সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতা ও প্রতিবাদকে ঘিরে হিংসা ছড়িয়েছে পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদে। উত্তপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ও। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রীতির বার্তা দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সোমবার নলহাটি পুর-শহরে, ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া একটি বেসরকারি অনুষ্ঠান ভবনে তৃণমূলের কর্মী সমাবেশে দলীয় কর্মীদের প্রতি অনুব্রতের বার্তা, ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ মিছিল থেকে বীরভূমে যেন কোথাও অশান্তি বা হানাহানি না হয়।
মুরারই, নলহাটি, হাঁসন ও ময়ূরেশ্বর—এই চারটি বিধানসভা এলাকার বিধায়ক, ব্লক সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি-সহ দলের সমস্ত স্তরের শাখা সংগঠনের নেতৃত্বকে নিয়ে এ দিন সাংগঠনিক সভা করেন অনুব্রত। ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত ঘোষ, আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি ত্রিদিব ভট্টাচার্য প্রমুখ। মুরারই ২ ব্লক সভাপতি আফতাবউদ্দিন মল্লিক এবং রামপুরহাট ২ ব্লক সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায় শারীরিক অসুস্থতার জন্য উপস্থিত ছিলেন না।
সভার শুরুতে চারটি বিধানসভার অধীন ব্লক সভাপতিরা তাদের ব্লকের সংগঠন কেমন চলছে এবং ব্লকের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ছোট ছোট করে বক্তব্য রাখেন। বিধায়ক থেকে ব্লক সভাপতি, সকলেই জানিয়ে দেন, জেলা সভাপতির দেওয়া নির্দেশ মেনেই দলের সংগঠনকে আরও ভাল করে চালাবেন। সভার শেষে অনুব্রত মণ্ডল দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘রাজ্যে সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী ও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখছেন। তিনি আমাদের রাজ্যে ওই আইন চালু হতে দেবেন না বলে আশ্বস্ত করেছেন। সেখানে আমাদের মধ্যে হানাহানি করে কী লাভ!’’ অনুব্রতের সংযোজন, ‘‘আপনারা আমাকে কথা দিন, কোনও অশান্তি এই জেলায় করবেন না।’’
এর পরে পাইকর, নলহাটি, মাড়গ্রাম যেখানে যেখানে ওই আইনের বিরোধিতায় মিছিল হবে, সেখানে এক সঙ্গে হিন্দু-মুসলিম সকল নেতৃত্বকে উপস্থিত থাকার নির্দেশে দেন অনুব্রত। সূত্রের খবর, ১৬ এপ্রিল পাইকর, নলহাটি এবং মাড়গ্রামে মিছিল আছে। ১৭ তারিখ রামপুরহাটে মিছিল হবে।
অন্য দিকে, এ দিনই বোলপুরের পাড়ুই পাড়ুই ব্লক জমিয়তের তরফে সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে মিছিলের আয়োজন করা হয়। পাড়ুই মাদ্রাসার সামনে থেকে মিছিল বের হয়ে বাজার পরিক্রমা করে পাড়ুই থানা মোড়ের কাছে শেষ হয়। মিছিল শেষে সেখানে একটি পথসভা করে আইন প্রত্যাহারের দাবি জানানোর পাশাপাশি সকলকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অনুরোধ জানানো হয় উদ্যোক্তাদের তরফে। কয়েক হাজার মানুষ এই মিছিল ও পথসভায় শামিল হন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)