Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

শহরকে ভালবাসার বার্তা সেনেগালের গানে

নিজের গান নিয়ে নানা দেশে ঘোরাঘুরির সূত্রে তিনি বুঝে নিয়েছেন, এ দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী এখনও কলকাতা। ফলে প্রথম বার ভারত সফরের জন্য সেই শহরকেই বেছে নিয়েছেন বিশ্ব সঙ্গীতে অবদানের জন্য উওমেক্স লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কারপ্রাপ্ত এই প্রবীণ শিল্পী।

শৈল্পিক: সঙ্গীতের সুরে নাচের ছন্দ।

শৈল্পিক: সঙ্গীতের সুরে নাচের ছন্দ।

সুচন্দ্রা ঘটক
শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৭
Share: Save:

নিজের শহরটা পরিচ্ছন্ন রাখুন।

মানুষের পাশে দাঁড়ান।

গাছ কাটা বন্ধ করুন।

জলের অপচয় নিয়ন্ত্রণ করুন।

বালাখ এবং ফাল্ক বাজিয়ে সঙ্গীতপ্রেমীদের মধ্যে এমনই সব বার্তা ছড়িয়ে দেবেন সুদূর সেনেগাল থেকে আসা চেক লো। সে দেশের লোকগানে ব্যবহৃত এই দুই বাদ্যযন্ত্রই প্রধান সঙ্গী তাঁর। গত ৪০ বছর ধরে বিশ্বের দরবারে এ ভাবেই শান্তির বাণী পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি।

নিজের গান নিয়ে নানা দেশে ঘোরাঘুরির সূত্রে তিনি বুঝে নিয়েছেন, এ দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী এখনও কলকাতা। ফলে প্রথম বার ভারত সফরের জন্য সেই শহরকেই বেছে নিয়েছেন বিশ্ব সঙ্গীতে অবদানের জন্য উওমেক্স লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কারপ্রাপ্ত এই প্রবীণ শিল্পী। কখনও জ্যাজ, কখনও কিউবান রেগে সঙ্গীতের ব্যবহারে সুর-তাল-ছন্দে ভালবাসার কথা শোনান তিনি। জানান, গোটা আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকা এবং এশিয়ার নানা প্রান্তে ঘুরে তিনি বুঝেছেন, সর্বত্রই রাজনৈতিক টানাপড়েনের কাছে ফিকে হয়ে যায় পরিবেশ সচেতনতার মতো বিষয়টি। চেক লো বলেন, ‘‘শান্তির সন্ধানেই যে মগ্ন গোটা পৃথিবীর মানুষজন। তবু কেউ বোঝেন না, কত সহজে পাওয়া যায় শান্তি।’’ নিজের শহরটা সুন্দর রেখে, প্রতিবেশীদের ভালবেসে এগিয়ে যাওয়া যায় সেই শান্তিপ্রাপ্তির পথে— মত সেনেগালের রাজধানী শহর ডাকারের বাসিন্দা, সুফি ধর্মে বিশ্বাসী এই প্রবীণ গায়কের। তাঁর অভিজ্ঞতা বলছে, গানে গানেই অনেক কঠিন কথা সহজে বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়। ফলে সেই কাজটাই করবেন তিনি এ শহরেও। চেক বলেন, ‘‘কলকাতাবাসীরাও আমাদের দেশের মানুষের মতো। সকলেই চান সুন্দর ভাবে থাকতে, কিন্তু পথ খুঁজে পান না যেন।’’ আজ, শনিবার মোহরকুঞ্জে বিশ্ব সঙ্গীতের উৎসব ‘সুর জাহান’-এর মঞ্চে শ্রোতাদের তিনি মনে করাবেন, প্রকৃতিকে ভালবাসলেই ছন্দ আসে জীবনে।

সেনেগালের শিল্পী চেক লো।

গানের মাধ্যমে ভালবাসার বার্তা ছড়িয়ে দিতে তাঁর পাশাপাশি এ শহরে হাজির হয়েছেন আরও নানা দেশের শিল্পী। নানা বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে সুর-তাল-গানে মঞ্চ মাতাবেন হাঙ্গেরি, ফিনল্যান্ড, পোল্যান্ডের শিল্পীরাও। সঙ্গ দেবেন এ রাজ্যের বাউল-ফকিররা। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া সেই উৎসব চলবে কাল, রবিবার পর্যন্ত। উৎসবের উদ্যোক্তাদের তরফে অমিতাভ ভট্টাচার্য জানান, ভালবাসার মাধ্যমে সমস্যা-সংকট অতিক্রম করার বার্তা বিশ্বের নানা অঞ্চলের গানেই বারবার উঠে এসেছে। সংকটময় এই সময়ে তেমনই কিছু গান শুনবেন এ শহরের শ্রোতারা। সেনেগালের চেক লো-র মতো প্রবীণেরা যেমন তুলে ধরবেন তার একটি দিক, তেমনই ইথিওপিয়ার গ্যাব্রিয়েলা ঘেরমান্ডিরা দেখাবেন, নিজেদের চারপাশের চিন্তা-ভাবনা-সংকটকে কোন চোখে দেখছেন নবীনেরা।

—নিজস্ব চিত্র।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE