Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Travel

কানহা-অমরকণ্টক-বান্ধবগড়-জবলপুর-পেঞ্চ

মধ্যপ্রদেশ সফরে গিয়ে জঙ্গলের রূপ উপভোগ না করলে চলে? তৃতীয় পর্ব। লিখছেন উত্তরা গঙ্গোপাধ্যায়।মনে রাখবেন, জঙ্গলের কোনও প্রাণী আমাদের বশংবদ নয়। দেখা দেওয়া বা না দেওয়া তাদের মর্জি।

ঘুরে আসুন মধ্যপ্রদেশ থেকে। ছবি: সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়।

ঘুরে আসুন মধ্যপ্রদেশ থেকে। ছবি: সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়।

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৮ ২০:০০
Share: Save:

বাঘের দেশ মধ্যপ্রদেশ। কানহা-বান্ধবগড়ের খ্যাতি তো বিশ্ববিদিত। তাই জবলপুরকে ভিত্তি করে এই দুই জঙ্গল তো দেখতেই হবে। তার সঙ্গে সময় পেলে অবশ্যই জুড়ে নিতে পারেন পেঞ্চ, কারণ সেখান থেকে নাগপুর হয়ে ঘরমুখো হওয়ার সুবিধা আছে। আর সময়ের অভাব হলে জবলপুর থেকেই বাড়ি ফেরা। আবার যাঁরা একটা জঙ্গল দেখেই খুশি, বা হাতে খুব কম সময় তাঁরা জবলপুর-কানহা বেরিয়ে ফিরে আসতে পারেন। কিংবা ট্রেনে সাতনা হয়ে বান্ধবগড় ও অমরকণ্টক ঘুরে জবলপুর হয়ে বাড়ি ফিরে চলুন। নাগপুর হয়ে শুধু পেঞ্চ ঘুরে আসা যেতে পারে। এই সূচির মজা হল, নিজের পছন্দমতো অদলবদল করে ঘুরে আসতে পারেন অনায়াসে।

ট্রেনে গেলে কাটনিতে নেমে সড়কপথে চলুন কানহা। প্লেনে গেলে অবশ্য জবলপুর বা নাগপুর হয়ে সড়কপথে যেতে হবে। কানহা-র দু’টি প্রধান প্রবেশতোরণ— খাটিয়া ও মুক্কি, এদের ঘিরে রয়েছে নানা হোটেল, রিসর্ট। মধ্যপ্রদেশ স্টেট ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের (এমপিএসটিডিসি) ট্যুরিস্ট লজ আছে দু-জায়গাতেই। তাই কোথায় থাকবেন সেটা হিসেব করে রওনা দিতে হবে। জবলপুর থেকে খাটিয়া পৌঁছতে ঘণ্টা চারেক লাগবে, মুক্কি পৌঁছতে আর একটু বেশি।

কানহা ন্যাশনাল পার্ক মূলত শাল জঙ্গল। ১৯৭৩ সালে কানহা প্রজেক্ট টাইগার-এর অন্তর্ভুক্ত হয়। জঙ্গলের পূর্ব দিকে মাইকাল পাহাড় শ্রেণি। এখানে একাধিক মালভূমি (দাদার) আছে। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে বানজার ও হালন নদী।

কানহা ন্যাশনাল পার্ক। ছবি: সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: ইতিহাসের সরণি ধরে ভোপাল-ভীমবেটকা-সাঁচি-উদয়গিরি-বিদিশা​

সকাল-বিকেল চলুন সাফারি-তে। এর মধ্যে কোথাও বাঘের দেখা পেলে, যদি টাইগার শো সম্ভব হয়, তা হলে বন দফতর চেষ্টা করে হাতিতে করে পর্যটকদের নিয়ে গিয়ে সেই বাঘ দেখিয়ে আনতে। তবে এই পদ্ধতিতে বাঘ দেখা বা দেখানো ঠিক না ভুল সেই নিয়ে নানা তর্ক আছে।

মনে রাখবেন, জঙ্গলের কোনও প্রাণী আমাদের বশংবদ নয়। দেখা দেওয়া বা না দেওয়া তাদের মর্জি। তাই প্রথম থেকেই কী দেখবেন তার তালিকা না করে, সম্পূর্ণ জঙ্গলটাকেই উপভোগ করার চেষ্টা করুন। গাইড আপনাকে গাছপালা, পাখি, জন্তুজানোয়ার চেনাবার চেষ্টা করবেন, দেখাবেন। তাঁর উপর ভরসা রাখুন। বাঘের জঙ্গল বলে খ্যাত হলেও, বারাশিঙা প্রজাতির হরিণকে বাঁচানোর কৃতিত্ব কিন্তু এই কানহা-র। জঙ্গলের ভিতরে কয়েকটি জায়গার নাম সবার মুখে মুখে ঘোরে, যেমন কানহা মেডোজ, শ্রবণ-তাল, বামনি দাদার ইত্যাদি। রামায়ণের গল্পের শ্রবণ কুমার নাকি এই তালাও থেকেই তার দৃষ্টিহীন বাবা-মার জন্য জল নিতে এসেছিল। সাধারণত বিকেলের দিকে যাওয়া হয় বামনি দাদার, এখানে থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য ভারী সুন্দর। তা ছাড়া গাউর-এর পালের দেখাও পেতে পারেন। কানহা-র জঙ্গলে আছে লেপার্ড, ভল্লুক, শম্বর, জংলি কুকুর, চিতল হরিণ ইত্যাদি। তিনশোরও বেশি প্রজাতির পাখি আছে এখানে। নানা সরীসৃপ ও অন্যান্য প্রাণী তো আছেই।

জঙ্গলে ডোরাকাটার দেখাও পেয়ে যেতে পারেন। ছবি: সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়।

তবে হ্যাঁ, জঙ্গলের ফাঁক দিয়ে বা রাস্তার উপর এক ঝলক হলুদ-কালো ডোরাকাটার দেখা পাওয়ার মজাই আলাদা। কপাল ভাল থাকলে হয়তো দেখলেন আপনার গাড়ির রাস্তার উপরেই বসে যাচ্ছে বাঘ বা বাঘিনি ও তার শাবকেরা। কখনও দেখা মেলে কোনও ওয়াটার-হোলে গা ভিজিয়ে বসে তারা। লটারির টিকিট লাগার মতো হয়তো শিকার করার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে ফেললেন। মনে রাখবেন, হয়তো একাধিক বার জঙ্গলে গিয়েও এক বারও বাঘের দেখা পেলেন না, এমন হতে পারে। তবে কানহা বান্ধবগড় গিয়ে বাঘের দেখা পাননি এ রকম লোক কম।

কানহা -তে থাকার জন্য এমপিএসটিডিসি-র দু’টি টুরিস্ট লজ আছে। খাটিয়া গেটের মোচা-তে আছে বাঘিরা জঙ্গল রিসর্ট, বানজার নদীর ধারে। আর মুক্কি-তে কানহা সাফারি লজ।

খাটিয়া গেট।ছবি: সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়।

কানহা দেখে চলুন অমরকণ্টক। তিন পাহাড়শ্রেণি এসে মিশেছে এখানে— বিন্ধ্য, মাইকাল ও সাতপুরা। নর্মদা-র উৎপত্তিস্থল অমরকণ্টক, তীর্থরাজ নামেও পরিচিত। কুন্ড-স্বরূপ নর্মদার উৎসস্থল বা নর্মদা উদগম ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা মন্দির। নবম শতাব্দীতে রেওয়ার মহারাজা তৈরি করেন নর্মদা মন্দির। এই মন্দির চত্বরে রয়েছে মুণ্ডহীন সওয়ারি নিয়ে হাতির মূর্তি। স্থানীয় বিশ্বাস, হাতির পায়ের ওই সংকীর্ণ ফাঁক দিয়ে সেই গলতে পারে যে কোনও দিন কোনও পাপ করেনি। দেখার অনেক কিছু আছে অমরকণ্টকে। শোন নদীর উৎপত্তিও এখানে। তা ছাড়া রয়েছে কপিলধারা, দুগ্ধধারা, কপিলাশ্রম, পাতালেশ্বর মহাদেব মন্দির ইত্যাদি। শহরে ঢোকার মুখে কবীর চবুতরা, যেখানে সন্ত কবীর সাধনা করতেন।

তীর্থস্থল, তাই হোটেলের অভাব নেই। এমপিএসটিডিসি টুরিস্ট লজের নাম হলিডে হোমস, মন্দির কমপ্লেক্স থেকে প্রায় ১০ মিনিটের দূরত্ব।

বান্ধবগড় ন্যাশনাল পার্ক।ছবি: সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়।

অমরকণ্টক দেখে চলুন বান্ধবগড়। সাতপুরা পাহাড়ের কোলে অবস্থিত বান্ধবগড় ন্যাশনাল পার্ক। লোক-কথা অনুযায়ী ভাই (বান্ধব) লক্ষ্মণকে দাদা রামচন্দ্র এই দুর্গের দায়িত্ব দিয়েছিলেন লঙ্কা-র উপর নজরদারি করার জন্য। সেই থেকে নাম বান্ধবগড়। জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে প্রাচীন দুর্গ, গুহা। বলা হয়, দশম শতাব্দীতে তৈরি ‘বড়ি গুফা’ ছিল মধ্যযুগে সৈন্যদের আবাসস্থল। এই গুহাগুলি ঘিরে এখন বাঘেদের বা অন্য বনচর প্রাণীদের ঘরসংসার। জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে ৬৫ ফুট লম্বা পাথরের তৈরি বিষ্ণুর শায়িত মূর্তি। নাম শেষ শয্যা। পায়ের নীচ দিয়ে বয়ে চলেছে জলধারা, চরণগঙ্গা।

হিসেব অনুযায়ী, ভারতবর্ষের সব টাইগার রিজার্ভ-এর মধ্যে বান্ধবগড়ে এলাকা অনুপাতে সব চেয়ে বেশি বাঘ রয়েছে, তাই দেখার সুযোগও তুলনামূলক ভাবে বেশি। বাঘ ছাড়াও রয়েছে লেপার্ড, জংলি কুকুর, বনবিড়াল, চিতল, শম্বর, নীলগাই, চৌশিঙা, চিঙ্কারা ইত্যাদি। আছে আড়াইশোরও বেশি প্রজাতির পাখি।

বান্ধবগড় প্রবেশের অন্যতম জনপ্রিয় গেট টালা। সেখানেই রয়েছে এমপিএসটিডিসি-র হোয়াইট টাইগার ফরেস্ট লজ। তা ছাড়া বেসরকারি হোটেল ও রিসর্ট তো আছেই।

মার্বেল রকসের মধ্য দিয়ে বয়ে চলেছে নর্মদা।ছবি: সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়।

বান্ধবগড় থেকে এ বার সোজা জবলপুর, প্রায় ১৭০ কিমি।

জবলপুরের ইতিহাস লম্বা হলেও আধুনিক শহরটি গড়ে উঠেছে ইংরেজদের হাতে ক্যান্টনমেন্ট হিসেবে। এখন বাণিজ্যিক শহর হিসেবেও বিখ্যাত। পর্যটকদের কাছে অবশ্য বেশি আকর্ষণীয় শহর ছাড়িয়ে নর্মদা নদীর বিস্তার। প্রথমেই চলুন ভেড়াঘাট, শহর ছাড়িয়ে প্রায় ২০ কিমি দূরে। চুনাপাথরের খাড়াই পাহাড়। নাম তার মার্বেল রকস। মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে নর্মদা। স্থানীয় পঞ্চায়েতের ব্যবস্থাপনায় নৌকো সফরের ব্যবস্থা আছে। সবার সঙ্গে অথবা শুধু নিজের মতো করে নৌকো ভাড়া করতে পারেন। দুই খাড়া দেওয়ালের মধ্যে দিয়ে সোজা বয়ে চলেছে নদী। দিনের আলোয় ঝকঝক করে সাদা পাথর। প্রকৃতির খেয়ালে পাথরের রংরূপ বদলে যায়। সাদার মাঝে কোথাও বা লাল, কোথাও বা সবুজ রঙের ছোঁয়া। নৌকো চলার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় মাঝির রানিং কমেন্ট্রি। অদ্ভুতদর্শন পাথরগুলির নানা নাম, তাদের সঙ্গে জড়িয়ে নানা কাহিনি বলে মনোরঞ্জন করে মাঝি। এরই মধ্যে হয়তো নজরে পড়বে পাহাড়ের নীচে পাথরের গায়ে বসে রোদ পোহাচ্ছে কুমির। হ্যাঁ, নদীর জলে কুমির আছে। মোটামুটি এক ঘণ্টার সফর। পূর্ণিমা রাতে বিশেষ নৌবিহারের ব্যবস্থা থাকে অনেক সময়।

পূর্ণিমা রাতে বিশেষ নৌবিহারের ব্যবস্থা থাকে।ছবি: সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়।

কোন সময় ভেড়াঘাট যাচ্ছেন সেই অনুযায়ী নৌকো সফরের আগে বা পরে দেখে নিতে পারেন চৌষট্টি যোগিনী মন্দির, ভেড়াঘাটের কাছেই। ১০৮টি সিঁড়ি বেয়ে পৌঁছতে হয় পাহাড় চুড়োয়। দশম শতাব্দীতে কোনও এক কালচুরি রাজার তৈরি গোলাকার মন্দির। যদিও অনেক মূর্তি অবহেলায় নষ্ট, তবুও তাদের গায়ের অলঙ্করণ দেখে প্রাচীন শিল্পরীতির কিছুটা আন্দাজ করা যায়।

ভেড়াঘাটের আর এক আকর্ষণ নর্মদা নদীর জলপ্রপাত। ভীষণ বেগে বয়ে আসা নদী শ’খানেক ফুট উপর থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ছে খাড়া পাহাড়ের ঢাল ধরে। হাওয়ার দাপটে সেই জল ছিটকে ধোঁয়ার আকার নেয়। তাই প্রচলিত নাম ধুঁয়াধার। পাথরের উপর দিয়ে হেঁটে পৌঁছতে পারবেন জলপ্রপাতের ধার অব্দি। তবে অবশ্যই সাবধানে, কারণ পাথরগুলি বেশ পিচ্ছিল। পাখির চোখে ধুঁয়াধার ও নর্মদা নদীর দৃশ্য দেখতে হলে বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি রোপওয়ে চড়ে দেখতে পারেন। মোটামুটি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা অব্দি চালু থাকে রোপওয়ে, ভাড়া মাথাপিছু ৯৫ টাকা যাতায়াত সমেত (ভাড়া: জুন ২০১৮)। মনে রাখবেন, বর্ষাকালে নৌকো সফর ও রোপওয়ে দু’টিই বন্ধ থাকে।

জবলপুরের অন্যান্য আকর্ষণের মধ্যে আছে দুর্গাবতী মিউজিয়াম, একাদশ শতাব্দীর গোন্ড রাজাদের দুর্গ মদনমহল, এখান থেকে জবলপুর শহর দেখে নেওয়া যায় এক ঝলকে, ব্যালান্সিং রক, ৫০০ বছরের পুরনো জৈন মন্দির পিসানহরি কি মাদিয়া, ডুমনা নেচার পার্ক ইত্যাদি।

দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকেই অনায়াসে পৌঁছনো যায় জবলপুর। শহর থেকে প্রায় ২০ কিমি দূরে ডুমনা বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে দিল্লি, মুম্বই, নাগপুর, ভোপাল, ইন্দোর ও অন্যান্য শহরের সঙ্গে। রেল ও বাস যোগাযোগ আছে দেশের নানা প্রান্তের সঙ্গে। জবলপুরে থাকার জন্য নানা মানের ও দামের হোটেল পাবেন। এমপিএসটিডিসি-র হোটেল কালচুরি বেশ ভাল। আর নর্মদাকে সঙ্গী করে কাটাতে চান তো এমপিএসটিডিসি-র মোটেল মার্বেল রকস-এ থাকতে পারেন।

আরও পড়ুন: দিন সাতেকের ছুটি? তা হলে বন্য পরিবেশের মধ্যপ্রদেশ হোক অবসরের ঠিকানা​

বর্গী ড্যাম। ছবি সৌজন্য: মধ্যপ্রদেশ পর্যটন দফতর।

আবার জবলপুরে না থেকে একটু নিরিবিলিতে থাকতে চাইলে চলুন বর্গী ড্যাম। প্রায় ৪০ কিমি দূরে নর্মদার ওপর ড্যাম ঘেঁষে এমপিএসটিডিসি-র মাইকাল রিসর্ট। বোটিংয়ের সুযোগ আছে নদীর বুকে। স্পিড বোটে চড়ে ঝটিতি সফর বা ক্রুইজ বোটে চেপে ধীরেসুস্থে বেড়ানো। তবে মনে রাখবেন, কাছাকাছি কোনও এটিএম নেই। তাই সঙ্গে কিছু ক্যাশ রাখা ভাল, কারণ হোটেলে কার্ড নিলেও, যদি মেশিন খারাপ থাকে তা হলে সমস্যায় পড়তে পারেন।

পেঞ্চ ন্যাশনাল পার্ক। ছবি: সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়।

জবলপুর থেকে সাড়ে চার ঘণ্টার মতো লাগে পেঞ্চ ন্যাশনাল পার্ক পৌঁছতে। রুডইয়ার্ড কিপলিংয়ের লেখা জাঙ্গল বুক-এর হিরো মুগলি-র সঙ্গে জড়িয়ে এই জঙ্গলের নাম। যদিও নেকড়েদের মধ্যে পালিত এই মানবশিশুর গল্প সত্যি না কি নিছক লেখকের কল্পনা, সে বিষয়ে তর্কের নিরসন বোধ হয় হবে না। ১৯৯২ সালে প্রজেক্ট টাইগার-এর অন্তর্ভুক্ত হয় এই জঙ্গল। মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশ জুড়ে জঙ্গল, পেঞ্চ নদী সীমানা টেনেছে দুই রাজ্যের জঙ্গলের মধ্যে। ভৌগোলিক অবস্থান ও জল-হাওয়ার নিরিখে এই জঙ্গলে নানা ধরনের গাছপালা দেখা যায়। প্রধান আকর্ষণ অবশ্যই বাঘ. তা ছাড়া আছে লেপার্ড, হায়েনা, শেয়াল, নীলগাই, গাউর, শম্বর ইত্যাদি। তিনশোর বেশি প্রজাতির পাখি আছে। শীতকালে হাজির হয় পরিযায়ী পাখির দল।

পেঞ্চ-এর তুরিয়া গেটের কাছে এমপিএসটিডিসি-র কিপলিংস কোর্ট টুরিস্ট লজ, তা ছাড়া বেসরকারি রিসর্টও আছে বেশ কিছু। জবলপুর থেকে সিওনি-খাওয়াসা হয়ে তুরিয়া গেট প্রায় ২১৫ কিমি।

সাফারি বুকিং: মধ্যপ্রদেশের সব জঙ্গলেই অনলাইন সাফারি বুকিং (https://forest.mponline.gov.in/index.aspx) করা যায়। নির্দিষ্ট গেট থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক গাড়ির প্রবেশের অনুমতি মেলে। তাই আগাম বুকিং করে যাওয়াই শ্রেয়। গাড়ির খরচ, ক্যামেরা ফি, গাইড ফি ইত্যাদি সর্বশেষ খরচ আগাম জেনে নেওয়া ভাল। কারণ এগুলি পারমিট ফি-র সঙ্গে ধরা থাকে না। সাধারণত ১ অক্টোবর থেকে ৩০ জুন খোলা থাকে জঙ্গল। শীতকাল বেড়ানোর পক্ষে মনোরম হলেও, এপ্রিল-মে মাসের তীব্র গরমে বাঘের দেখা পাওয়ার সুযোগ বেশি থাকে।

বিশদ জানতে ও বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগের ঠিকানা: MPTDC, ‘Chitrakoot’, Room No.67, 6th Floor 230-A, A J C Bose Road, Kolkata-700020; Tel: 033-22833526; 033-22875855; E-mail: kolkata@mpstdc.com

অন্য বিষয়গুলি:

Travel Tourism Madhya Pradesh Jungle Safari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE