Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

হঠাৎ প্রবল ঝাঁকুনি, খাদে পড়ল গাড়িটা

বিশ্বাসই হচ্ছে না, বেঁচে আছি। শুধু মনে হচ্ছে, গাড়িটার নীচে কিছু নেই। প্রচণ্ড একটা ঝাঁকুনি আর আমরা খাদে তলিয়ে যাচ্ছি।

দুর্ঘটনার পরেই। —নিজস্ব চিত্র।

দুর্ঘটনার পরেই। —নিজস্ব চিত্র।

অশোক মণ্ডল (সেতু ভেঙে পড়ে যাওয়া গাড়ির চালক)
শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৮
Share: Save:

বিশ্বাসই হচ্ছে না, বেঁচে আছি। শুধু মনে হচ্ছে, গাড়িটার নীচে কিছু নেই। প্রচণ্ড একটা ঝাঁকুনি আর আমরা খাদে তলিয়ে যাচ্ছি।

মঙ্গলবার বিকেলবেলা বেহালার দিক থেকে ফিরছিলাম। সিটি সিভিল কোর্টের মুখ্য বিচারকের গাড়ি চালাই আমি। মঙ্গলবার দুপুর তিনটের সময় ব্যাঙ্কের কাজে গাড়ি নিয়ে বেহালায় গিয়েছিলাম। সঙ্গে ছিলেন বিচারকের দেহরক্ষী অনুপম সাউ।

মাঝেরহাট ব্রিজে যখন উঠলাম, সামনে অনেকগুলো গাড়ি। হঠাৎই কানফাটানো বিকট আওয়াজ। বুঝলাম, আমার গাড়ির তলায় আর কিছু নেই। প্রবল ঝাঁকুনিতে আমার শরীরটা লাফিয়ে উঠল। গাড়িটা ঝাঁপ দিয়ে সামনের খাদে পড়ে গেল। তার পরেই সব অন্ধকার।

আরও পড়ুন: প্রকাণ্ড সেতুটা ঝুলে রয়েছে ‘ভি’-এর আকারে

যখন চোখ খুললাম, তখন আমাকে গাড়ি থেকে বার করছে অনেকগুলো অপরিচিত মুখ। মনে হল, ও কোথায়? অনুপমের নামটাও তখন মনে করতে পারছি না। সব তালগোল পাকিয়ে গিয়েছে। কথা বলতে পারছিলাম না। ওই অবস্থাতেই আমাকে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয়।

হাসপাতালে পৌঁছনোর পর ডাক্তারেরা বারবার আমার নাম জানতে চাইছিলেন। প্রশ্ন করছিলেন, কোথায় থাকি। আমি শুধু বলতে পেরেছিলাম, জাস্টিসের গাড়ি চালাই। পরে দেখলাম আদালত থেকে দু’জন পরিচিত চলে এসেছেন। শুনলাম, ওঁরা ডাক্তারদের বলছেন, ‘‘এই তো আমাদের অশোক।’’

আরও পড়ুন: ‘গাড়ি নিয়ে উঠতেই দুলে উঠল সেতুটা’

এত ক্ষণে নিজের নামটা মনে পড়ল। মনে পড়ল, জাস্টিসের দেহরক্ষীর নাম তো অনুপম! অনুপম কোথায়? ওঁরা জানালেন, অনুপম বেঁচে আছে। এমার্জেন্সিতেই আছে।

ঘোর আর আধো অন্ধকারের মধ্যে আস্তে আস্তে বুঝতে পারছি, সারা শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা। বাড়ির লোকেরা যে কখন আসবে? ডাক্তারদের তো জানিয়েছি, আমার বাড়ি নারকেলডাঙায়।

(শহরের প্রতি মুহূর্তের সেরা বাংলা খবর জানতে পড়ুন আমাদের কলকাতা বিভাগ।)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE