Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Arambag

Arambag: টর্চ জ্বেলে খড় খুঁজছেন বিদ্যুৎকর্মীরা

একে তো মাঠে নাড়া (ধান গাছের অবশিষ্ট অংশ) পোড়ানোর জেরে ফের দূষণ ছড়াচ্ছে।

বিদ্যুতের তারে খড় জডিয়ে হচ্ছে বিপত্তি। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

বিদ্যুতের তারে খড় জডিয়ে হচ্ছে বিপত্তি। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২১ ০৯:০২
Share: Save:

রাত হলেই এখন আরামবাগ মহকুমার মাঠেঘাটে টর্চ হাতে নেমে পড়ছেন একদল লোক। আলো গিয়ে পড়ছে বিদ্যুতের খুঁটিতে। খোঁজ চলছে কোথায় তারে জড়িয়ে রয়েছে খড়!

ওঁরা বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্মী। এই ঠান্ডার রাতেও বিদ্যুতের তার থেকে খড়ের জট ছাড়াতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে তাঁদের। না হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গ্রামবাসীদের থাকতে হবে অন্ধকারে। বারেবারে ফোন আসবে সংস্থার অফিসে।

একে তো মাঠে নাড়া (ধান গাছের অবশিষ্ট অংশ) পোড়ানোর জেরে ফের দূষণ ছড়াচ্ছে। তার উপরে ধান ঝাড়ার জেরে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটেও ভুগতে হচ্ছে আরামবাগ মহকুমার বাসিন্দাদের। ভোগান্তিটা অবশ্য নতুন নয়। কোনও রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয় ছাড়াই কয়েক বছর ধরেই এই সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। কারণ, ধান ঝাড়া চলছে। সমস্যা আরও বেড়েছে।

বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঠে যত্রতত্র বিশেষ যন্ত্রে (হপার) ধান ঝাড়াতেই ধারাবাহিক ভাবে এই ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। সংস্থার ঠিকাদার সংস্থাগুলির পক্ষে মুক্তরাম সামুই জানান, গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে খেতখামারের উপর দিয়ে ছড়িয়ে আছে বিদ্যুৎবাহী তারের লাইন। সেই সব লাইনের কাছাকাছি চাষিরা হপারে ধান ঝাড়ছেন। ধান আলাদা হয়ে খড় এতই তীব্র গতিতে উড়ে জমি থেকে ১৭-১৯ ফুট উঁচু তারেও জড়িয়ে যাচ্ছে। রাতে শিশির পড়ে সেই শুকনো খড় তড়িৎবাহী হচ্ছে। দুই তারে লেগে শর্ট সার্কিট হয়ে পুরো ‘ফিডার’ বসে যাচ্ছে। চাষি এবং হপার-মালিকদের সচেতন করা হলেও তা বন্ধ হয়নি।

হঠাৎ হঠাৎ লোডশেডিংয়ে জেরবার হচ্ছেন গ্রামবাসী। তাঁরা বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সাব-স্টেশনে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফোন করছেন। তখন স্টেশনের কর্মীরা টর্চ ও আঁকশি হাতে দৌড়চ্ছেন। খড়ের জট খুঁজে আঁকশি দিয়ে ছাড়াচ্ছেন। তারপরে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুতের লাইন ঠিক করা হচ্ছে। ত্রুটি খুঁজে পেতে কখনও ঘণ্টা দুই বা তার বেশিও সময় লাগে। রাত ১০টার পর এ রকম ঘটনায় পরের দিন ঠিক হয়।

এ বার সমস্যা বেশি কেন?

বণ্টন সংস্থার ঠিকাদার সংস্থাগুলি জানিয়েছে, এ বার বৃষ্টির দরুন অনেক জমি শুকোতে দেরি হওয়াও ধান কাটতে যন্ত্র নামানো যায়নি। ফলে, চাষিরা কাস্তেতে ধান কাটেন। সেই ধান আর খামারে না তুলে মাঠেই হপারে ঝাড়া হচ্ছে। চাষিদের অনেকের দাবি, তারে শুকনো খড় জড়িয়ে শিশিরে ভিজে এই রকম বিপদ হতে পারে বলে তাঁদের কোন ধারণা ছিল না। আবার কেউ কেউ দাবি করেছেন, বিদ্যুৎ দফতর বললেও ধান তোলার তাড়ায় বিষয়টা
মাথায় থাকেনি।

উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আরামবাগ ডিভিশনের ম্যানেজার শুভেন্দু ভড়। তিনি বলেন, “বিদ্যুতের লাইন সুরক্ষিত রাখতে চাষিদের কাছে প্রচার করা চলছে। লিফলেটও দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুতের লাইনের কাছাকাছি যাতে ধান ঝাড়া না হয় তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলিরও সহায়তা চাওয়া হচ্ছে।”

বণ্টন সংস্থার আরামবাগ ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে ১০ হাজার কিলোমিটারের বেশি বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে। সেই লাইন তদারকির মতো পরিকাঠামো তাদের নেই। ঠিকাদার সংস্থাগুলিকে দায়িত্ব
দেওয়া হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Arambag Straw Electric wire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy