দামোদরের জলে স্রোত ফিরতে চলেছে প্রায় শুকিয়ে যাওয়া অজয়ে।
গত এনডিএ জমানায় নদী সংযুক্তিকরণের লক্ষ্যে নীতি গ্রহণ করেছিল অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকার। কিন্তু ইউপিএ আমলে সেই নীতি কার্যত বাতিল হয়ে যায়। এখন কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেই তাই নদী সংযুক্তিকরণ পরিকল্পনাকে নতুন করে চাঙ্গা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় নীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্ষায় দামোদরের বাড়তি জল কার্যত শুকিয়ে যাওয়া অজয় নদে পাঠাতে চায় রাজ্য। তারই পরিকল্পনা আজ কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রকের কাছে জমা দেয় রাজ্য। নীতিগত ভাবে বিজেপি সব সময়েই নদী সংযুক্তিকরণের পক্ষে। তাই আজ রাজ্য সেচ দফতর ওই প্রস্তাব দেওয়া মাত্র তা লুফে নেন কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রী উমা ভারতী। তিনি রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ ব্যাপারে সব ধরনের সাহায্য করার আশ্বাস দেন। সেচ দফতর সূত্রে খবর, উমা ব্যক্তিগত ভাবে রাজ্যের ওই প্রকল্পের বিষয়ে আগ্রহ দেখান। খুঁটিয়ে জানতে চান কেন দামোদরের সঙ্গে অজয়ের সংযুক্তিকরণ করতে চাইছে রাজ্য।
পরিকল্পনাটির বিস্তারিত ব্যাখ্যায় জানানো হয়েছে, দামোদরের বন্যার কারণে প্রতি বছর বর্ধমান, হাওড়া ও হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত হয়। বর্ষায় দামোদরের বাড়তি জল বরাবরই রাজ্যের সেচ দফতরের দুশ্চিন্তার কারণ। ওই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে দামোদরের বাড়তি জলকে অজয় নদে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেচ দফতর।
কী ভাবে রূপায়িত করা হবে ওই প্রকল্প?
রাজীববাবু বলেন, “দামোদরের বাড়তি জল বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে কুন্নুর নদী ও সিংহম খালকে। দুর্গাপুর ব্যারাজের বাড়তি জল ওই নদী ও খালের মাধ্যমে ৪৫ কিলোমিটার উজিয়ে এনে কাটোয়ার নতুনগ্রামের কাছে অজয় নদে ফেলা হবে।” এতে দামোদরের নিম্ন অববাহিকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি প্রায় এক লক্ষ হেক্টর জমিও সেচের আওতায় আসবে। তবে বর্তমানে কুনুর নদী ও সিংহম খাল দু’টিই মজে গিয়েছে। যার মধ্যে কুনুর নদীর কিছুটা অস্তিত্ব থাকলেও কার্যত অদৃশ্য সিংহম খাল। তাই আগে ওই খাল ও নদীতে সংস্কার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন রাজীববাবু। তবে নদী ও খালের মজে যাওয়া অংশে জনবসতি না থাকায় জমি ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত ঝামেলা নেই বলে দাবি করেছেন সেচ দফতরের কর্তারা।
গোটা প্রকল্পটির জন্য একশো থেকে সোয়াশো কোটি টাকা খরচ হবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পটি যাতে জাতীয় প্রকল্পের মর্যাদা পায় সে জন্যও উমার কাছে আজ তদ্বির করেন রাজীববাবু। গোটা প্রকল্পটিতে রাজ্যের আগ্রহ দেখে বৈঠকে জাতীয় জল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের শীর্ষ কর্তাদের বৈঠকে ডেকে নেন উমা। পরে মন্ত্রক সূত্রে পরে জানানো হয়, পূর্ব ভারতে এ ধাঁচের এটিই প্রথম প্রচেষ্টা। প্রকল্পটি যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। তাই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সব ধরনের সাহায্য করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy