Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Kamala Harris vs Donald Trump

কী স্বার্থ ভারতের! কমলা না ট্রাম্প, হোয়াইট হাউসে কে বসলে সুবিধা বেশি? কার কী ভাবনা অভিবাসন, বাণিজ্যে

কমলা হ্যারিস? না ডোনাল্ড ট্রাম্প? আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে কে বসলে ভারতের বেশি সুবিধা? অভিবাসন নীতি, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য-সহ একাধিক বিষয়ের দিকে নজর রাখছেন ভারতীয় কূটনীতিকেরা।

(বাঁ দিকে) কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০:৫৩
Share: Save:

রিপাবলিকান শিবিরের ডোনাল্ড ট্রাম্প? না ডেমোক্র্যাট দলের কমলা হ্যারিস? আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে কে দায়িত্ব পাচ্ছেন, সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে ভারতও। কে ক্ষমতায় এলে কতটা সুবিধা— কূটনৈতিক এমন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অঙ্ক কষাও শুরু হয়েছে। বিশেষ করে নজরে রয়েছে বাণিজ্য নীতি, অভিবাসন নীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলি।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে আমেরিকার বাণিজ্য নীতিতে বহুপাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা গিয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং বাণিজ্যিক চুক্তির উপরে। বাইডেনের আমলে ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলানো কমলা এ বার প্রেসিডেন্ট হলে তাঁর আমলেও বাণিজ্য নীতি একই রকম থাকতে পারে বলে অনুমান। অন্য দিকে ট্রাম্পের ক্ষেত্রে অনেকটা আগ্রাসী বাণিজ্যিক মনোভাব দেখা যেতে পারে। যার প্রভাব বিশ্ব বাণিজ্যে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। হ্যারিস ক্ষমতায় এলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতের স্বার্থ বেশি গুরুত্ব পেতে পারে বলে মত একাংশের। ট্রাম্পের ক্ষেত্রেও আমেরিকার বাজারে ভারতীয় পণ্যের প্রভাব তুলনামূলক ভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। চিনের বদলে ভারত থেকে আমদানিতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে। কিন্তু ট্রাম্পের আগ্রাসী বাণিজ্যিক মনোভাবের কারণে তাতে প্রভাব পড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

আমেরিকার ভোটে ভারতীয়দের অন্যতম একটি চিন্তার বিষয় অভিবাসন নীতি নিয়ে সে দেশের পরবর্তী প্রশাসনের অবস্থান। বিশেষ করে এইচ-১বি ভিসা নিয়ে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কোন পথে হাঁটবেন তা ভাবাচ্ছে ভারতীয়দের। কোনও আমেরিকান সংস্থায় আমেরিকার বাইরের কোনও কর্মীর এই ভিসা প্রয়োজন হয়। ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের জন্য যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রশাসন অভিবাসন বিধিতে আরও কড়াকড়ি আনতে পারে। তাতে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের কর্মীরা ছাড় পেলেও সমস্যায় পড়তে পারেন অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত স্বল্পপ্রশিক্ষিত বা অপ্রশিক্ষিত কর্মীরা। এ বিষয়ে তুলনায় উদার ডেমোক্র্যাটিক প্রশাসন। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টদের আমলে গড়ে ৯০.৭ শতাংশ এইচ১-বি ভিসায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্টদের আমলে সেই গড় ৯৪.৬ শতাংশ।

পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহারের দিকে আরও বেশি জোর দিতে চান হ্যারিস। ভারতেরও লক্ষ্য কয়লা, পেট্রোপণ্যের মতো জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনা। এই বিষয়ে হ্যারিসের প্রশাসনের সঙ্গে ভারতের মনের মিল হতে পারে। অন্য দিকে ট্রাম্পের নজর চিরাচরিত শক্তির দিকেই। সেটিও ভারতের জন্য লাভদায়ক হয়ে উঠতে পারে। কারণ, পেট্রোপণ্যের জন্য ভারতের আমদানির উপর নির্ভর করতে হয়। ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে বিশ্বে অপরিশোধিত তেলের দাম করতে পারে। যাতে সুবিধা পাবে ভারতও। চিরাচরিত শক্তির দিকে নজর দিলেও টেসলা কর্তা ইলন মাস্কের সঙ্গে ট্রাম্পের সখ্য বেশ ভাল। এ বারের ভোটে ট্রাম্পের হয়ে প্রচারও করেছেন তিনি। ট্রাম্প জিতলে কি ভারতীয় বাজারে টেসলা-স্টারলিঙ্ক আসার পথ আরও সুগম হবে? তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে।

প্রতিরক্ষায় আন্তর্জাতিক স্তরে বোঝাপড়ার উপরেও ট্রাম্প ও হ্যারিস উভয়ের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। হ্যারিস ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের প্রভাব কমাতে চান। সে জন্য এই অঞ্চলের দেশগুলির সঙ্গে বন্ধুত্বে আরও জোর দিতে আগ্রহী কমলা। অন্য দিকে ট্রাম্প চান ‘কোয়াড’ সদস্য রাষ্ট্রগুলির বন্ধুত্ব আরও মজবুত করতে। এ ক্ষেত্রে উভয়েরই লক্ষ্য ‘প্রতিপক্ষ’ চিনকে চাপে ফেলা। সে ক্ষেত্রে ট্রাম্প বা কমলা, যিনিই প্রেসিডেন্ট হোন না কেন— ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক আরও মজবুত হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE