Advertisement
E-Paper

পাঁচিল থাকলেই পাকা বাড়ি নয়, বৈঠকে সিদ্ধান্ত

মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়, ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতেও অনেকে বাড়ি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। সেগুলি সমীক্ষার আওতায় এসেছে।

আবাস যোজনার বাড়ি।

আবাস যোজনার বাড়ি। — প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:৪৪
Share
Save

নিয়মের কড়াকড়ি শিথিল করে ‘মানবিক’ হয়ে আবাস-তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সোমবার দুপুরে পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদে একটি বৈঠকে পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও পঞ্চায়েত সচিব পি উগলানাথন জানিয়ে দেন, একটি দেওয়াল ইঁটের হলে, কিংবা গাঁথনি ইঁটের হলেও, আবাস তালিকায় বাড়ির নাম রাখা যাবে। শুধু তা-ই নয়, যে সব বাড়ি প্রাথমিক সমীক্ষায় বাদ পড়েছে, সেগুলিকে পুনরায় যাচাই করা হবে। জেলা ও মহকুমা স্তর থেকে ‘সুপার চেকিং’-এর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকের পরে বর্ধমানের সার্কিট হাউসে জেলাশাসক আয়েষা রানি-সহ জেলা প্রশাসন ও কৃষি দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী। সেখানেও আবাস নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা হয়। শস্যবিমার হাল-হকিকত জেনেনেন মন্ত্রী।

সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে জানানো হয়, ২০১৮-র মূল তালিকা ধরেই আবাসের সমীক্ষা হচ্ছে। ২০২২-এ ঝাড়াই বাছাই করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একটি তালিকা পাঠানো হয়েছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়, ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতেও অনেকে বাড়ি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। সেগুলি সমীক্ষার আওতায় এসেছে। এ ছাড়া, সাম্প্রতিক বন্যায় যাঁদের মাটির বাড়ির ক্ষতি হয়েছে, তাঁদের বাড়িও খতিয়ে দেখছেন সমীক্ষকেরা। সোমবার পর্যন্ত জেলায় ২৮ হাজারের বেশি আবেদনকারীর নাম বাতিলের তালিকায় রেখেছিলেন সমীক্ষকেরা। বৈঠকের পরে জানানা হয়, বাতিলের তালিকা ধরে ফের ওই সব বাড়িগুলি যাচাই করবেন সমীক্ষকেরা। জানানো হয়েছে, স্রেফ পাঁচিল থাকার কারণে বাদ পড়ে যাওয়া বাড়িগুলিকে ফের ‘যোগ্য’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে নতুন কোনও নাম তালিকায় ঢোকার সুযোগ নেই।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দু’বছর আগে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) প্ররকল্পের ক্ষেত্রে নির্দেশ ছিল, বাড়িতে ইটের দেওয়াল বা গাঁথনি থাকলেই সেটি ‘পাকা বাড়ি’ বলে বিবেচিত হবে। সেই নির্দেশ মতোই ‘বাংলা আবাস যোজনায়’ সমীক্ষকেরা বাড়িগুলি যাচাই করছিলেন। তাতে প্রচুর বাড়ি বাদ পড়েছিল। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিব যাচাইয়ের প্রশ্নে মানবিক হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরেই, জেলা প্রশাসন, ব্লক প্রশাসন চাপে পড়ে। পাকা বাড়ির সংজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হয়। বুদবুদের সভায় বিষয়টি উঠতেই মন্ত্রী ও সচিব ব্যাখা দিয়ে জানান, বৃষ্টি থেকে দেওয়ালকে বাঁচাতে অনেকেই ইটের গাঁথনি দিয়ে মাটির দেওয়াল তুলে থাকেন। আবার মাটির বাড়ির পিছনের দেওয়ালের পাশে ইটের পাঁচিল দেন। এই রকম বাড়িগুলিকে ‘পাকা’ বলা ঠিক নয়। পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, “বৃষ্টির প্রকোপ এড়াতে অনেকেই মাটির দেওয়ালের পাশে ইটের পাঁচিল দেন। একটা দেওয়াল এ রকম থাকলে সেই বাড়িগুলিকে পুনর্বিবেচনা করে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। তবে চারটি দেওয়ালই এ রকম থাকলে, সেই বাড়িকে পাকা বলেই ধরা হবে।”

সার্কিট হাউসে বৈঠক শুরু হতেই বাদের তালিকায় পড়া বাড়িগুলির কিছু নমুনা পঞ্চায়েতমন্ত্রী ও কর্তাদের সামনে তুলে ধরেন জেলাশাসক। পঞ্চায়েত দফতরের এক কর্তা বলেন, “২০-২৫ লক্ষ টাকা খরচ করে বাড়ি তৈরি করেছে। তার পরেও ১.২০ লক্ষ টাকার বাড়ির তালিকায় নাম রয়েছে! এ সব বাড়ি তো এমনিতেই বাদ পড়বে।” ঠিক হয়েছে, বাদের তালিকায় থাকা বাড়িগুলি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। বিভিন্ন স্তরে সমীক্ষকদের আপলোড করা ছবি যাচাই করে সন্দেহজনক ঠেকলে, সেগুলিকেও যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Abas Yojana cm pm

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}