সাফল্যের-হাসি: স্কুলে সকলের মাঝে উদয়। —নিজস্ব চিত্র।
উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম ভাষা হিসাবে সাঁওতালি নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে রাজ্যে প্রথম হলেন ঝাড়গ্রাম জেলার উদয় মুর্মু।
রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়ের কলাবিভাগের ছাত্র উদয় পেয়েছেন ৪৩০ (৮৬ শতাংশ)। বিনপুরের লোয়াপাড়া গ্রামের ছেলে উদয়ের বাবা সাহেবরাম মুর্মু ও মা শ্রীমতীদেবী খেতমজুরি করেন।
টিনের চালের মাটির বাড়ি। নিজে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোননি। স্ত্রীও নিরক্ষর। দু’জনেই চেয়েছিলেন ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা শিখে মানুষ হোক। উদয়ের দুই বোন বিনপুরের দু’টি স্কুলে নবম ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই উদয় একলব্য স্কুলের আবাসিক পড়ুয়া। ২০১৫ সালে এখান থেকেই মাধ্যমিকে ৩৯৮ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হন। উচ্চ মাধ্যমিকে ছেলের এমন সাফল্য খুশি বাবা-মা। খুশি স্কুলের শিক্ষক থেক সহপাঠী সকলেই।
কী ভাবে এল সাফল্য? উদয়ের কথায়, ‘‘মিশন কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নেওয়ার পরে স্কুলে নৈশকালীন বাড়তি কোচিং ক্লাস হয়েছে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা অত্যন্ত যত্ন নিয়ে পড়িয়েছেন। গত এক বছরে স্কুলের পরিবেশটাই বদলে গিয়েছে। শৃঙ্খলা ও নিষ্ঠার সঙ্গে ভাল কিছু করতে হবে এই আদর্শ নিয়ে পড়াশোনা করেছি।” ভবিষ্যতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স নিয়ে বেলুড় বিদ্যামন্দিরে স্নাতকস্তরে পড়তে চান উদয়। ইচ্ছা ডব্লুবিসিএস অফিসার হওয়া। স্কুলের সাঁওতালি ভাষার শিক্ষক রাজু মুর্মু বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ স্কুলের ৫৪ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ২৫ জনের প্রথম ভাষা ছিল সাঁওতালি। তাঁদের মধ্যে ১৭ জন ছাত্রছাত্রী সাঁওতালিতে আশি শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেয়েছেন। এটা আগামী দিনে সাঁওতালি ভাষায় পড়াশোনা করতে পড়ুয়াদের উৎসাহিত করবে।”
এক সময় একলব্য স্কুলের বেহাল পরিকাঠামো নিয়ে আদিবাসী মহলে অসন্তোষ ছিল। ২০১৬-র জানুয়ারিতে স্কুলের পরিচালন ভার বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর স্বামী শুভকরানন্দের তত্ত্বাবধানে স্কুলটির ভোল বদলে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy