Advertisement
E-Paper

আশা দেখছে না মোগলমারি, দোটানায় ‘হোম স্টে’

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অশোক দত্তের চেষ্টায় ২০০৩-০৪ সালে দাঁতনের মোগলমারির উঁচু ঢিবি খনন শুরু হয়েছিল।

ও মোগলমারি ও ঝাড়গ্রাম

পাথরা ফ্যামেলি হোম স্টে। —ফাইল চিত্র।

বিশ্বসিন্ধু দে, রঞ্জন পাল

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৬:৪২
Share
Save

কেন্দ্রীয় বাজেটে কিছুটা বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছে পর্যটন। গৌতম বুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আবার হোম স্টে তৈরির জন্য ‘মুদ্রা ঋণের’ কথাও বলা হয়েছে। যা শুনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে।

দাঁতনের মোগলমারি বৌদ্ধ মহাবিহার রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রহের অধীনে রয়েছে। তাই তারা কেন্দ্রীয় বাজেটের ঘোষণা থেকে উপকৃত হওয়ার আশা করছে না। মোগলমারি বুদ্ধিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই বৌদ্ধ মহাবিহারের আবিষ্কর্তা প্রয়াত অশোক দত্ত চেয়েছিলেন এটি জাতীয় সৌধের অন্তর্ভুক্ত হোক। তবে তা এখনও হয়নি। তা না হওয়ার কারণেই কেন্দ্রীয় বাজেটের ঘোষণা সুবিধা থেকে হয়তো বঞ্চিত হবে এই ঐতিহাসিক বৌদ্ধ বিহার।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অশোক দত্তের চেষ্টায় ২০০৩-০৪ সালে দাঁতনের মোগলমারির উঁচু ঢিবি খনন শুরু হয়েছিল। পর্যায়ক্রমিক খননে উঠে আসে সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী ষষ্ঠ শতাব্দীর এই বৌদ্ধ মহাবিহার। প্রায় দশটি পর্যায়ে খনন কাজ চলেছে। উঠে এসেছে একাধিক প্রত্ন সামগ্রী, নব্বই অধিক বুদ্ধ-সহ একাধিক ধাতব মূর্তি ও দেওয়ালের গায়ে একাধিক স্টাকো মূর্তি। এরপরেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এলাকা। পরে রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এলাকাটি অধিগ্রহণ করে। ২০১২-১৩ সালে শেষ খনন কাজ হয়েছিল। এলাকার মানুষের দাবি, এলাকাতে আরও খননের প্রয়োজন। যা থেকে আরও অনেক কিছুই মিলবে। কয়েক বছর আগে রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এখানে সংরক্ষণের কাজ করলেও এলাকায় মিউজিয়াম গড়ে তোলার কাজ বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে এই বৌদ্ধ বিহারের বাড়তি গুরুত্বের প্রয়োজনীয়তা যথেষ্ট। মোগলমারি বুদ্ধিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অতনু প্রধানের আক্ষেপ, ‘‘মোগলমারি বৌদ্ধ মহাবিহার যদি জাতীয় সৌধের মর্যাদা পায় তখনই এখানে কেন্দ্রীয় বাজেটের এই ঘোষণা কার্যকর হবে। তবে আপাতত তেমন সম্ভাবনা নজরে নেই।’’

অন্য দিকে, হোম স্টে তৈরির জন্য মুদ্রা ঋণ দেওয়ার ঘোষণাকে ঝাড়গ্রামের পর্যটন ব্যবসায়ীদের অনেকেই ইতিবাচক বলে মনে করছেন। অনেকে মনে করাচ্ছেন, রাজ্য সরকার হোম স্টে তৈরির জন্য এক লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করলেও সবাই সেই টাকা পান না। তাই কেন্দ্রীয় বাজেটের এই ঘোষণা ঝাড়গ্রামের পর্যটনে নতুন দিশা আনতে পারে। ঝাড়গ্রামের ধোবাধোবিন গ্রামের প্রতাপ মাহাতো হোম স্টে তৈরি করছেন। তিনি বলছেন, ‘‘হোম স্টে তৈরির কাজ সবে মাত্র শুরু হয়েছে। সরকারি সহায়তা পেলে সুবিধা হবে। এর ফলে এলাকায় কর্মসংস্থান বাড়বে। এলাকার বেকার ছেলে-মেয়েরাও কাজ পাবে।’’

তবে রয়েছে সংশয়ও। ঝাড়গ্রামে এক হোম স্টের মালিক বলছেন, ‘‘বাজেটে আমজনতার দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। কার্যক্ষেত্রে সারাবছর কোথায় কী হয় তা মানুষ জানতেও পারেন না। এক্ষেত্রে কতটা ঋণ মিলবে তা আগামী দিনে বোঝা যাবে।’’ বেলপাহাড়ির আমলাশোলে লিজে হোম স্টে তৈরি করছেন সজয় কুমার রায়। তিনি বলেন, ‘‘হোম-স্টে তৈরির উপরে মুদ্রা ঋণ পেলে পর্যটন ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন। এই ব্যবসায় ঝোঁক বাড়বে। আমলাশোলের মতো এলাকায় হোম স্টে বাড়লে কর্মসংস্থানও বাড়বে।’’

ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায়ের আশা, ‘‘এই ঘোষণায় পর পর্যটনের প্রসার বাড়বে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Midnapore Jhargram

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}