অতিমারির স্মৃতি ভুলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে পর্যটন ব্যবসা। বছরের শুরুতে পুরুলিয়ার পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে ভিড় করেছিলেন বহু মানুষ। তবু ভাল ব্যবসা হয়নি বলে আক্ষেপ অযোধ্যা পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসায়ীদের। তাদের পাখির চোখ এখন আসন্ন দোল পূর্ণিমা। ব্যবসায়ীদের আশা, দোলের সময় এত দিনের ব্যবসার ঘাটতি তাঁরা মিটিয়ে নিতে পারবেন।
দিন কয়েক পরেই পলাশে ঢেকে যাবে পুরুলিয়া। অযোধ্যা পাহাড়ে দেখা মিলতে পারে ময়ূর, শেয়াল, হায়না বা হাতিরও। এই সুযোগ পর্যটকেরা ছাড়তে চাইবেন না বলেই মত হোটেল ব্যবসায়ীদের। অযোধ্যা পাহাড়ে হোটেল রয়েছে কেপি সিংহ মাহাতোর। শীতে কেমন ব্যবসা হল? ওই ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘ভিড় মোটামুটি ছিল। তবে ব্যবসা ভাল হয়নি। সামনে দোল। ওই সময়টায় ভিড় হবে বলে আশা।’’
আরও পড়ুন:
পুরুলিয়া স্টেশন থেকে গাড়িতে ৩৫ কিলোমিটার দূরে বেগুনকোদর। পাহাড়ি রাস্তার গায়ে লেগে থাকা ছোট ছোট গ্রাম। বেগুনকোদর গ্রাম লাগোয়া অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে মুরগুমা। এই গ্রামের পাশেই সাহারজোড় নদীকে ঘিরে সুন্দর জলাধার। শান্ত লেকের জলে ছায়া ফেলে পাহাড়ের ছবি। চারপাশে শাল, পিয়ালের জঙ্গল। মুরগুমা ড্যাম থেকে অযোধ্যা হিলটপের দূরত্ব সতেরো কিলোমিটার। ড্যামের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে রাস্তা এঁকেবেঁকে উঠে গিয়েছে অযোধ্যা হিলটপে। রয়েছে বামনি ফলস, সুইসাইডাল পয়েন্ট, পাখিপাহাড়, আপার-লোয়ার ড্যাম, তুর্গা ড্যাম। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, অযোধ্যা পাহাড়ে পর্যটকদের সুবিধার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে জেলা প্রশাসন। একটা সময়ে গোটা এলাকাটা মাওবাদী প্রভাবিত ছিল। এখন রাতেও অনয়াসে ঘুরে বেড়ান পর্যটকেরা। সহায়তা কেন্দ্রের পাশাপাশি পুলিশি উদ্যোগে চালু হয়েছে সহায় অ্যাপস। শীতের শেষেও পর্যটকের আনাগোনা রয়েছে এখনও।
ইদানীং অনেকেই গাড়ি নিয়ে পুরুলিয়া ঘুরতে আসছেন। তাতে গাড়ি ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় কিছুটা মন্দা। তেমনই এক জন ব্যবসায়ী মলয় চন্দ্র। তাঁর কথায়, ‘‘ভিড় তো হচ্ছে। কিন্তু বহু পর্যটক এখন গাড়ি নিয়েই আসছেন। তাই আমাদের ব্যবসা যে ভাল হচ্ছে, সেটা বলা যাবে না।’’
তবে সমস্ত সংকট দোলে কেটে যেতে পারে বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।