প্রতীকী ছবি।
চার-পাঁচ ঘণ্টার পথ পেরোতে ৩৩ ঘণ্টা!
লন্ডন থেকে আথেন্স— এই দু’হাজার কিলোমিটার পথ ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের উড়ানে পাড়ি দিতে গিয়ে এক বৃদ্ধকে এত কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে যে, তিনি পণ করে ফেলেছেন আর কখনও এই সংস্থার উড়ানে উঠবেন না!
মঙ্গলবার হিথরো থেকে আথেন্স যাওয়ার কথা ছিল বছর সাতষট্টির জিওফ লাই-এর। বন্ধুকে নিয়ে ফুরফুরে মনে চেপে বসেছিলেন বিমানে। দুপুর সওয়া একটায় সেটি ওড়ার কথা। কিন্তু খবর আসে, ককপিটে লাইটের গোলমাল হচ্ছে। তাই উড়ানটি বাতিল করা হচ্ছে।
তাতেও হাল ছাড়েননি অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ। বিকেল পাঁচটার একটি উড়ান ধরেন তিনি। কিন্তু সেখানেও বিপত্তি। বিমানচালক ও বিমানকর্মীদের ডিউটির সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল বলে উড়ানটিই বাতিল করা হয়। ক্ষুব্ধ জিওফ বলেন, ‘‘রানওয়েতে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরে জানলাম, উড়ানটি বাতিল হয়েছে!’’
পরের উড়ানটি ছিল পরের দিন। রাতটুকু কাটানোর জন্য জিওফদের কাছেরই একটি হোটেলের ভাউচার দিয়েছিল উড়়ান সংস্থাটি। সারা দিনের ওই ঝামেলার পরে তাঁদের মনে হয়েছিল, পরের দিনের উড়ান ধরে নির্বিঘ্নেই আথেন্স পৌঁছে যাবেন।
কিন্তু আসল বিপত্তি তখনও বাকি!
বুধবার দুপুরে জিওফরা ফের চড়লেন আথেন্সগামী উড়ানে। সেটি ঠিক সময়ে উড়তে স্বস্তির নিঃশ্বাসও ফেলেছিলেন। কিন্তু মাঝআকাশে আচমকা বিকট শব্দে কানা তালে লেগে গেল। একবার নয়, পরপর ছ’বার। চালক জানালেন, বিমানটির ডান দিকের ইঞ্জিনে আগুন ধরে গিয়েছে। চিন্তার কিছু নেই। তবে হিথরোয় ফিরে যেতে হবে। ততক্ষণে ছুটির কথা ভুলতে বসেছেন জিওফ। তাঁর কথায়, ‘‘আমি নিজেকে নাস্তিক ভাবতাম। কিন্তু তখন সকলের মতো আমিও ঈশ্বরের নাম জপতে শুরু করেছি।’’ সৌভাগ্যক্রমে উড়ানটি নিরাপদেই হিথরোতে অবতরণ করে।
এর পর সন্ধেবেলায় আথেন্সগামী একটি উড়ানে চেপেছিলেন জিওফরা। সেটা অবশ্য কোনও ঝামেলায় পড়েনি। বৃহস্পতিবার সকালে আথেন্সে পৌঁছন জিওফরা।
ঘটনার কথা জেনে অবশ্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ। তাদের মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা বুঝতে পারছি, এই অভিজ্ঞতা কতটা হতাশাজনক। দেরির জন্য যাত্রীদের কাছে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।’’
তাতে অবশ্য মন গলেনি জিওফের। তিনি প্রতিজ্ঞা করে ফেলেছেন, আর কোনও দিনও ওই উড়ান সংস্থার উড়ানে উঠবেন না তিনি।
তাঁর নিছক ছুটির মজাটাই যে মাটি হয়ে গেল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy