শেষযাত্রায়। নিজস্ব চিত্র।
মেঘালয় থেকে ফোনে দুঃসংবাদ এসে পৌঁছেছিল শনিবার সকালে। গ্রামের ছেলে, বিএসএফ জওয়ান ধর্মেন্দ্র নুনিয়ার (২৫) মৃত্যু হয়েছে বজ্রাঘাতে। রবিবার সন্ধ্যায় ধর্মেন্দ্রর দেহ এসে পৌঁছয় তাঁর গ্রাম জামুড়িয়ার নিঘার গোয়ালপাড়ায়। শেষযাত্রায় সামিল হন কয়েক হাজার গ্রামবাসী।
রবিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ নিঘা মোড়ে এসে পৌঁছায় ধর্মেন্দ্রর নিথর দেহ। রাস্তার দু’পাশে তখন থিকথিকে ভিড়। গাড়ি থেকে দেহটি কাঁধে নিয়ে প্রায় ১ কিলোমিটার হেঁটে ধর্মেন্দ্রের বাড়িতে পৌঁছান চার জওয়ান। এক সময় ধর্মেন্দ্রের মা গিরিজাদেবী ও স্ত্রী পূর্ণিমাদেবীকে জনতাকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পরে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামেরই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। সেখানে তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানান গ্রামবাসীরা।
মৃত জওয়ানের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে বিএসএফে চাকরি পেয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র। কাজ করতেন বিএসএফের মেঘালয় রেজিমেন্টের ৭৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নে এসআই পদে। চলতি বছরের ৮ মে বিয়ে করেছিলেন তিনি। এলাকায় ভাল ভলিবল খেলোয়াড় হিসেবে নাম ছিল তাঁর। রবিবার মৃতের বড় দাদা সুরিন্দর নুনিয়া জানান, জেকেনগর হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন তাঁর ভাই। এমএ পাশ করেন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সুরিন্দরবাবু বলেন, “শনিবার সকালে এক কম্যান্ডার বাড়িতে ফোন করে জানায়, হেঁটে সীমানা পাহারা দেওয়ার সময় বজ্রপাত হলে মারা যান ধর্মেন্দ্র ও তাঁর এক সহকর্মী। আহত হন দু’জন।” নিজের দুই ছেলে দেশরক্ষার কাজ করেন বলে গর্ববোধ করেন ধর্মেন্দ্রের বাবা রাজেন্দ্র নুনিয়া। এক ছেলের আকস্মিক দুর্ঘটনাতেও তাতে ছেদ পড়েনি। তিনি বলেন, “আমার দুই ছেলে নিজেদের ইচ্ছেতে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছে। এই পেশায় মৃত্যু যে কোনও সময় আসতে পারে জানতাম। তিন মাস আগে ছেলেটার বিয়ে দিয়েছিলাম। এ ভাবে মারা যাবে ভাবতে পারিনি।”
এ দিন জওয়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন প্রায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। এসেছিলেন জামুড়িয়ার সিপিএম বিধায়ক সিপিএম বিধায়ক জাহানারা খান, সিপিএম কাউন্সিলর কিশোর থর, বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকার, স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিকাশ নুনিয়া-সহ অনেকে। সিপিএম কাউন্সিলার কিশোর থর বলেন, “অল্প বয়স থেকেই এলাকায় নানা সমাজসেবামূলক কাজে যুক্ত ছিল ধর্মেন্দ্র।” দেহ বাড়িতে আনার কিছু পরে আসেন জামুড়িয়ার বিডিও বুদ্ধদেব পান। তিনি বলেন, “জওয়ানরা প্রথমে দেহ নিয়ে শ্রীপুর ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকেই বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষযাত্রায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ উপস্থিত ছিল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy