প্রায় ১৭৬ জন আরোহী নিয়ে সময়মতোই উড়েছিল আলাস্কা এয়ারলাইন্সের লস অ্যাঞ্জেলসগামী বিমানটি। তবে কিছু ক্ষণ পরই শুরু হয় বিপত্তি। কারণ বিমানটির পেটের যে অংশে মালপত্র বা পণ্যসামগ্রী থাকে, সেখান থেকে ভেসে আসতে থাকে বিভিন্ন রকম আওয়াজ। ফলে সঙ্গে সঙ্গেই সিয়াটল বিমানবন্দরে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিমানের চালক। বিমানটি অবতরণের পর জানা যায়, মালপত্র রাখার জায়গায় আটকে পড়েছিলেন এক ব্যক্তি।
পরে সেখান থেকে বেরিয়ে এসে ওই ব্যক্তি জানান, কাজের সূত্রেই পণ্য রাখার জায়গায় গিয়েছিলেন। তবে কাজ করতে করতে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। এ ঘটনায় রীতিমতো তাজ্জব বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
আলাস্কা এয়ারলাইন্স সূত্রে খবর, বিমানের মালপত্র রাখার জায়গায় আটকে পড়া ওই ব্যক্তি ‘মেনজিস অ্যাভিয়েশন’ নামে একটি সংস্থার কর্মচারী। বিমানে মালপত্র তুলে দিতে সাহায্য করে ওই সংস্থাটি। সোমবারও ‘মেনজিস অ্যাভিয়েশন’-এর জনা কয়েক কর্মী আলাস্কা এয়ারলাইন্সের বিমান ৪৪৮-এ কাজ করছিলেন। তবে কাজের শেষে বাকিরা বিমানে মালপত্র তুলে দিয়ে ওই জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে গেলেও সেখানে রয়ে গিয়েছিলেন সংস্থারই এক কর্মী।
বিমান রওনা হওয়ার আগেই ঘটনাটি নজরে আসে ‘মেনজিস অ্যাভিয়েশন’-এর বাকি কর্মীদের। এর পর ওই কর্মীকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তাঁর সহকর্মীরা। নিখোঁজ কর্মীর মোবাইলে ফোন বা মেসেজ করেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে তিনি বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ভেবে তাঁর সহকর্মীরা আর খোঁজ করেননি।
তবে বিমান ৪৪৮ ওড়ার কিছু ক্ষণ পরেই চালক নীচের জিনিসপত্র রাখার জায়গা থেকে ঠকঠক শব্দ শুনতে পান। সেই সঙ্গে প্রথম শ্রেণির যাত্রীদেরও ওই আওয়াজ কানে আসে। এক যাত্রী জেস সিকিউরো বললেন, ‘‘আমরা যে জায়গায় বসেছিলাম, ঠিক তার নীচ থেকেই আওয়াজটা আসছিল। মনে হচ্ছিল, চিৎকার করে কেউ সাহায্য চাইছে। এর কিছু ক্ষণ পরেই ঘোষণা হয়, বিমানটি আবার সিয়াটল বিমানবন্দরে ফিরে যাবে।’’
বিমান ৪৪৮ সিয়াটল-তাকোমা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর বিমানের মালপত্র রাখার জায়গা থেকে বেরিয়ে আসেন ‘মেনজিস অ্যাভিয়েশন’ সংস্থার ওই কর্মী। বিমানবন্দরের চিকিৎসকরা প্রথমে ওই কর্মীর চিকিৎসা করেন। বিমানবন্দরের তরফে জানানো হয়, সাধারণত বিমানের যে অংশে ওই কর্মী আটকে পড়েছিলেন, সেখানকার অক্সিজেন চলাচল ব্যবস্থা বন্ধই থাকে। তবে ওই কর্মীর হাঁকডাক শুনতে পেয়েই চালক অক্সিজেন চলাচলের ব্যবস্থা চালু করে দেন। ফলে বেঁচে গিয়েছেন ‘মেনজিস অ্যাভিয়েশন’-এর ওই কর্মী। এবং সুস্থও আছেন তিনি। তাঁকে পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য আবার অন্য একটি হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ছেড়েও দেওয়া হয় ওই কর্মীকে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তাঁর মাদক পরীক্ষাও হয়। তাতে অবশ্য কিছু পাওয়া যায়নি। তবে বিমানবন্দর সূত্রে খবর, ওই কর্মীর পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy