অরুণ সিংহ
এখনও যা আভাস, তাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে চাইছেন বলেই মন্তব্য করলেন আমেরিকায় নিযুক্ত প্রাক্তন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অরুণ সিংহ।
আজ, শনিবারই ১০০ দিনে পা রাখল আমেরিকার ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। অরুণের দাবি, ‘‘এইচ-১বি ভিসা কিংবা আমেরিকার অভ্যন্তরীণ কর সংস্কার নিয়ে ভারতীয়দের মধ্যে উদ্বেগ থাকলেও, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত ইতিবাচক ইঙ্গিতই দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।’’
জর্জ ডব্লিউ বুশ জমানার শেষ দিক এবং বারাক ওবামা আমলের প্রায় পুরোটাই দায়িত্বে ছিলেন অরুণ সিংহ। তাঁর এমন মন্তব্যে তাই নড়ে বসেছে ভারতীয় কূটনীতিকদেরও একাংশ। কারণ তাঁদের দাবি, এখনও পর্যন্ত ‘বন্ধুসুলভ’ তেমন কোনও ইঙ্গিত মেলেনি ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে। উল্টে ভারত-চিনের মতো দেশ থেকে আউটসোর্সিং বন্ধ করতে চেয়ে গত মার্চেই কংগ্রেসে বিল পেশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। খাঁড়ার ঘা হিসেবে এইচ-১বি আর এইচ-৪ ভিসায় কড়াকড়ি নিয়ে হুমকি তো আছেই! এর পরেও তবু কীসের ভিত্তিতে ‘ইতিবাচক ইঙ্গিত’ পাচ্ছেন প্রাক্তন ভারতীয় কূটনীতিক?
সংবাদমাধ্যমকে এর উত্তর দিতে গিয়ে অরুণ সিংহ বলছেন একশো দিনেরও আগের কথা। প্রচারে গিয়ে যে বার ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘ভারতই হতে চলেছে আমেরিকার ঘনিষ্ঠতম বন্ধু।’’ হোয়াইট হাউসে আসার ঠিক ছ’দিনের মাথায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেও একই কথা বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পরে সেই ফোনালাপ নিয়ে হোয়াইট হাউস বিবৃতি দিয়ে জানায়, ‘‘দুই নেতাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’’
অরুণ সিংহের দাবি, আমেরিকা বাস্তবিকই ভারতকে নিজের প্রধান সামরিক সহযোগী হিসেবে মনে করে। আর ট্রাম্পও এ ক্ষেত্রে পূর্বসূরিদের পথেই হাঁটতে চাইছেন। এপ্রিলেই ভারত সফরে এসেছিলেন ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচ আর ম্যাকমাস্টার। বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও বৈঠক করেন ট্রাম্পের কর্মকর্তা। প্রতিরক্ষা, জাতীয় নিরাপত্তা বা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয়, ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধিতেও উৎসাহী বলে দাবি সিংহের। এই প্রসঙ্গেই এপ্রিলের গোড়ায় ভারতীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির ওয়াশিংটন সফরের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
ট্রাম্পের প্রথম একশো দিনের কাজ নিয়ে গোটা বিশ্বে যখন কাটাছেঁড়া চলছে, মুখে কুলুপ এঁটেছে নয়াদিল্লি। এই মাসেই রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি ইঙ্গিত দেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী ট্রাম্প। আর নয়াদিল্লি বুঝিয়ে দেয়, ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়ের ক্ষেত্রগুলিতে তৃতীয় কারও হস্তক্ষেপ মানা হবে না। সূত্রের খবর, জুলাইয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে প্রথম বার বঙ্গোপসাগরে যৌথ মহড়ায় নামছে ভারতীয় নৌসেনা। এবং তা দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের আগ্রসনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে বলেই মত কূটনীতিকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy