বাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করায় এন্টালিতে দুষ্কৃতীদের হাতে প্রহৃত যুবক সায়ন কুণ্ডু। সোমবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
শব্দবাজির বেলাগাম তাণ্ডব তো ছিলই। এ বার তার সঙ্গে যুক্ত হল প্রতিবাদ করে মারধর-হুমকির ঘটনাও। এমনকি, মেরে প্রতিবাদী যুবকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। আরও অভিযোগ,
আক্রান্ত যুবক থানায় গেলে পুলিশ এফআইআর না নিয়ে বিষয়টি আপসে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেয়। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে এন্টালি থানা এলাকায়। সোমবার এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে এন্টালি থানা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত যুবকের নাম সায়ন কুণ্ডু। এন্টালি থানার আনন্দ পালিত রোডের বাসিন্দা সায়নের বাড়িতে বাবা-মা ছাড়াও এক দাদা রয়েছেন। সায়ন জানান,
রবিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ঘটনার সূত্রপাত। সে সময়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। অভিযোগ, গত কয়েক দিন ধরেই সায়নদের
বাড়ির সামনে বেআইনি বাজি ফাটছিল। রবিবার প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে তা মাত্রা ছাড়ায়। সন্ধ্যা থেকেই নাগাড়ে গলিতে বাজি ফাটাতে থাকেন স্থানীয় কয়েক জন যুবক। সায়নের কথায়, ‘‘আমার মা-বাবা দু’জনেই অসুস্থ। দীর্ঘ ক্ষণ ধরে চলা বাজির শব্দে ওঁদের সমস্যা হচ্ছিল। তাই মা গলিতে বাজি ফাটাতে
বারণ করেন। এতেই ওরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।’’ সায়নের দাবি, বারণ করতেই অভিযুক্তদের সঙ্গে
যুক্ত হয় আরও এক দল যুবক। তাঁরা সকলে ইচ্ছাকৃত ভাবে গলিতে নাগাড়ে বাজি ফাটাতে শুরু করেন। দীর্ঘক্ষণ ধরে তা চলতে থাকায় এর পরে সায়ন ঘর থেকে বেরিয়ে এসে তাঁদের বাজি ফাটাতে বারণ করলে প্রথমে তর্কাতর্কি শুরু হয়। অভিযোগ, এর পরেই অভিযুক্তেরা সায়নকে ঘিরে ধরে লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করেন। চিৎকার শুনে ওই যুবকের বাবা বেরিয়ে এলে তাঁকেও ধাক্কা মারা হয়। মারধরের জেরে সায়নের মাথা ফেটে যায়। কোনও মতে তিনি বাড়িতে ঢুকে পড়েন। এর পরে থানায় যাওয়ার জন্য বেরোতে গেলে তাঁকে ফের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আক্রান্ত যুবকের কথায়, ‘‘বাড়ির গলির মুখেই ওরা দাঁড়িয়ে ছিল। আমি থানায় যাচ্ছি শুনে ওরা আবার ঘিরে ধরে মারধর করে।’’ সায়নের মাথায় চারটি সেলাই পড়েছে বলে
জানা গিয়েছে।
এর পরে রাতেই এন্টালি থানায় যান ওই যুবক। কিন্তু অভিযোগ, সেখানে প্রথমে এফআইআর না নিয়ে দু’পক্ষকে বসে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে অবশ্য লিখিত অভিযোগ নেয় এন্টালি থানা। সায়নের বাবা যতীন কুণ্ডু বলেন, ‘‘প্রথমে আমাদের থেকে কোনও অভিযোগ নেওয়া হয়নি। উল্টে বলা হয়, এলাকার ব্যাপার,
সকলে মিলে বসে মিটিয়ে নিতে। অনেক বলাবলির পরে প্রথমে একটা জিডি করা হয়েছিল। পরে এফআইআর নেওয়া হয়।’’ ঘটনার তদন্তে নেমে সোমবার সকালে দু’জনকে
গ্রেফতার করে এন্টালি থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম সুজয় রায় এবং রাজু রায়। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘কে কে ঘটনায় যুক্ত ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের
খোঁজ চলছে।’’
অন্য দিকে, রবিবার রাতে গল্ফ গ্রিন থানা এলাকাতেও বেআইনি বাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করায় মারধরের অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় কয়েক জন যুবক মিলে এক ব্যক্তিকে মারধর করে বলে অভিযোগ। আক্রান্ত ব্যক্তি গল্ফ গ্রিন থানায় ইমেল করে জানান। যদিও পরে দু’পক্ষ নিজেরা বসে বিবাদ মিটিয়ে নেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy