ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের বিরুদ্ধে এ বার ইউরোপীয় ইউনিয়নকে একজোট হওয়ার বার্তা দিল চিন। আমেরিকার ‘একতরফা হুমকি’ প্রতিরোধে জোট বাঁধাই শ্রেয় বলে মনে করছে তারা। সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, বেজিঙে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ়ের সঙ্গে বৈঠকে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই প্রস্তাব দিয়েছেন।
চিনা প্রেসিডেন্ট শি বলেছেন, ‘‘চিন এবং ইউরোপের উচিত তাদের আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালন করা। ভয় না পেয়ে যৌথ ভাবে আমেরিকার একতরফা হুমকির প্রতিরোধ করা।’’ চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ানের মতে, এই ধরনের বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ জয়ী হয় না। তাঁর কথায়, ‘‘চিন এই যুদ্ধ লড়তে চায় না। কিন্তু আমরা ভয় পাই না। যদি আমেরিকা সত্যিই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে চায়, তবে তাদের এই ধরনের চাপ প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে। চিনের বিরুদ্ধে এই ধরনের কৌশল কাজ করবে না।’’ লিনের দাবি, আমেরিকা যদি শুল্ক এবং বাণিজ্যযুদ্ধের উপর জোর দেয়, তবে চিনও শেষ পর্যন্ত তার জবাব দেবে।’’
দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে নতুন শুল্কনীতির কথা জানান। তাঁর স্পষ্ট দাবি ছিল, যে দেশ মার্কিন পণ্যের উপর যত বেশি শুল্ক আরোপ করে, সেই দেশের পণ্যের উপর আমেরিকাও তত পরিমাণ আমদানি শুল্ক চাপাবে। তার পরই ধাপে ধাপে বিভিন্ন দেশের উপর বিভিন্ন পরিমাণ পাল্টা শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। এই শুল্কনীতিকে কেন্দ্র করে তোলপাড় গোটা বিশ্ব। আলোচনা, সমালোচনা চলছেই। সেই আবহেই ট্রাম্প জানান, ৯০ দিনের জন্য নয়া শুল্কনীতি স্থগিত রাখছেন। তবে সেই তালিকা থেকে বাদ থাকছে শুধু চিন।
আরও পড়ুন:
বুধবার চিনা পণ্যের উপর শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ১২৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে বৃহস্পতিবার রাতে (ভারতীয় সময় অনুসারে) জানা যায়, আমেরিকার বাজারে চিনা পণ্যের উপর মোট শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ১২৫ শতাংশ নয়, ১৪৫ শতাংশ করা হয়েছে। অন্য দিকে, চিন কর্তৃপক্ষও আমেরিকার উপর পাল্টা শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, মার্কিন শুল্কনীতির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়ার জন্য বিভিন্ন দেশকে আহ্বান জানাচ্ছে চিন। অস্ট্রেলিয়ার কাছে সেই প্রস্তাব যায়। যদিও অস্ট্রেলিয়া চিনের প্রস্তাব সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করে জানায়, তারা কেবল জাতীয় স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেবে। এ ছাড়াও, ভারতকেও এক হওয়ার বার্তা দেয় চিন। যদিও চিনের প্রস্তাব নিয়ে নয়াদিল্লি এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। এ বার ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পাশে থাকার আহ্বান জানাল চিন।
- দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথম মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে প্রথম ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর ভাষণে যেমন উঠে এসেছে আমেরিকার বিভিন্ন বিষয়, তেমনই জায়গা পেয়েছে বিদেশনীতিও।
- পূর্বসূরি জো বাইডেনের সরকারের সমালোচনাও শোনা গিয়েছে ট্রাম্পের কণ্ঠে। তাঁর ভাষণ জুড়ে ছিল কখনও অন্য দেশের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি, আবার কখনও শোনা গিয়েছে ধন্যবাদজ্ঞাপনও। উঠে এসেছে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ প্রসঙ্গও!
-
শুল্ক-বাণিজ্যে দর কষাকষি: মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভান্স আসছেন ভারতে, বৈঠক হবে মোদীর সঙ্গে
-
ট্রাম্পকে পাল্টা জবাব জিংপিঙের! বিরল খনিজ ও চুম্বক আমেরিকায় না পাঠানোর সিদ্ধান্ত চিনের
-
ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ থেকে কি বাদ যাবে না বৈদ্যুতিন পণ্য? শীঘ্রই আসছে বিশেষ মার্কিন শুল্ক!
-
ট্রাম্পের সঙ্গে দর কষাকষির দরজা খুলল ইউরোপ! আপাতত ৯০ দিন হিমঘরে মার্কিন পণ্যে ‘পাল্টা’ শুল্ক
-
শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য দরজা খোলা, কিন্তু ‘ব্ল্যাকমেল’ করে লাভ নেই, আমেরিকাকে জানাল চিন