অনেক দিন আগে থেকেই জানতেন স্ত্রীর সঙ্গে ভাইয়ের ‘সম্পর্ক’-এর কথা। কিন্তু আচমকা কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন অমূল্য? —প্রতীকী চিত্র।
ভালবাসা আসলে ভাল রাখা। তাই স্ত্রীর সঙ্গে ভাইয়ের প্রেমের সম্পর্ক জানতে পেরে দু’জনকে এক সঙ্গে থাকার সুযোগ করে দিলেন প্রৌঢ়। তাঁদের চার হাত এক করে দিলেন তিনি। শুক্রবার এমনই ঘটনা ঘটল নদিয়ার শান্তিপুরের এক নম্বর ওয়ার্ড বাগচির বাগান এলাকায়।
বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতেন আগে থেকেই। কিন্তু তাঁদের এ ভাবে দেখবেন ভাবেননি। শুক্রবার মাঝরাতে স্ত্রী ও ভাইকে একই ঘরে আপত্তিকর অবস্থায় দেখার পর কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। কোনও ঝামেলা না করে প্রতিবেশীদের ডেকে আনলেন। তার পর ২৪ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনে স্ত্রীকে ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে দিলেন। বরকর্তার মতো দাঁড়িয়ে থেকে ভাইকে নির্দেশ দিলেন বৌদির সিঁথিতে সিঁদুর দিতে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পেশায় ঢালাই মিস্ত্রি অমূল্য দেবনাথের সঙ্গে বছর ২৪ আগে দেখাশোনা করে বিয়ে হয় বাবলা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা দিপালী দেবনাথের। ওই দম্পতির ১৯ বছরের ছেলে রয়েছে। কর্মসূত্রে তিনি ভিন্রাজ্যে থাকেন। প্রতিবেশীরা বলছেন, নির্ঝঞ্ঝাট সংসার ছিল। তেমন কোনও অশান্তি হতে দেখেননি তাঁরা। তবে অমূল্য জানতেন তাঁর ভাই কেশবের সঙ্গে স্ত্রীর ‘সম্পর্ক’ আছে। এ নিয়ে খুব একটা অশান্তি হয়নি। তবে স্ত্রী ও ভাইকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে তাঁদের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অমূল্যের কথায়, ‘‘বুঝেছিলাম জীবনে চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় চলে এসেছে। ওরা পরস্পর পরস্পরকে ভালবাসে। তাই ওদের ভাল থাকার সুযোগ করে দিলাম।’’ কান্নাভেজা চোখে প্রৌঢ়ের সংযোজন, ‘‘স্ত্রীকে বিয়ে দিয়ে ভাইয়ের হাতে তুলে দিলাম। এ ছাড়া অন্য কোনও উপায় ছিল না।’’
মাঝরাতে পুরো ঘটনায় স্তম্ভিত এলাকাবাসী। শান্তশিষ্ট বলে জেনে আসা অমূল্য যে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তা বিশ্বাস করতে পারেননি তাঁরা। অমূল্যের এক প্রতিবেশী আকাশ দেবনাথ বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিনের কষ্টার্জিত টাকায় কেনা বাড়ি ভালবেসে বৌকে লিখে দিয়েছিল। এখন বৌয়ের সঙ্গে বাড়িটাও না চলে যায়!’’ এ নিয়ে শান্তিপুর পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহানন্দ বিশ্বাসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘পরকীয়াকে আদালত স্বীকৃতি দিয়েছে। এর পরে আমাদের কিছু বলার থাকে না।’’ মায়ের সঙ্গে কাকার বিয়েকে কী ভাবে দেখছেন ছেলে। ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কী বলব, ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।’’
তবে সদ্য বিবাহিত কেশব ‘লোকের কথা’য় কান দিচ্ছেন না। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘যা হয় ভালর জন্য হয়। আমি কোনও বেআইনি কাজ করিনি। আইনত কোনও সমস্যা যাতে না হয়, সেটা দেখার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করব।’’ তবে শুক্রবারের পর থেকে দিপালী আর বাড়ি থেকে বেরোননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy