Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪

অস্ত্রোপচারে সুস্থ নাবালক

সপ্তাহ দু’য়েক আগে বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল-সহ অন্য চিকিৎসকেরা জেলা হাসপাতালেই ঋজুর জুড়ে-থাকা আঙুলের সফল অস্ত্রোপচার করেন। শুক্রবার ঋজুর হাতের ব্যান্ডেজ খোলা হলে দেখা যায়, আঙুল দু’টি সম্পূর্ণ আলাদা করা গিয়েছে।

দশা: অস্ত্রোপচারের আগে

দশা: অস্ত্রোপচারের আগে

সীমান্ত মৈত্র
আমডাঙা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০০:১৫
Share: Save:

জন্ম থেকেই বাঁ হাতের দু’টি আঙুল জোড়া অবস্থায় ছিল ৭ বছরের বালকটির। অনামিকা ও মধ্যমা ধীরে-ধীরে কুঁকড়ে যাচ্ছিল। আমডাঙার বোদাই গ্রামের দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ঋজু মান্নার বাঁ হাতের নড়াচাড়াই এক রকম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ক্রমশ বিরল এক শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়ে পড়ছিল ঋজু।

সপ্তাহ দু’য়েক আগে বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল-সহ অন্য চিকিৎসকেরা জেলা হাসপাতালেই ঋজুর জুড়ে-থাকা আঙুলের সফল অস্ত্রোপচার করেন। শুক্রবার ঋজুর হাতের ব্যান্ডেজ খোলা হলে দেখা যায়, আঙুল দু’টি সম্পূর্ণ আলাদা করা গিয়েছে। ইচ্ছে মতো সে নাড়াতেও পারছে তার আঙুল। এতে খুশি ঋজুর বাবা-মা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঋজুর বাবা চিত্তরঞ্জন মান্না পেশায় দিনমজুর। মা শম্পাদেবী সংসার সামলান। দরিদ্র পরিবারটির পক্ষে মোটা টাকা খরচ করে ছেলের অস্ত্রোপচার করা সম্ভব ছিল না। মাস দেড়েক আগে ঋজুকে নিয়ে শম্পাদেবীরা বারাসত জেলা হাসপাতালে গিয়েছিলেন। ঋজুকে দেখার পরে সুপার সুব্রতবাবু হাসপাতালের অর্থোপেডিক শল্য চিকিৎসক অরিন্দম মজুমদারের সঙ্গে ঋজুর অসুস্থতা নিয়ে আলোচনা করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, বারাসত হাসপাতালেই ঋজুর অস্ত্রোপচার করা হবে।

সেই মতো চারজন চিকিৎসকে নিয়ে একটি দল গড়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পরে সুপার সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘ঋজুর আঙুলে প্লাস্টিক সার্জারি করা হয়েছে। মাংস এনে তার হাতে লাগানোও হয়েছে। এ জন্য ওর পরিবারকে কোনও টাকা খরচ করতে হয়নি।’’ তিনি আরও জানান, এত দিন এমন অস্ত্রোপচার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া করা যেত না। সম্প্রতি জেলা হাসপাতালেও প্লাস্টিক সার্জারি করা হচ্ছে। ঋজু আঙুল ফিরে পাওয়ায় খুশি চিকিৎসকেরাও। সুপার বলেন, ‘‘শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে বাচ্চাটিকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি, এটিই বড় প্রাপ্তি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE