কনকনে ঠান্ডা জল খেলে কি সত্যিই ওজন কমে? বরফ গোলা জল খেলে ওজন কমবে, এমন ধারণা রয়েছে অনেকেরই। ‘আইস ডায়েট’ নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। ‘নেচার রিভিউস এন্ডোক্রিনোলজি’ নামক জার্নালে এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ঠান্ডা জল বা ঠান্ডা খাবার খেলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
গবেষকেরা দাবি করেছেন, থার্মোজেনেসিসের কারণে ওজন কমতে পারে। অর্থাৎ খুব ঠান্ডা জল খেলে শরীর তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে তাপ উৎপন্ন করে। এই তাপই বাড়তি ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। তাই বরফ দেওয়া জল খাওয়া, বরফ জলে স্নান করা বা ঠান্ডা খাবার খেলে ওজন কমতে পারে এমন ধারণা করা হয়েছে। যদিও আইস ডায়েট যে কার্যকরী সে ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।
এখন কথা হল, বরফ দেওয়া জল বা হিমশীতল শরবত খাওয়া শরীরের জন্য কতটা ভাল? এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, ঠান্ডা জল বেশি খেলে ওজন কতটা কমবে তা জানা নেই, তবে নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেবে। যাঁদের ঠান্ডা লাগার ধাত রয়েছে, তাঁদের জ্বর-সর্দি-কাশির মতো সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না, অতিরিক্ত ঠান্ডা জল খেলে শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াগুলিও ব্যাহত হতে পারে।
আরও পড়ুন:
ঠান্ডা জল রক্তজালিকা, রক্তবাহিকাগুলির নমনীয়তা নষ্ট করে দেয়। ফলে সারা শরীরেই রক্ত চলাচল ব্যাহত হতে পারে। পেশিতে টান ধরা, পেটফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও হতে পারে।
সাইনাস বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের ধাত থাকলে তা আরও বেড়ে যাবে। গলায় সরাসরি ঠান্ডা জল ঢাললে তার সংলগ্ন পেশির নমনীয়তা নষ্ট হয়। খাবার গিলতে সমস্যা হয়। শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে। গলাব্যথা বাড়বে। যে হেতু ঠান্ডা জল খেলে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়, তাই খাবার হজম করতেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া মাইগ্রেনের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই ‘আইস ডায়েট’ করতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুব জরুরি।