ভেসে উঠেছে। তবে, এ বার তার মুখে হাসি। সাজানোগোছানো ঘরে খেলে বেড়াচ্ছে। ওমরানের এই নতুন ছবি নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক। কারণ, এ বার তার বাবা মুখ খুলেছেন প্রেসিডেন্ট আসাদের স্বপক্ষে। জানিয়েছেন, এই সিরিয়াতেই তাঁর সন্তানকে বড় করতে চান। ওমরানের বাবা মহম্মদ খেইর দাকনিশ জানিয়েছেন, বিদ্রোহীদের হাত থেকে বাঁচতে ছেলের নাম পাল্টে দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে এ-ও যোগ করেছেন, আলেপ্পোতে বেশ ভালই আছে ওমরান।
আরও পড়ুন
এ বার ইরান! জোড়া জঙ্গি হামলায় আক্রান্ত তেহরান, পার্লামেন্টে গুলির লড়াই
সম্প্রতি দেখা গেল ওমরানের হাসিমুখের এই ছবি।
তবে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, সিরিয়ার আসল চিত্রটা অন্য রকম। ‘সরকারি চাপে’ই দেশের সুখকর পরিস্থিতির কথা বলছেন দাকনিশ। তাঁর মতে, ওমরানের ওই ছবি আসলে বিরোধীদের অপপ্রচার ছিল। সরকারপন্থী মিডিয়ায় এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট আসাদকে আক্রমণের উদ্দেশ্যেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সাহায্যে সে ছবি ব্যবহার করেছিল বিরোধীরা।’’
গত বছরের অগস্টে আলেপ্পোতে রাশিয়ার বিমানহানায় গুঁড়িয়ে যায় ওমরানদের বাড়ি। দেশের পূর্ব প্রান্তে ঘাঁটি গেড়ে থাকা বিদ্রোহীদের ছত্রভঙ্গ করতে সিরীয় সরকারের সঙ্গে যৌথ ভাবে হানা দেয় রাশিয়ার বোমারু বিমান। আহত পাঁচ বছরের ওমরান এবং তার দাদা ১০ বছরের আলিকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়। এর দিন দুই পরে হাসপাতালে মারা যায় আলি। উদ্ধারকাজের সময় অ্যাম্বুল্যান্সের সিটে বসা আহত ওমরানের সেই ছবি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বাবার কোলে ছোট্ট ওমরান।
গত ডিসেম্বরেই আলেপ্পোতে বিদ্রোহীদের দাপট কমে যায়। ওই শহর এখন প্রেসিডেন্ট আসাদের দখলে। সিরিয়া ইনস্টিটিউটের এক গবেষক ভ্যালেরি জাইবালার দাবি, “ওমরানেরা এখন সরকারি নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন।” আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে যাঁরাই মুখ খুলেছেন তাঁদেরই গ্রেফতার বা অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাইবালা। তাঁর মতে, এ ক্ষেত্রেও হয়তো সে রকম ঘটনাই ঘটেছে।
ছবি: সংগৃহীত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy