Advertisement
E-Paper

২০ কাউন্সিলরের অনাস্থা খড়্গপুরের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে, ইস্তফা দিতে নির্দেশ প্রদীপকে

প্রথমে পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের দাবি করেন, ‘‘দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ পেলে ইস্তফা দেব।’’

খড়্গপুর পুরসভার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, খেয়ালখুশি মতো কাজ করা-সহ একাধিক অভিযোগ এনেছেন কাউন্সিলরা।

খড়্গপুর পুরসভার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, খেয়ালখুশি মতো কাজ করা-সহ একাধিক অভিযোগ এনেছেন কাউন্সিলরা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:১৮
Share
Save

খড়্গপুর পুরসভার তৃণমূলের পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হতে এখনও এখনও অনেক বাকি। মাত্র ৯ মাসের মধ্যে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়ে দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বদের কাছে লিখিত ভাবে জানালেন তৃণমূলেরই ২০ কাউন্সিলর। বুধবার পর্যন্ত কাউন্সিলররা অপেক্ষা করবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, দল প্রদীপকে অন্য কাজে ব্যবহার করবে। তাই তাঁকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে।

চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে খড়্গপুর পুরসভার পুরপ্রধানের দায়িত্ব নেন প্রদীপ। তার আগে ২০১৫ সালে পুরভোটে জয়ী হয়ে প্রথম বার পুরপ্রধান হন। পরে ২০১৯ এ বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ের পরও তিনি এই পদে ছিলেন। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী হিরন্ময় (হিরণ) চট্টোপাধ্যায়ের কাছে হেরে যান। তার পরও অবশ্য খড়্গপুর পুরসভার প্রশাসক হিসাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই প্রদীপের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি, নিজের খেয়ালখুশি মতো কাজ করা-সহ একাধিক অভিযোগ করেছেন তাঁর দলেরই কাউন্সিলররা।

পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের অভিযোগ, সিআইসিদের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তাঁদের কোনও গুরুত্বই নেই। কোনও পরামর্শ ছাড়া কাজ করে চলেছেন তিনি। প্রদীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছেন ২০ তৃণমূল কাউন্সিলর।

খড়্গপুর পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টিতে জয় পেয়েছিল তৃণমূল। পুরবোর্ড গঠনের সময় এবং পরে ১ সিপিআই, ১ বিজেপি এবং ১ নির্দল কাউন্সিলর ছাড়াও ২ কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। বর্তমানে ২৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২০ জনই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে রয়েছেন উপ-পুরপ্রধান তৈমুর আলি খান। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি। দলের ব্যাপার দল সিদ্ধান্ত নেবে।’’ ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রিতা পাণ্ডে বলেন, ‘‘ওঁর কাজে আমরা কেউই খুশি নই।’’

গত সপ্তাহের বুধবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা এবং পরের দিন জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতির সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানান কাউন্সিলররা। অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করতে যান প্রদীপ। তাঁর কথায়, ‘‘এপ্রিল মাস থেকে পুরপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর সঠিক ভাবেই দায়িত্ব পালন করছি। সমস্যা সমাধানের কাজ ছাড়াও বিরোধী দলের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি তাঁর নির্দেশেই দায়িত্ব পালন করছি।’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘অনাস্থা আনা মানে মমতাকে অসম্মান করা।’’

অন্য দিকে, সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রদীপ সরকারকে দলের বৃহত্তম কাজে ব্যবহার করব। তাই তাঁকে খড়্গপুর পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে আসতে বলা হয়েছে। সম্ভবত আজ (সোমবার) কিংবা আগামিকাল (মঙ্গলবার) ও পদত্যাগ করে দেবে। সেটা ওকে জানিয়ে দিয়েছে। বলেছি, দলের বৃহত্তম স্বার্থে দল তোমাকে ব্যবহার করা হবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযুক্তি, ‘‘এটা আস্থা-অনাস্থার বিষয় নয়। দল ওকে পুরপ্রধানের দায়িত্ব দিয়েছিল। দলই বলছে ছেড়ে দিতে।’’

এখন কলকাতায় প্রদীপ রয়েছেন বলে খবর। তাঁর প্রতিক্রিয়ার জন্য বার বার ফোন করা হলেও সাড়া মেলেনি।

কিন্তু এত জন কাউন্সিলর যখন তাঁর বিপক্ষে, সে হেতু তিনি পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রদীপ। তবে মমতা কিংবা অভিষেক নির্দেশ দিলে তবেই। এ নিয়ে তৃণমূল জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘‘খড়্গপুর পুরসভায় একটা সমস্যা চলছে। দলকে জানিয়েছেন কাউন্সিলাররা। রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সেখান থেকে যে নির্দেশ আসবে তা কাউন্সিলর বা পুরপ্রধানকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’

Kharagpur kharagpur municipality TMC Councillors

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}