আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে বক্তৃতা করছেন দেবাশিস হালদার। —ফাইল চিত্র।
ডাক্তারির পরীক্ষায় সিসিটিভি নজরদারির ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকবে সিসিটিভি। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও কেন্দ্রীয় ভাবে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরীক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স’ ফ্রন্টও। তবে এই প্রক্রিয়া কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের।
আরজি করের নির্যাতিত মহিলা চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গে বৃহস্পতিবার দেখা করতে গিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। প্রায় চার ঘণ্টা নির্যাতিতার বাড়িতে ছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে বেরিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দেবাশিস হালদার জানান, ফেল করার মতো ডাক্তারি পড়ুয়া তাঁরাও চান না। তিনি বলেন, “এটি তিনি নবান্নের বৈঠকেও বলেছিলেন। ফেল করার মতো ডাক্তারি পড়ুয়া আমরাও চাই না। যাঁরা পরীক্ষায় ১০ পাওয়ার যোগ্য, তাঁরা যেন ১০০ না পেতে পারেন। এটি যদি সত্যিই সরকার করতে পারে, তা অবশ্যই ভাল। শুনেছি একটি কমিটি গঠন হয়েছে। সেই কমিটি যদি এই কাজ করতে পারে, তবে অবশ্যই ভাল হবে।”
গত ২১ অক্টোবর নবান্ন সভাঘরে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স’ ফ্রন্টের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আভাস দিয়েছিলেন ডাক্তারির পরীক্ষায় কড়াকড়ির বিষয়ে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, পরীক্ষায় আর কাউকে ‘ঘাড় ঘোরাতে’ দেওয়া হবে না। এ বার সেই ব্যবস্থাই করছে রাজ্য সরকার। পরীক্ষা ব্যবস্থায় বেশ কিছু কড়াকড়ি আনা হচ্ছে। পরীক্ষার্থীদের দু’টি সারির মাঝে অন্তত ৩৬ ইঞ্চি জায়গা ফাঁকা রাখতে হবে। ক্রমিক নম্বর অনুযায়ী পরীক্ষার হলে বসতে হবে পরীক্ষার্থীদের।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি ছিল। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে এ দিনই শেষ শুনানি ছিল। আদালতের শুনানি প্রক্রিয়ার পর নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা। তবে বৃহস্পতির শুনানি পর্বে খুব একটা সন্তুষ্ট নন আন্দোলনকারীরা। দেবাশিসের কথায়, “খুবই অল্প সময় ধরে শুনানি হল। কিছু বিষয় উঠে এল। তবে খুব আশাব্যঞ্জক কিছু দেখলাম না। নির্যাতিতার জন্য ন্যায়বিচারের জন্যও খুব বেশি কথা হতে তো দেখলাম না।”
আগামী ৯ নভেম্বর আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের বেশ কিছু কর্মসূচি রয়েছে। কলেজ স্ক্যোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল রয়েছে। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ‘দ্রোহের গ্যালারি’ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে ওই দিন। তবে এই কর্মসূচিতে থাকার জন্য আলাদা করে নির্যাতিতার পরিবারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেই জানান দেবাশিস। বরং নির্যাতিতা মহিলা চিকিৎসকের পরিবারের পাশে থাকতেই তাঁরা দেখা করতে গিয়েছেন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এক সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারের দেহ উদ্ধার হয়েছে। ঝাড়গ্রামের একটি লজ থেকেই তাঁর দেহ পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। তাঁর লেখা একটি মেসেজে রয়েছে আরজি কর প্রসঙ্গ। ঝাড়গ্রামের পরিস্থিতির দিকেও নজর রাখছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের একটি প্রতিনিধিদলও সেখানে গিয়েছে বলে জানান দেবাশিস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy