ভর্তি প্রক্রিয়ায় ‘রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে’র ফলে স্কুল চালাতে অসুবিধা হচ্ছে বলে জেলা স্কুল পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) কাছে অভিযোগ জানালেন মেমারির রসিকলাল স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নীলিমা ভট্টাচার্য।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিয়ে বিরোধ বাধে প্রধান শিক্ষিকা ও পরিচালন সমিতির। সরকারি নির্দেশ অনুসারে, পুরনো নিয়ম মেনে দশ বছরের কোনও পড়ুয়া চতুর্থ শ্রেণি পাশ করলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। সেই মতো রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল অভিভাবকদের কাছে নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন আটকে গেলে স্কুলের কোনও দায় থাকবে না— এই মর্মে মুচলেকা লিখিয়ে পড়ুয়াদের ভর্তি করাচ্ছে। কিন্তু এখানেই বাধ সাধেন নীলিমাদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের স্কুলেও এ ভাবে ছাত্রীদের ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু এক বার নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন আটকে যাওয়ার পরে স্কুলের ভিতরে কয়েক জন ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করে।’’ প্রধান শিক্ষিকার অভিযোগ, শুক্রবার তিনি স্কুলে না থাকার সুযোগে পরিচালন সমিতির সম্পাদক এক করণিককে হুমকি দিয়ে কম বয়সী কয়েক জন ছাত্রীকে নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে ভর্তি করিয়েছেন। গত ৭ জানুয়ারি নীলিমাদেবী মেমারি থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। নীলিমাদেবীর ক্ষোভ, ‘‘পরিচালন সমিতির মাথারা রাজনৈতিক নেতা হওয়ার সুবাদে লোক জড়ো করে হুমকি দিচ্ছেন।’’ যদিও সমিতির সম্পাদক তথা মেমারির উপ-পুরপ্রধান সুপ্রিয় সামন্তের দাবি, ‘‘স্কুলের উন্নয়নে নীলিমাদেবী নানা ভাবে বাধা দিচ্ছেন।’’
নীলিমাদেবীর আরও অভিযোগ, স্কুলের শিক্ষিকাদের নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ‘সিসিএল’ (চাইল্ড কেয়ার লিভ) দেওয়া হচ্ছে। আর শিক্ষিকারা সেই ছুটিতে বেড়াতে যাচ্ছেন। পরিচালন সমিতিতে গৃহীত সিদ্ধান্তের খাতা (রেজ্যুলেশন বুক) সভাপতির বাড়িতে থাকা, ‘বুক লিস্ট’ করতে গিয়ে সমস্যা-সহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমাকে অন্ধকারে রেখে স্কুলের বিভিন্ন কাজ হচ্ছে। চেক সই করতে না চাইলে শিক্ষিকাদের দিয়ে ঘেরাও করানো হচ্ছে।’’
নীলিমাদেবীর যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে সমিতির সভাপতি দেবাশিস মণ্ডলের পাল্টা দাবি, ‘‘প্রধান শিক্ষিকা ক্লাস নেন না, পরীক্ষার খাতা দেখেন না। কাজ শেষে নির্মাণকারী সংস্থাকে বকেয়া মেটান না।’’
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিচালন সমিতি ও প্রধান শিক্ষিকার মধ্যে গোলমাল বেশ কয়েক বছর ধরেই চলেছে। পরিচালন সমিতির দাবি, ২০১৩-র ২৫ এপ্রিল এক শিক্ষিকাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে ওই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।
স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) খগেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “ভর্তি সংক্রান্ত সমস্যা মেটানোর জন্য দু’পক্ষকেই সোমবার ডাকা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy