মণিপুরের জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় যে অনির্দিষ্টকালের বনধ আহ্বান করা হয়েছিল পঞ্চমদিনে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়৷ কুকি জো কাউন্সিলের তথ্য সচিব কে গাঙতে জানান, নিরাপত্তা রক্ষীদের আক্রমণে লালগৌথঙ সিঙসিটের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা অনির্দিষ্টকালের বনধ ডেকেছিলেন৷ আজ তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে৷ এর পরই বনধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা৷ গাঙতে এক বিবৃতিতে এও জানান, বনধ প্রত্যাহার হলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে অবাধ যানবাহন চলাচলের নির্দেশ দিয়েছেন, তা তাঁরা মানবেন না৷ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা অবাধ চলাচলের বিরোধিতা করে যাবেন বলে গাঙতে দৃঢ়স্বরে জানিয়ে দেন৷
কুকি জো জনগোষ্ঠীর যৌথমঞ্চ যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠককে নিষ্ফলা বলে অভিহিত করল, ঠিক তখনই রাষ্ট্রপতি শাসনের মাসপূর্তির দিনে মেইতেই সংগঠন কেন্দ্রকে বাহবা দিয়ে তাদের সকলের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগের
প্রশংসা করল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকের পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উত্তর-পূর্ব উপদেষ্টা একে মিশ্রকে উদ্ধৃত করে ফেডারেশন অব সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা বলেন, মণিপুরে শান্তি ফেরাতে তাঁরা রোডম্যাপ তৈরি করে এগোচ্ছেন। ইম্ফলের ২০টি সংগঠনের এই ফেডারেশনের মুখপাত্র এন চমচম বলেন, মিশ্র তাঁদের জানিয়েছেন, রোডম্যাপের প্রথম দফা সুষ্ঠু ভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ছিল, অস্ত্র সমর্পণ, অবরুদ্ধ রাস্তা খুলে দেওয়া এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিকে দমন।
রাজ্যপাল অজয়কুমার ভাল্লার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সম্প্রতি রাজ্যের পাহাড়-সমতল সর্বত্র পুলিশের থেকে লুট হওয়া বহু অস্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য উপায়ে হাতে থাকা অস্ত্রশস্ত্রও সমর্পণ করেছেন মেইতেই-জনজাতি উভয় জনগোষ্ঠীর মানুষ। তবে অবরুদ্ধ রাস্তা খুলে দেওয়ার প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে, বলা যায় না। বরং তা করতে গিয়ে নিরাপত্তা রক্ষী এবং কুকি-জো আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে এক যুবকের মৃত্যু হয়, ও বহু লোক আহত হন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)