Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
majerhat bridge

সকাল হল বটে, কিন্তু দুঃস্বপ্নের রাতের স্পর্শ এখনও দগদগে মাঝেরহাটে

শহরের বুক কাঁপিয়ে মঙ্গলবার বিকেলেই ভেঙে পড়েছিল মাঝেরহাট ব্রিজ। সময় যত বেড়েছে উদ্বেগ, উত্কণ্ঠাও যেন ঘিরে ধরেছে। সেতুর নীচে কেউ আটকে নেই তো?

সেতু ভেঙে পড়ার পর। ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে। বুধবার সকালে। নিজস্ব চিত্র।

সেতু ভেঙে পড়ার পর। ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে। বুধবার সকালে। নিজস্ব চিত্র।

সৌরাংশু দেবনাথ
শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:৪৫
Share: Save:

গাড়ি থেকে নামতেই দেখা গেল ব্রিজের অনেকটা আগে থেকেই ব্যারিকেড করে দিয়েছে পুলিশ। অতএব আর গাড়ি এগলো না। ভাবতেই শিউরে উঠছি, যেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছি তার মাত্র কয়েকশো হাত দূরেই ভেঙে পড়েছে মাঝেরহাটের সেতুর একাংশ। একটু এগোতেই ছবিটা আরও পরিষ্কার হল। দেখে মনে হল কোনও দানবীয় শক্তি চাপ দিয়ে দুমড়ে দিয়েছে সেতুর ওই অংশটিকে। আনুমানিক ৩০ ফুট নীচে ভেঙে পড়ে রয়েছে সেতুর ধ্বংসাবশেষ। চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বড় বড় চাঙর।

ভাঙা অংশের একদম কাছে পৌঁছতেই দেখা গেল দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা দল, কলকাতা পুলিশ, সেনা সেই ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে জোর কদমে। সেতুর আশপাশে কয়েকশো উত্সুক মানুষের ভিড়। উত্কণ্ঠার ছাপও স্পষ্ট ধরা পড়ল তাঁদের মুখগুলিতে। দুঃস্বপ্নের একটা রাত কাটিয়ে যেন একটু ধাতস্থ হওয়ার চেষ্টা করছেন। অনেকেই তাঁদের মধ্যে বলেছেন, “স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি এ ভাবে চোখের সামনে সেতুটা ধসে পড়বে। মঙ্গলবারের বিকেলের ওই সময়টা মনে পড়লেই আঁতকে উঠছি।” উদ্ধারকারীদের মতো, তাঁদেরও প্রত্যেকেরই একটা জিজ্ঞাসা ধ্বংসস্তূপের নীচে কেউ আটকে নেই তো? উদ্ধারকারীর সারা রাত এক করে খোঁজ চালিয়ে গিয়েছেন। সেতুর চাঙর ফুটো করে ক্যামেরা ঢুকিয়ে খোঁজ চালানো হচ্ছে। স্নিফার ডগ নিয়েও তল্লাশি চলছে। তবে যে ভাবে সেতুটা ভেঙে পড়ছে, ধ্বংসস্তূপ সরাতে সময় লাগবে বলেই জানাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। বড় বড় ক্রেন নিয়ে এসে চাঙর সরানোর কাজ চলছে। এবং তা যুদ্ধকালীন তত্পরতায়।

শহরের বুক কাঁপিয়ে মঙ্গলবার বিকেলেই ভেঙে পড়েছিল মাঝেরহাট ব্রিজ। সময় যত বেড়েছে উদ্বেগ, উত্কণ্ঠাও যেন ঘিরে ধরেছে। সেতুর নীচে কেউ আটকে নেই তো? সেতুর কাছেই মেট্রোর কাজ চলছিল। কর্মীদের একটা অস্থায়ী মাথা গোঁজার ছাউনি তৈরি করা হয়েছিল সেতুর নীচেই। সেই ঘরটি চাপা পড়েছে। সেতু ভেঙে পড়ার সময় ওই ঘরে কেউ ছিল কি না স্পষ্ট নয়। যদিও মেট্রোর তরফে দাবি করা হয়েছে, গৌতম মণ্ডল ও উদয় দে নামে তাদের দুই কর্মী নিখোঁজ। আশঙ্কাটা বাড়ছে এখানেই। যদি সত্যিই চাপা পড়ে থাকেন, তা হলে ঠিক আছেন তো?

ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে। দেখুন সেই ভিডিয়ো

আরও পড়ুন: ‘হঠাৎ মনে হল, পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে, পুরো নীচে এসে পড়লাম

দুর্ঘটনাস্থলে ওই দিনই মৃত্যু হয়েছিল সৌমেন বাগ নামে এক বাইক আরোহীর। সেতুটা ‘ভি’ আকারের ভেঙে পড়েছিল। আর সেই ‘ভি’-এর মাঝখানেই পড়ে গিয়েছিলেন সৌমেন। চাঙরের নীচে ফেঁসে গিয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। আহত হয়েছেন ১৯ জন।

আরও পড়ুন: প্রকাণ্ড সেতুটা ঝুলে রয়েছে ‘ভি’-এর আকারে

(শহরের প্রতি মুহূর্তের সেরা বাংলা খবর জানতে পড়ুন আমাদের কলকাতা বিভাগ।)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE