বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
আমেরিকার সঙ্গে গত তিন বছর ধরে সেমিকন্ডাক্টর কারখানা নিয়ে কথা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের আধিকারিকদের তিন বছরের সেই পরিশ্রমের ফল হিসাবে আমেরিকার সঙ্গে সেমিকন্ডাক্টর সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে ভারতের। কলকাতায় সেমিকন্ডাক্টর কারখানা তৈরির কথা হয়েছে। একে ‘বাংলার বড় প্রাপ্তি’ হিসাবেই দেখছেন মমতা। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর সরকারের সঙ্গে সম্প্রতি আমেরিকার দূতাবাসের বৈঠক হয়েছে। সেখানেও সেমিকন্ডাক্টর প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এই কারখানার জন্য জমিও প্রস্তুত রয়েছে রাজ্যে, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার নবান্নে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি বৈঠক করেন মমতা। তার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখান থেকেই জানান, আমেরিকার দূতাবাসের সঙ্গে সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে কথা হয়েছে তাঁর। বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন। মমতা জানান, ওই প্রকল্পের জন্য জমিও প্রস্তুত রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংস্থা ওয়েবেলের আধিকারিকেরা এই প্রকল্পের জন্য গত তিন বছর ধরে আমেরিকার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। মমতা বলেন, ‘‘আমরা জমি তৈরি করেছি। একটা জমি ওঁরা দেখেও গিয়েছেন। এই প্রকল্পে আমাদের ছেলেমেয়েদের মেধা ব্যবহার করা যাবে। মেধাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এই প্রযুক্তি। আমাদের ছেলেমেয়েদের মেধা প্রচুর। এখানে মেধার অভাব নেই। আগামী ৫ এবং ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন রয়েছে। তার আগে জানুয়ারিতে সেমিকন্ডাক্টর সংক্রান্ত অনুষ্ঠান যদি করা যায়, ইতিবাচক বার্তা যাবে। আমরা সেই চেষ্টা করছি। এটা বাংলার বড় প্রাপ্তি।’’
মমতা আরও বলেন, ‘‘আমাদের ওয়েবেল তিন বছর ধরে আমেরিকার সঙ্গে কাজ করছে। সেমিকন্ডাক্টর চুক্তির ঘোষণাটুকু শুধু হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে। কিন্তু এটা আমাদের সাফল্য। এটা আগামী দিনে বাংলার বড় গর্বের বিষয় হবে। অনেক কর্মসংস্থান তৈরি হবে বাংলায়।’’ এর পাশাপাশি মমতা বলেছেন, ‘‘লুলু গ্রুপও কিন্তু আসছে। ওদের জন্যও একটা জমি অলরেডি দেখানো হয়েছে। কোন জমিটা নেবে ওরা ঠিক করবে। যেটা দুবাইতে আমরা গিয়েছিলাম। কথা বলেছিলাম।’’
আমেরিকার সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কে বলতে মুখ্যসচিবকে এগিয়ে দিয়েছিলেন মমতা। পন্থ বলেন, ‘‘আমেরিকার দূতাবাসের সঙ্গে আমাদের সৌজন্যমূলক আলোচনা ছিল। কোন কোন বিষয়ে আমাদের রাজ্য এগিয়ে রয়েছে, এখানে কী কী প্রকল্প চলে, ওঁদের জানিয়েছি। আমেরিকার সঙ্গে সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে ভারতের যে চুক্তি হয়েছে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কী ভাবে আমরা এটা নিয়ে এগোতে চাইছি, ওঁদের জানিয়েছি। ওই প্রকল্পের জন্য জমি জায়গা যা প্রয়োজন, প্রস্তুত আছে। ওঁদের কী কী প্রত্যাশা, জানতে আমাদের টিম ওঁদের সঙ্গে কথা বলবে। যাতে দ্রুততার সঙ্গে আমরা কাজ এগোতে পারি।’’
উল্লেখ্য, ২১ সেপ্টেম্বর তিন দিনের জন্য আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। চতুর্দেশীয় অক্ষ বা কোয়াডের বৈঠকে যোগ দেন তিনি। সেই সফর চলাকালীনই প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়, কলকাতায় সেমিকন্ডাক্টর কারখানা তৈরির বিষয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে মোদীর কথা হয়েছে। এর ফলে দুই দেশেই প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। বৃহস্পতিবার সে বিষয়েই কেন্দ্রকে কটাক্ষ করলেন মমতা। জানালেন, সেমিকন্ডাক্টর কারখানা নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমেরিকা কথা বললেও তার নেপথ্যে রয়েছে রাজ্য সরকারের তিন বছরের পরিশ্রম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy