ঋষভ পন্থ। —ফাইল চিত্র।
আইপিএল শুরুর আগে বিশাখাপত্তনমে প্রি-সিজন ক্যাম্প করেছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। সেই ক্যাম্পের প্রথম দিনের কথা ভুলতে পারছেন না প্রবীণ আমরে। বিমানবন্দর থেকে সোজা মাঠে চলে গিয়েছিলেন ঋষভ পন্থ। গাড়ি দুর্ঘটনার পর ১৫ মাস কেটে গিয়েছে। মাঠে ফেরার জন্য পন্থ ছটফট করছিলেন। পন্থের সেই প্রত্যাবর্তন নিজের চোখে দেখেছেন আমরে।
গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে ৪৩ বলে ৮৮ রান করেন পন্থ। সেই ইনিংসের পর আমরে বলেন, “বিশাখাপত্তনমে ক্যাম্পের প্রথম দিনের কথা ভুলতে পারব না। বিমানবন্দর থেকে সোজা মাঠে চলে এসেছিল। ওর মধ্যে খিদেটা রয়েছে। এক দিনও নষ্ট করতে রাজি নয় পন্থ। আর ও যে পরিশ্রম করেছে সেটা দেখা যাচ্ছে। মাঠে সেটার ফল পাচ্ছে।”
জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি ছাড়পত্র দিয়েছিল পন্থকে। কিন্তু তাতেও সন্দেহ ছিল। পন্থ খেলার জন্য কতটা তৈরি সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন অনেকেই। সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। পন্থ কি আদৌ তৈরি খেলার জন্য? আগের মতো ব্যাট করতে পারবেন তিনি? এত ম্যাচ খেলার চাপ নিতে পারবেন পন্থ? হাঁটুতে চোট ছিল পন্থের। উইকেটরক্ষক হিসাবে খেলতে পারবেন কি? এমন নানা ধরনের প্রশ্ন উঠছিল। সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিয়েছেন পন্থ।
এ বারের আইপিএলে ন’ম্যাচে ৩৪২ রান করেছেন পন্থ। তিনটি অর্ধশতরান করেছেন। পন্থের স্ট্রাইক রেট ১৬১.৩২। গড় ৪৮.৮৬। উইকেটের পিছনেও দক্ষতা দেখাচ্ছেন পন্থ। ১৩টি উইকেটের নেপথ্যে রয়েছেন তিনি। ১০টি ক্যাচ ধরেছেন এবং তিনটি স্টাম্প করেছেন। পেসারদের বিরুদ্ধেও উইকেটের কাছে এসে কিপিং করার সাহস দেখিয়েছেন পন্থ। দিল্লির কোচ রিকি পন্টিং বলেন, “পন্থের শরীর ধীরে ধীরে ওর কথা শুনছে। চিন্তা ছিল ওর উইকেটরক্ষা করা নিয়ে। কিন্তু সে সব আর নেই। ব্যাট হাতেও নিজের ক্ষমতা বুঝিয়ে দিয়েছে পন্থ।”
শুধু ব্যাটিং কোচ আমরে বা কোচ পন্টিং নন, পন্থকে নিয়ে খুশি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। দিল্লির ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট বলেন, “টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে পন্থকে অবশ্যই রাখা উচিত। মিডল অর্ডারে ওর ব্যাট করা উচিত। তবে কত নম্বরে ব্যাট করতে নামবে সেটা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়। কোন ম্যাচ, কোন বোলারের বিরুদ্ধে খেলছে সেটার উপর নির্ভর করবে পন্থ কত নম্বরে নামবে।”
২০২২ সালের গাড়ি দুর্ঘটনা পন্থকে আগের থেকে অনেক বেশি পরিণত করেছে। এখন তিনি জানেন কোথায় থামা উচিত। সতীর্থ অক্ষর পটেল বলেন, “দেড় বছর আগে পন্থ যেমন ছিল, তার থেকে এখন অনেক পরিণত। ওর কথার মধ্যে সেই ছাপ রয়েছে। আগে এসে পন্থ বলতো, “এটা করে দেব, সেটা করে দেব।” কিন্তু পন্থ এখন বোঝে সেটা সম্ভব নয়। অনেক বেশি ধৈর্য দেখায়। এখন পন্থ বলে, “সময় নেব। ম্যাচ জিতে শেষ করে তবে ক্রিজ় ছাড়ব।”
পন্থ নিজেও সময়ের সঙ্গে অনেক বেশি তরতাজা হয়ে উঠছেন। তিনি বলেন, “মাঠে যত বেশি সময় থাকছি, তত সুস্থ লাগছে।” শুধু তিনি ভাল হয়ে উঠছেন এমন নয়। পন্থকে খেলতে দেখে আনন্দে মেতে উঠছেন সমর্থকেরাও। গাড়ি দুর্ঘটনার পর বেঁচে থাকাই যেখানে প্রশ্নের মুখে ছিল, সেখানে পন্থ খেলছেন। এটাই তো বিরাট পাওয়া। কত রান করছেন, সেটা তো শুধু সংখ্যা। পন্থ তো জিতেই গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy