Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

জেলের ক্যান্টিনের দুর্নীতি ঠেকাতে নতুন কৌশল

আগে দোকান থেকে আসা রান্নার সামগ্রীর হিসেবে প্রায়ই গণ্ডগোল ধরা পড়ত বলে অভিযোগ। সেই সমস্ত জিনিসের মানের সঙ্গে ওজন নিয়েও উঠত প্রশ্ন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৮ ০৩:০৩
Share: Save:

জেলের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির কথা শোনা যায়। মাদক-মোবাইল পাচার থেকে ক্যান্টিনের সামগ্রী সরবরাহ— সব কিছু নিয়েই জেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তালিকার বাইরে নেই দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারও। এ বার সেখানে ক্যান্টিনের দুর্নীতি ঠেকাতে নিয়মিত দায়িত্বপ্রাপ্তদের বদল করছেন কর্তৃপক্ষ।

আগে দোকান থেকে আসা রান্নার সামগ্রীর হিসেবে প্রায়ই গণ্ডগোল ধরা পড়ত বলে অভিযোগ। সেই সমস্ত জিনিসের মানের সঙ্গে ওজন নিয়েও উঠত প্রশ্ন। কর্তৃপক্ষের কাছে তেমন অভিযোগ জমাও পড়েছে। পাশাপাশি, হিসেবের গরমিলের কারণে কারা দফতরের খরচের বহরও বাড়ত। তাই জেলের ক্যান্টিনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে নতুন পন্থা নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

জেলের ক্যান্টিনে আনাজ বা রান্নার অন্য সামগ্রীর এখন আর সরাসরি প্রবেশের সুযোগ নেই। কারণ, সামনে বসে থাকছেন ‘গার্ডিং ম্যানেজমেন্ট’-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ বা কোনও করণিক। তাঁর সামনেই সামগ্রীর ওজন এবং মান যাচাই করা হবে। আর দায়িত্বপ্রাপ্তের ছাড়পত্রের পরেই তা ক্যান্টিনের রান্নাঘরে পৌঁছবে। এমনকি, দায়িত্বপ্রাপ্তের উপস্থিতিতে মাংসও কাটা হচ্ছে। কিছু দিন আগে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে মাংসের মান ঠিক নেই বলে বন্দিরা অভিযোগ করেছিলেন। যদিও দমদম জেলে তেমন কোনও সমস্যা নেই বলেই দাবি কারা দফতরের।

এক সময়ে দিনের পর দিন এক জনই দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে কাজ করে যেতেন। এখন আর সেই সুযোগ নেই। কারণ, প্রায়ই ‘গার্ডিং ম্যানেজমেন্ট’-এর দায়িত্বপ্রাপ্তকে বদল করা হয়। ক্যান্টিনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ১৭-১৮ জন বন্দি। এই সামগ্রী যাচাইয়ের ক্ষেত্রে তাঁদেরও ভূমিকা রয়েছে। তাই ওই বন্দিদের দায়িত্বও প্রায়ই বদল করা হয়। উল্লেখ্য, ক্যান্টিনের সঙ্গে যুক্ত থাকেন করণিক, রক্ষী এবং বন্দি— তিন পক্ষই।

রান্নার সামগ্রী সরবরাহকারী এক কর্মীর কথায়, ‘‘আগে রান্নার সামগ্রী ওজন না হয়েই ভিতরে পৌঁছে যেত। ফলে যা হিসেব করা হত, তা মিলত না। তবে এখন সেই সুযোগ কার্যত নেই। কারণ, জেলের কর্মীরা ওজন যাচাই না করলে তা ভিতরে পাঠানো যায় না।’’ কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্তের নিয়মিত বদল কেন? সে প্রশ্নের জবাবে কারা দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘এক জনকে দীর্ঘদিন দায়িত্বে রাখলে মৌরসিপাট্টা গড়ে ওঠে। নিয়মিত বদল করলে সরবরাহকারীদের সঙ্গেও যোগাযোগ গড়ে ওঠা অসুবিধাজনক।’’ এ সব করে ক্যান্টিনের দুর্নীতি অনেকটাই ঠেকানো গিয়েছে বলে দাবি কারা দফতরের এক কর্তার। উল্লেখ্য, ক্যান্টিনের সামগ্রী পরিমাপের জায়গা এখন জেল সুপারের অফিসের কাছে। ফলে সেখান থেকে নজরদারি বাড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে মত কারা দফতরের কর্তাদের একাংশের।

অন্য বিষয়গুলি:

Dum Dum Central Jail Illegal Activity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE