Advertisement
E-Paper

মূল্যবৃদ্ধি কমুক, আশা নতুন বছরে

চৈত্রের শেষ দিনে দুবরাজপুর বাজারের একটি চালের দোকানে গিয়ে অবাক স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ চক্রবর্তী।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:০৮
Share
Save

বাংলা নতুন বছর শুরু আজ, মঙ্গলবার। কিন্তু আম বাঙালির উৎসব পালনে মূল কাঁটা মূল্যবৃদ্ধিই। চাল, ভোজ্য তেল, ওষুধ থেকে রান্নার গ্যাস সবের দাম বেড়েছে। তবে একটি দিনও যেটা ছাড়া সংসার চলবে না, সেই চালের দামও রীতিমতো আকাশছোঁয়া। গত বছর যা দাম ছিল, এ বছর সে সব জিনিসের দাম লাফ দিয়ে বেড়েছে। তাই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যাতে নাগালের মধ্যে থাকে, নববর্ষে সেটাই চান গৃহস্থ।

চৈত্রের শেষ দিনে দুবরাজপুর বাজারের একটি চালের দোকানে গিয়ে অবাক স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ চক্রবর্তী। মাস খানেক আগে চালের ১০ কিলোর যে চালের প্যাকেট ৫৫০ টাকায় কিনেছিলেন, সেই প্যাকেটের জন্য সোমবার ৬১০ টাকা চাইছেন দোকানদার। চাল বিক্রেতার জবাব, ‘‘আমাদের কেজি প্রতি ৫৮ বা ৫৯ টাকায় কিনতে হচ্ছে, কী করি বলুন!’’ রীতিমত বিরক্ত রাজ্য সরকারের অবসরপ্রাপ্ত ওই কর্মী জবাবে বলে উঠলেন, ‘‘অবাক কাণ্ড, গত বার ধানের উৎপাদন জেলায় খুব ভাল হয়েছিল। ভেবেছিলাম সস্তা হবে চালের দাম। কিন্তু এ তো উল্টো কাণ্ড!’’

এই অভিজ্ঞতা শুধু দুবরাজপুরের ওই বাসিন্দার নয়, জেলা জুড়ে অনেকেরই। মাস দুই আগেও যে চাল কিলো প্রতি ৪৭ বা ৪৮ টাকা ছিল সেটা এখন ৬০ বা ৬১ টাকা বলছে। তাঁদের অন্যতম সিউড়ি শৌভিক সাহা বা মহম্মদবাজারের অচিন্ত্য পাল। তাঁরা বলছেন, ‘‘এত দাম বাড়ছে, মানুষ কি ভাতও খাবে না!’’

দুবরাজপুরের চাল ব্যবসায়ী রামভজন নায়ক এবং মহম্মদবাজারের চাল ব্যবসায়ী ভাস্কর সাধু বলছেন, ‘‘সবচেয়ে দাম বেশি বেড়েছে মিনিকিটের। জিরাকাঠি, বাঁশকাঠির মতো সরু দানার চাল, এমনকি গোবিন্দভোগ চালের দামও অনেকটাই বেড়েছে।’’ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, কুইন্টাল প্রতি গড়ে বৃদ্ধি ১৫০০ টাকা। সাঁইথিয়ার চাল ব্যবসায়ী সঞ্জীবন সরকার বলছেন, ‘‘কেন তা বাড়ল জানি না। দাম শুনে খদ্দেররা বিরক্ত হচ্ছেন। তবে চাহিদা জোগানের সামঞ্জস্য না থাকায় এমনটা হয়েছে।’’

কেবল চালই নয়, সংসার চালানোর সমস্ত জিনিসেরই দাম বাড়ছে। বেড়েছে গ্যাসের দাম। সঙ্গে যোগ হয়েছে ওষুধের দাম। তাই মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা থেকে মুক্তির আশা করছেন সকলেই। সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন নিম্নবিত্তরা। মহম্মদবাজারের বাসিন্দা নির্মল মণ্ডল, ‘‘চাল, রান্নার গ্যাস থেকে ওষুধ সব কিছুরই তো দাম বেড়েছে। মায়ের জন্য ওষুধও লাগে। চাইব নতুন বছরে মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা থেকে মুক্তি চাই।’’ দুবরাজপুরের স্কুলে রান্নার দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য তুলসী দত্ত বলছেন, ‘‘গ্যাসের দাম বাড়লে মাঝেমধ্যে কাঠের জ্বালে রান্না করতে হয়। খুব সমস্যা হয়। দাম কম থাকলে অসুবিধে থাকে না।’’

ওষুধের দাম বৃদ্ধিতেও নাজেহাল আমজনতা। তেমনই একজন মুরারই ১ ব্লকের বািসন্দা বিশ্বরূপ দত্ত। তিনি জানালেন, তাঁর বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধা মা। তাঁর নানা সমস্যা রয়েছে। বিশ্বরূপ বলছেন, ‘‘হৃদযন্ত্রের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস রয়েছে। শ্বাসকষ্টের নানা সমস্যাও রয়েছে।’’ তাঁর জন্য ওষুধ বাবদ অনেক টাকার ওষুধ লাগে। বিশ্বরূপের কথায়, ‘‘প্রতিদিন যেভাবে ওষুধের দাম বাড়ছে, সামলাতে পারছি না। নতুন বছরে ওষুধের দাম কিছুটা কমুক।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bengalis

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}