Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ধর্ষণের পরে চুল কেটে মার, ধৃত ২

রাতভর যাত্রা দেখে ভোরে গ্রামের মাঠ থেকে ফিরছিলেন মহিলা। এলাকারই এক জন তাঁকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ জানাতে সকালে অভিযুক্তের বাড়িতে যান মহিলা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩০
Share: Save:

রাতভর যাত্রা দেখে ভোরে গ্রামের মাঠ থেকে ফিরছিলেন মহিলা। এলাকারই এক জন তাঁকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ জানাতে সকালে অভিযুক্তের বাড়িতে যান মহিলা। উল্টে, তাঁকেই মারধর করে চুল কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠল অভিযুক্ত ও তাঁর পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে।

রবিবার সকালে বর্ধমানের কাঁকসায় ধর্ষণে অভিযুক্ত ও তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ দিন কাঁকসা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নির্যাতিতার চিকিৎসা করানো হয়। আজ, সোমবার দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কাঁকসার দোমড়া গ্রামে প্রতি বছর পুজোর পরে মেলা বসে। শনিবার সেই মেলার মাঠে আদিবাসীদের যাত্রানুষ্ঠান ছিল। এলাকার অনেকেই সেখানে গিয়েছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চল্লিশের ওই মহিলার বাড়ি আউশগ্রামের বড়চাপড়া গ্রামে। মেলা দেখতে দোমড়া গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছেন তিনি। রাতে যাত্রা দেখতে যান।

মহিলার অভিযোগ, যাত্রা শেষের পরে মাঠ থেকে বেরিয়ে তিনি পাশের একটি কমিউনিটি শৌচাগারে যাচ্ছিলেন। তখন গ্রামেরই বাসিন্দা মধু বাউড়ি তাঁর উপরে চড়াও হয়। পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। তিনি কোনও রকমে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বাড়ি চলে যান। সকালে ঘটনার বিহিত চাইতে তিনি সোজা অভিযুক্তের বাড়িতে হাজির হন। মহিলার অভিযোগ, ‘‘ওখানে গিয়ে ঘটনার কথা বলতেই বাড়ির লোকজন আমাকে মারধর শুরু করে। বাঁ চোখের নীচে, কাঁধে, পিঠে চোট লাগে। তার পরে আমার মাথার বাঁ দিকের চুল কেটে দেওয়া হয়।’’

মহিলার আরও অভিযোগ, অভিযুক্তের বাড়ির লোকজন তাঁর চরিত্র নিয়ে কটাক্ষ করে অভিযুক্তকে আড়াল করেন। তিনি বলেন, ‘‘কাটা চুল নিয়ে আমি এখন বাড়িতে মুখ দেখাব কী করে! এর বিচার চাই।’’ আত্মীয়ের বাড়িতে ফিরে ঘটনার কথা জানালে তাঁকে প্রথমে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। পরে থানায় গিয়ে ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ করেন তিনি। তবে লিখিত অভিযোগে চুল কেটে নেওয়ার কথা উল্লেখ করেননি। পুলিশ জানায়, অভিযোগ পাওয়ার পরেই মধু ও তার এক ছেলে লাদেন বাউড়িকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে এলাকার এক তৃণমূল নেতাকে মারধরের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল মধুর। কয়েক দিন জেল-হাজতেও কাটাতে হয় তাকে। তবে এখন সে এলাকায় তৃণমূলের কর্মী হিসেবেই পরিচিত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব যদিও জানান, মধু দলের কেউ নয়। দলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দোমড়ায় কী হয়েছে আমার জানা নেই। তবে অপরাধ যে-ই করুক, সাজা পাবে। দলের নাম করে কেউ রেহাই পাবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Assult woman Arrest Rape
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE