উলুবেড়িয়া-২ ব্লকে বাণীবন কল্যাণব্রত সঙ্ঘ উচ্চ বিদ্যালয়ে ভিড়। নিজস্ব চিত্র।
ভিড়ের চোটে কার্যত চৌপাট হয়ে গেল করোনা বিধি। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে আসরে নামতে হল খোদ মন্ত্রীকে!
সোমবার ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে এমনই ছবি দেখা গেল উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের শ্রীকৃষ্ণপুর চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলে। এখানে ভোর থেকে স্কুলের বাইরে প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা লাইন পড়ে। বেশিরভাগই ছিলেন মহিলা। এ দিন থেকে শুরু হয়েছে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের জন্য আবেদনপত্র জমা নেওয়া। প্রধান রেজাউল হক মোল্লা-সহ পঞ্চায়েতের পদাধিকারীরা মহিলাদের হাতে প্রকল্পের ছাপানো আবেদনপত্র তুলে দিচ্ছিলেন। সেগুলি নিয়ে তাঁদের স্কুলের ভিতরে ঢুকে পূরণ করে আধিকারিকদের হাতে জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু আবেদনপত্র নিয়ে স্কুলে ঢোকা নিয়ে বিশৃঙ্খলা হয়। বহু মহিলা বেলাইনে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন।
বেলা ১১টা নাগাদ উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক তথা রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায় ঘটনাস্থলে এসে হতবাক হয়ে যান। স্কুলের গেটে পুলিশ থাকলেও তারা ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিল না। শেষ পর্যন্ত স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে পড়েন পুলকবাবু। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। পুলকবাবুর কথায়, ‘‘কিছু করার ছিল না। ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের সুযোগ নিতে মা-বোনেরা হাজির হয়েছেন। তাঁরা যাতে সুষ্ঠু ভাবে আবেদন করতে পারেন, সেটা দেখা আমাদের কর্তব্য।’’
এ দিনের শিবিরে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পে। মোট ৩০টি টেবিলের মধ্যে ১৫টিই ছিল এই প্রকল্পের। এ দিন প্রায় সাত হাজার মহিলা প্রকল্পের জন্য আবেদনপত্র নেন বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর। শুধুমাত্র ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর জন্য আরও একটি বাড়তি শিবির করা হয়েছিল পাশেই কুলগাছিয়া প্রাথমিক স্কুলে। ভিড় হয় সেখানেও।
তবে এ দিন করোনা-বিধি একেবারেই মানা হয়নি। বেশিরভাগ মহিলা মাস্ক পরেননি। শারীরিক দূরত্ববিধি মানারও বালাই ছিল না। এ দিন শিবিরে আসেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য এবং জেলার করোনা নোডাল অফিসার সঞ্জয় থাডে। শিবিরগুলি করার ক্ষেত্রে পরিকল্পনার অভাবের কথা মানতে চাননি জেলাশাসক। তিনি বলেন, ‘‘সুপরিকল্পিত ভাবেই শিবির করা হয়েছে। এই পঞ্চায়েতে যেমন একটি বড় শিবির এবং পাশাপাশি ছোট শিবির করা হয়েছে, তেমনই জেলা জুড়ে মূল শিবিরের পাশাপাশি ছোট শিবির করা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, প্রথম দিকে ভিড় হলেও কর্মীরা দ্রুততার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন।
সঞ্জয় বলেন, ‘‘মাস্ক পরা হচ্ছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব পুলিশের। পুলিশ কী করছে?’’ এরপরেই তিনি পুলিশকে নির্দেশ দেন, মাস্ক না পরে যাঁরা আসবেন, তাঁদের যেন শিবিরে ঢুকতে না দেওয়া হয়। দূরত্ববিধি না মানার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘সরকারের প্রকল্পের সুবিধা নিতে বহু মানুষ উৎসাহের সঙ্গে হাজির হয়েছেন। সে ক্ষেত্রে দূরত্ববিধি পালন করার বিষয়টি মুখে বলা যতটা সহজ, কাজে পরিণত করা কঠিন।’’
সোমবার জেলা জুড়ে ৬৭টি শিবির হয়। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এক একটি পঞ্চায়েতে তিন বার করে শিবির হবে। মোট ১৭০০ শিবির করা হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। ‘লক্ষীর ভান্ডার’ প্রকল্পের জন্য ১৮ লক্ষ আবেদনপত্র ছাপানো হয়েছে বলেও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy