—ফাইল চিত্র।
ঘুমপাড়ানি গুলির ঘোর কেটেছে। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে বাঘিনি জ়িনত। আলিপুর চিড়িয়াখানার হাসপাতালে তার শারীরিক পরিস্থিতির উপরে সর্বক্ষণ নজর রাখছেন ‘কিপার’-সহ পশু চিকিৎসকেরা। সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) দেবল রায়-সহ শীর্ষ বনকর্তারা সোমবার তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। আলিপুরে এসেছিলেন ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের এক কর্তাও। রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে জ়িনতের ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখেন, ‘জ়িনত এখন ভাল আছে। বন দফতর তার খেয়াল রাখছে’। বাঘিনি খাঁচাবন্দি হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে বাঁকুড়ার রানিবাঁধের গোঁসাইডি গ্রাম ও লাগোয়া এলাকায়।
গোঁসাইডি গ্রাম লাগোয়া ঝোপ থেকে রবিবার বিকেলে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে ধরা হয় জ়িনতকে। দ্রুত তাকে খাঁচাবন্দি করে আনা হয় আলিপুরে। সিমলিপালের ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে বেরিয়ে ঝাড়খণ্ড হয়ে গত ২০ ডিসেম্বর এ রাজ্যের ঝাড়গ্রামে পৌঁছেছিল বাঘিনি। তার পরে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার জঙ্গলে প্রায় আট দিন সে কার্যত নাকানিচোবানি খাওয়ায় বনকর্মীদের। সুন্দরবন থেকে আসা ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ায় দক্ষ মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, “জঙ্গলে ঢুকে দেখি, একটি ছোট জলার কাছে ঝোপে ঘাপটি মেরে রয়েছে জ়িনত। যতটা সম্ভব কাছে গিয়ে গুলি চালাই। গুলি লাগতেই দেখি, ধীরে ধীরে শুয়ে পড়ল। তবুও সাবধানি হতে হয়েছে। কারণ, শনিবার রাতে শরীরে একাধিক বার গুলি লাগলেও দিব্যি ঘুরে বেরিয়েছিল।”মৃত্যুঞ্জয় জানান, জ়িনত লেজ-সহ লম্বায় প্রায় দশ ফুট। উচ্চতায় ফুট চারেক। ওজন কম-বেশি দেড়শো কিলোগ্রাম।
রাজ্যের এক শীর্ষ বনকর্তা জানান, ঘুমপাড়ানি গুলি লাগার পরে শরীরে জলাভাব দেখা যায়। জ়িনতেরও তেমনই হয়েছে। তবে তার চিকিৎসা চলছে। তিনি বলেন, “এই বাঘিনির বয়স কম। তাই ঘুমপাড়ানি গুলির রেশ দ্রুত কাটিয়ে উঠছে। সমস্যা কিছু নেই।” তবে এ দিন জ়িনতকে খাবার দেওয়া হলেও দাঁতে সে কিছুই কাটেনি। চিকিৎসকদের বক্তব্য, ঘুমপাড়ানি গুলি লাগার পরে খাবারে অনীহা থাকা স্বাভাবিক। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তা ছাড়া, গত এক সপ্তাহে অনেকগুলি ছাগল খেয়েছ জ়িনত। পেট ভরা থাকলে বন্যপ্রাণীরা বিশেষ খেতে চায় না।
জ়িনতের পরবর্তী ঠিকানা কী? বন দফতর সূত্রে খবর, ফের জঙ্গলে ফেরানো হতে পারে জ়িনতকে। তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পরে, সে জঙ্গলে ফেরার উপযুক্ত কি না সেই পরীক্ষা হবে। তাতে উতরে গেলে জঙ্গলে ছাড়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সে জন্য কিছু দিন সময় লাগবে।
বাঘিনি এলাকায় ঢোকায় শনিবার সকালে নিরাপত্তার স্বার্থে গোঁসাইডির পাঁচটি পরিবারকে অন্যত্র সরানো হয়েছিল। রবিবার রাতেই তাদের ঘরে ফেরানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বাঁকুড়া প্রশাসন। এ দিন এলাকাও ফেরে স্বাভাবিক ছন্দে। পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের জঙ্গলে থাকাকালীন কয়েকটি ছাগল মেরেছিল জ়িনত। ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বন দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy