স্মৃতি: সেই চেয়ার। ছবি: রয়টার্স।
একবার চার্জ দেওয়া হলে ব্যাটারি চলবে ২০ মাইল পর্যন্ত। ঘণ্টায় আট মাইল গতিবেগে। তৈরি হয়েছিল সুইডেনে। কিন্তু যে লেনোভো কম্পিউটারটি তাতে লাগানো, সেটি চিনে তৈরি।
আবার চশমায় লাগানো ইনফ্রা-রেড সেনসর— যার সাহায্যে তাঁর গালের নড়াচড়া ‘ব্যাখ্যা’ করা হত— সেটি তৈরি হয়েছিল মার্কিন মুলুকে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্বলিত এই হুইলচেয়ারে চেপেই কেমব্রিজ দাপিয়ে বেড়াতেন স্টিফেন হকিং। সেই হুইলচেয়ারটি এ বার কোনও জাদুঘরে থাকুক, চাইছে হকিং পরিবার। লন্ডনের ‘সায়েন্স মিউজিয়াম’-সহ বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে ইতিমধ্যেই হুইলচেয়ারটি সংরক্ষণ করার প্রস্তাব পেয়েছেন তাঁরা।
লন্ডনের ‘সায়েন্স মিউজিয়াম’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি তারা প্রয়াত অধ্যাপকের স্মরণে একটি বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করবে। জাদুঘর কর্তৃপক্ষ চাইছেন, হুইলচেয়ারটি এই প্রদর্শনীর অন্যতম আকর্ষণ হোক। তিন দশকেরও বেশি পুরনো যে যন্ত্রের সাহায্যে হুইলচেয়ারবন্দি হকিং ‘কথা বলতেন’, সেটিও সংগ্রহশালায় রাখতে চায় হকিংয়ের পরিবার।
হকিং যে যান্ত্রিক কণ্ঠস্বরে কথা বলতেন, সেটা মার্কিন বিজ্ঞানী ডেনিস ক্লাটের তৈরি। ‘কল টেক্সট ৩০১০’ নামের এই যন্ত্রটি অধ্যাপকের এতটাই পছন্দ হয়েছিল যে, তিনি একই সঙ্গে তিনটি যন্ত্র কিনে ফেলেন। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তিনটিই ব্যবহার করতেন তিনি। ৩৩ বছর এই ‘ভয়েস সিস্টেম’-এর সাহায্যে কথা বলেছেন হকিং। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতাও দিয়েছেন।
মাস কয়েক আগে এই ‘ভয়েস সিস্টেম’-এর একটি নতুন সংস্করণ তৈরি করেন বেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল বিজ্ঞানী। ২৬ জানুয়ারি সেই যন্ত্রটি হকিংয়ের হুইলচেয়ারে লাগানো হয়েছিল। সেই বিজ্ঞানী দলের অন্যতম পিটার বেনি-র কথায়, ‘‘নতুন প্রযুক্তিতে অধ্যাপকের কণ্ঠস্বর অনেক স্পষ্ট, অনেক কম যান্ত্রিক শোনাচ্ছিল। নতুন যন্ত্রটি ব্যবহার করে আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলাও শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। আক্ষেপের বিষয়, বাইরের দুনিয়া তাঁর সেই কণ্ঠস্বর আর শুনতে পেল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy