গত অক্টোবরের বন্যার জেরে হাওড়ার জয়পুরে মুণ্ডেশ্বরী নদীর জলস্তর অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল। ভবিষ্যতে কোনও রকম দুর্ঘটনা এড়াতে নদীর উপরে নির্মীয়মাণ জয়পুরের কুলিয়া সেতুর উচ্চতাও বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে পূর্ত (সড়ক) দফতর। তৈরি হবে নতুন নকশা। তাই মোটের উপর নির্মাণকাজ আপাতত স্থগিত করল ওই দফতর।
ওই দফতরের এক পদস্থ বাস্তুকার জানান, গত বন্যায় এই এলাকায় মুণ্ডেশ্বরীর জলের উচ্চতা কতটা বেড়েছিল, তা সেচ দফতরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্ট আসার পরে কুলিয়া সেতুর উচ্চতা কতটা বাড়ানো হবে, সে ব্যাপারে নতুন নকশা বানানো হবে। যতদিন না নতুন নকশা হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত কিছু জরুরি কাজ ছাড়া সেতুর বাকি সব কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
এলাকাটি সেচ দফতরের অধীন নিম্ন দামোদর নির্মাণভুক্তি (১) বিভাগে পড়ে। বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার সন্দীপকুমার গুপ্ত জানান, রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওই সেতুর কাজ শেষ হলে হাওড়ার ‘দ্বীপাঞ্চল’ বলে পরিচিত আমতা ২ ব্লকের ভাটোরা এবং ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান— এই দুই পঞ্চায়েত এলাকার সঙ্গে জেলার বাকি অংশের সরাসরি সড়কপথে যোগাযোগ সম্ভব হবে। গত অক্টোবরে জেলায় ডিভিসি-র ছাড়া জলে বন্যা হয়। ওই দু’টি পঞ্চায়েত মুণ্ডেশ্বরীর জলে প্লাবিত হয়। বন্যার জল নেমে যাওয়ার পরেই সেতুর উচ্চতা বাড়ানোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু হয়।
ওই দফতর সূত্রের খবর, সেতুর কাজ শুরু হয় বছর দেড়েক আগে। খরচ হচ্ছে ৩২ কোটি টাকা। চলতি বছরেই সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা। সেতুর যে তিনটি স্তম্ভ হয়ে গিয়েছে, তার উপরে 'পিয়ার ক্যাপ' (ঢালাই করা বিশেষ ঢাকনা, যা স্তম্ভের উপরে বসানো হয়। তার উপর দিয়ে পাতা হয় ঢালাই করা পাটাতন। যাতে পিচের রাস্তা করা হয়) বসানোর কথা। সেতুর উচ্চতা বাড়াতে হলে স্তম্ভের উচ্চতাও বাড়াতে হবে। নকশা এখনও তৈরি না হওয়ায় ‘পিয়ার ক্যাপ’ও বসানো হয়নি।
সেতুর কাজ এ বছর শেষ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন গ্রামবাসীদের অনেকে। পূর্ত (সড়ক) দফতরের হাওড়া ডিভিশন সূত্রে অবশ্য দাবি, সময়ে কাজশেষ হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)