বেআইনি: কেএমডিএ-র নাম লেখা পার্কিং লট এবং টিকিট দিয়েই চলছিল টাকা আদায়। —নিজস্ব চিত্র।
রাস্তার ধারে পরপর পার্কিং করা রয়েছে গাড়ি। কেএমডিএ পার্কিংয়ের বোর্ডও লাগানো। সেখানে ‘পার্কিং ফি’ আদায় করছেন দু’জন। হঠাৎ সেখানে মোটরবাইকে হাজির হলেন এক ট্র্যাফিক পুলিশ অফিসার। টাকা আদায়কারীর কাছে দেখতে চাইলেন পার্কিংয়ের বৈধ নথি। এর মধ্যেই হাজির হলেন ট্র্যাফিক গার্ডের আধিকারিকও। পুলিশ দেখেই চম্পট দিলেন এক জন। কিন্তু অন্য জনকে ততক্ষণে ধরে ফেলেছেন ওই অফিসার।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে সার্ভে পাক থানা এলাকার ইএম বাইপাসের সম্মিলনী মহাবিদ্যালয়ের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে। বেআইনি ভাবে পার্কিংয়ের নামে টাকা আদায় করে প্রতারণার অভিযোগে পূর্ব যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে সার্ভে পার্ক থানায় অভিযোগ জানালে আটক অভিযুক্ত রতন সাহাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের বাড়ি পাটুলি থানা এলাকায়। তাঁর কাছ থেকে কেএমডির নামে ছাপানো পার্কিংয়ের রশিদ, ভুয়ো পরিচয়পত্র-সহ নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
লালবাজার জানিয়েছে, বেআইনি গাড়ি পার্কিং বন্ধ করতে পুলিশের সঙ্গে শহর জুড়েই যৌথ ভাবে অভিযান চালায় কলকাতা পুরসভা।
কিন্তু বেআইনি পার্কিং লট চালানোর দায়ে গ্রেফতারের তেমন নজির নেই। বছর খানেক আগে আলিপুর এলাকায় এক নেতার বিরুদ্ধে অবৈধ পার্কিং লট তৈরি করে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছিল, কিন্তু সে ক্ষেত্রে কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই কলেজের কাছেই রয়েছে একটি শপিং মল। তার ভিতরে ছাড়া এলাকায় কোনও বৈধ পার্কিং নেই। শুক্রবার সন্ধ্যায় এলাকায় টহল দেওয়ার সময় পূর্ব যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি তাপস মান্না জানতে পারেন ওই কলেজের সামনে দুই ব্যক্তি কেএমডিএ-র নাম করে পার্কিং ‘ফি’ আদায় করেছেনম। তিনি প্রথমে সার্জেন্ট পার্থপ্রতিম মণ্ডলকে ঘটনাস্থলে পাঠান, পরে নিজেই এলাকায় যান।
তদন্তকারীরা জানান, ওই এলাকায় পার্কিংয়ের সমস্যা রয়েছে। সেই সুযোগ নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরেই আঁটঘাট বেঁধে পার্কিং ফি আদায় করা শুরু করেছিলেন রতন। যাতে কোনও রকম সন্দেহ না হয় সে জন্য প্রথমে তাঁরা কেএমডির নামে একটি পার্কিং বোর্ড ঝুলিয়ে দেন এবং টাকা আদায়ের রশিদ ছাপান। নিজেদের ভুয়ো পরিচয়পত্রও বানান তাঁরা। আসল রশিদে সাধারণত সিরিয়াল নম্বর থাকে যা এই ভুয়ো রশিদে ছিল না। প্রথমে ওই এলাকায় পার্কিংয়ের খবর এবং পরে রশিদে সিরিয়াল নম্বর নেই শুনেই ওই আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে যান।
পুলিশ সূত্রের খবর, শহরের প্রায় তিনশো রাস্তায় দিনে কলকাতা পুরসভা অনুমোদিত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। সেগুলিতে পুরসভা থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া হার মেনে ফি নেওয়া হয়ে থাকে। তদন্তকারীদের দাবি, যাতে কারও সন্দেহ না হয় তাই বেআইনি পার্কিংয়ের মালিকেরা গাড়ি রাখার জন্য নির্ধারিত ফি-মেনেই টাকা আদায়র করছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy