Advertisement
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Coronavirus

জেল কর্তার মৃত্যু, ফের প্রশ্নে করোনা চিকিৎসা

পরিজনদের অভিযোগ, গোড়া থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে চেয়েছিলেন। কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

মৃত গৌরীশঙ্কর বণিক। ফাইল চিত্র

মৃত গৌরীশঙ্কর বণিক। ফাইল চিত্র

  নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০২:১৪
Share: Save:

করোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেলেন ঝাড়গ্রাম বিশেষ সংশোধনাগারের সুপারিনটেন্ডেন্ট গৌরীশঙ্কর বণিক (৫৫)। রবিবার সকালে ঝাড়গ্রাম করোনা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ১ অক্টোবর থেকে সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

পরিজনদের অভিযোগ, গোড়া থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে চেয়েছিলেন। কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিছু ঘটলে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন না বলে লিখে দিতেও বলা হয়েছিল। হাসপাতা‌লের এক সূত্রের অবশ্য দাবি, ডায়াবিটিসের রোগী গৌরীশঙ্করের শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল না। পরিকাঠামোগত সমস্যার জন্য তাঁকে রেফার করতে চাওয়া হয়েছিল। জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতায় পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু স্ত্রী ও মেয়ে রাজি হননি। মৃতের পরিজনেরা পাল্টা বলছেন, ‘‘লেভেল ফোর করোনা হাসপাতালে যদি চিকিৎসা না হয় তাহলে কোন ভরসায় এখানে রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে?’’

শনিবারই করোনা হাসপাতালে এক মহিলা-সহ তিন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তারপর মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে জেল-কর্তার মৃত্যুতে প্রবল অস্বস্তিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ২০১৮ সালে ঝাড়গ্রাম বিশেষ সংশোধনাগারের সুপারের দায়িত্বে আসেন গৌরীশঙ্কর। তিনি হুগলির কোন্নগরের বাসিন্দা। ঝাড়গ্রাম বিশেষ সংশোধনাগার চত্বরের সরকারি আবাসনে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকতেন তিনি। দিন ছ’য়েক আগে তাঁর সামান্য জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় সংশোধনাগার-কর্তৃপক্ষ তাঁকে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ হওয়ায় সন্ধ্যায় তাঁকে করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মৃতের মেয়ে জয়িতা বলেন, ‘‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বার বার বাবাকে এমআর বাঙুর অথবা ডিসান হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু বাবা নিজেই যেতে রাজি হননি। আমরাও ভেবেছিলাম, ঝাড়গ্রামে এত বড় হাসপাতাল, সুচিকিৎসা হবে।’’

শনিবার বেশ কয়েকবার বাবার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল মেয়ের। জয়িতা বলেন, ‘‘রবিবার সকাল সাড়ে সাতটায় বাবা ফোন করে জানান, ভাল লাগছে না। ফ্রুট জুস খেতে চান।’’ জয়িতার দাবি, এর কিছু পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফোনে জানান, তাঁর বাবার অবস্থা ভাল নয়। জয়িতা ও তাঁর মা কণিকা হাসপাতালে পৌঁছন। এক চিকিৎসক তাঁদের জানান, গৌরীশঙ্করের নিউমোনিয়া হয়েছে। ফুসফুস কাজ করছে না। জয়িতারা আবাসনে ফিরে যাওয়ার পরে হাসপাতাল থেকে ফের ফোন করে বলা হয়, ‘আপনারা লিখে দিয়ে যান, কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।’ জয়িতা বলেন, ‘‘বাবার কী চিকিৎসা হয়েছে, সেই রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে না। আর কারও সঙ্গে যেন এমন না হয়। সবার তো আর কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর ক্ষমতা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID-19 Corona
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE