বিগত কয়েক বছরের রীতি মেনে সাধারণ বাজেটেই পেশ হয়েছে রেলের ব্যয়-বরাদ্দ। মিলেছে বহু অমৃত ভারত, নমো ভারত ও বন্দে ভারত ট্রেন। হতে চলা উড়ালপুল ও আন্ডারপাসের সংখ্যাও কম নয়। সুরক্ষায় নতুন করে বরাদ্দ হয়েছে ১ লক্ষ ১৬ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রবীণদের ছাড় মিলল না এ বারও। কোনও নন স্টপ ট্রেনের ঘোষণাও হল না খড়্গপুর ডিভিশনে।
শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাজেটকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। এ বার রেল সুরক্ষায় যে ১ লক্ষ ১৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে তা গত বছরের তুলনায় বেশি বলেও দাবি করেছেন রেলমন্ত্রী। গত বছর রেল সুরক্ষায় বরাদ্দ হয়েছিল ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া রেলপথের সংখ্যাবৃদ্ধি, উড়ালপুল, আন্ডারপাসের মতো নানা প্রকল্পের জন্য এ বার ৪ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গত ২০২৩ সালে খড়্গপুর ডিভিশনের বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় ২৯২ জনের প্রাণ যাওয়ার পরে সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তার পরেও এই ডিভিশনের হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় বারবার লাইনচ্যুত হয়েছে ট্রেন। এই আবহে রেল সুরক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধিকে বড় করে দেখছেন রেল আধিকারিকরা। যদিও যাত্রীরা মনে করিয়েছেন, গত বছর রেল সুরক্ষায় বরাদ্দের পরেও ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। দেরিতে ট্রেন চলাচলের বিষয়টি বাজেটে না থাকাতেও হতাশ যাত্রীরা।
রেল সূত্রে খবর, বাজেটে নতুন করে ১০০টি অমৃত ভারত, ৫০টি নমো ভারত, ২০০টি বন্দে ভারত ট্রেনের কথা জানানো হয়েছে। তবে এতে সাধারণ নিত্যযাত্রীরা কতটা সুবিধা পাবেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে। মেদিনীপুর-খড়্গপুর-হাওড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জয় দত্ত বলেন, “একই লাইনে এখনও মালগাড়ি ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলায় ট্রেনের গতি বাড়ছে না। প্রতি বাজেটে শোনা যাচ্ছে ফ্রেট করিডরের কথা। তা বাস্তবায়িত হলে তো মালগাড়ির পৃথক করিডর হওয়ার কথা। সেটা কোথায়! আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি খড়্গপুর-হাওড়া নন স্টপ ট্রেন। সেটা তো এই বাজেটেও অধরা। আমরা হতাশ।” খড়্গপুরের বুলবুলচটির বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার বীরেন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, “বছরে দু’তিনটি ভ্রমণে যাই। রেলের কাছে নতুন করে কিছু আশা করি না। রেল বাজেট সাধারণ বাজেটের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত রেলকে ধ্বংস করে দিল।” এ বারের বাজেটে খড়্গপুর ডিভিশনের প্রাপ্তি নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ডিভিশনের রেল আধিকারিকরাও কোনও দিশা দেখাতে পারেননি। খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার অলোক কৃষ্ণা বলেন, “আমাদের কাছে এখনও বিস্তারিত বা খড়্গপুর ডিভিশনের জন্য বরাদ্দের তথ্য আসেনি। রেলমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করবেন। তার পরে আমাদের কাছে কোনও তথ্য এলে জানাতে পারব।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)