ডোনাল্ড ট্রাম্প-ইলন মাস্ক। —ফাইল ছবি।
হোয়াইট হাউসে তাঁর প্রবেশ করতে এখনও দু’মাস দেরি। কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের ‘সম্ভাব্য অবয়ব’ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে আমেরিকায়। যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০১৬ সালে ট্রাম্প জেতার পরে এমন অনেক পূর্বাভাসই শেষ পর্যন্ত মেলেনি।
আট বছর আগে সেই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টনের বিরুদ্ধে প্রচারে অন্যতম ‘মস্তিষ্ক’ ছিলেন ট্রাম্পের জামাই জেরার্ড কুশনার। ভোটের পরে মনে করা হয়েছিল, ওভাল অফিসে ‘জামাইরাজ’ প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। প্রেসিডেন্টের ‘অন্যতম পরামর্শদাতা’র বেশি এগোতে পারেননি কুশনার। এ বার ট্রাম্প এবং তাঁর রানিং মেট জেডি ভান্সের পক্ষে প্রচারের অন্যতম মুখ ছিলেন সমাজমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স এবং টেসলার কর্ণধার ইলন মাস্ক। তিনি পরবর্তী সরকারে কোনও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পান কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা দানা বেঁধেছে।
ইলন মাস্কের সঙ্গে কারা জল্পনায়?
ট্রাম্পের সরকারে প্রতিরক্ষা, বিদেশ, অর্থনীতি, বাণিজ্য, অভিবাসন, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরের সচিব কারা হতে পারেন সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের তাঁর প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা স্কট বেসেন্ট। তাঁকে অর্থসচিব (ট্রেজারি সেক্রেটারি) হিসেবে বেছে নিতে পারেন ট্রাম্প। ধনকুবের জন পলসন এবং ট্রাম্পের অন্যতম অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ল্যারি কুডলোর নামও রয়েছে আলোচনায়।
জার্মানিতে আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড গ্রেনেলকে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে রয়টার্সের পূর্বাভাস। ট্রাম্প সরকারের বিদেশ সচিব হতে পারেন তাঁর প্রথম দফার মেয়াদে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে থাকা রবার্ট ও’ব্রায়েন। তবে প্রভাবশালী রিপাবলিকান নেতা বিল হ্যাগারটি এবং ট্রাম্পের প্রদেশ ফ্লরিডা থেকে নির্বাচিত সেনেটর মার্কো রুবিওর নামও রয়েছে জল্পনায়। প্রতিরক্ষা সচিব পদে আলোচনায় রয়েছে তিনটি নাম— ফ্লরিডা থেকে হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে নির্বাচিত মাইক ওয়াল্টজ, ট্রাম্পের আগের জমানায় সিআইএ প্রধান মাইক পম্পেও এবং ট্রাম্পের রাজনৈতিক পরমর্শদাতা তথা আরাকানসের রিপাবলিকান সেনেটর টম কটন।
প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে বাণিজ্য উপদেষ্টা পদে ছিলেন রবার্ট লাইথাইজ়র। এ বার তাঁকে বাণিজ্য সচিব পদে দেখা যেতে পারে। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ আর্থিক পরামর্শদাতা তথা ক্যান্টর ফিটজেরাল্ডের কর্ণধার হাওয়ার্ড লুটনিক রয়েছেন ওই পদের দৌড়ে। আমেরিকা সেনার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিথ কেলগ এবং ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দফতরের প্রধান চাদ ওলফ এ বার ওই দফতরের সচিব পদের দাবিদার হতে পারেন। সে সময় ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট’-এর ডিরেক্টর টম হোমান পেতে পারেন অভিবাসন সংক্রান্ত দফতরের দায়িত্ব।
আলোচনায় ভারতীয় বংশোদ্ভূতও
নতুন সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল পদে জন র্যাডক্লিফকে বেছে নিতে পারেন ট্রাম্প। তিনি প্রাক্তন হাউস সদস্য। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তিনি জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স)-এর ডিরেক্টর ছিলেন। ওই পদে এ বার আসতে পারেন ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ প্রসিকিউটর মাইক লি। তিনি উটা প্রদেশ থেকে নির্বাচিত সেনেটর। হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের ‘চিফ অব স্টাফ’ পদে সুসি উইলসকে দেখা যেতে পারে। তিনি এ বারে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার সহকারী ছিলেন। আমেরিকার কংগ্রেসের প্রাক্তন ডেমোক্র্যাট সদস্য, ভারতীয় বংশোদ্ভূত তুলসী গ্যাবার্ডকেও এ বার ট্রাম্পের নয়া ‘টিমে’ দেখা যেতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, আমেরিকার ৫০টি প্রদেশের ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮। ট্রাম্প ইতিমধ্যেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০ পেরিয়ে গিয়েছেন। পরের ধাপে আগামী ১৩ ডিসেম্বর ইলেক্টরেরা সংশ্লিষ্ট প্রাদেশিক রাজধানীতে জড়ো হয়ে তাঁদের দলের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্ব শেষ করবেন। তার আগে অবশ্য প্রাদেশিক নির্বাচন কর্তৃপক্ষকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফলাফল ফেডেরাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করতে হবে। ২০২৫-এর ৬ জানুয়ারি আমেরিকার কংগ্রেসের দুই কক্ষ, সেনেট এবং হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টেটিভসের সদস্যেরা আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের অধিষ্ঠানকে অনুমোদন করবেন। ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব নেবেন ট্রাম্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy