পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের দৃশ্য। ছবি শাটারস্টক থেকে নেওয়া।
আর ঠিক এক মাস পর প্রায় ৪ ঘণ্টার চন্দ্রগ্রহণ!
সময়ের হিসেবে শতাব্দীর দীর্ঘতম পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে ২৭ জুলাই। যার আগে ও পরে হবে আংশিক চন্দ্রগ্রহণও। বিরল মহাজাগতিক ঘটনা।
টানা ১ ঘণ্টা ৪৩ মিনিট ধরে চাঁদের মুখ ঢেকে যাবে পুরোপুরি। গত ১০০ বছরে এই প্রথম। তার আগে ১ ঘণ্টা ৬ মিনিট ধরে চলবে আংশিক চন্দ্রগ্রহণ। আবার পূর্ণগ্রাস হয়ে যাওয়ার পর শুরু হবে আংশিক গ্রহণ, যা চলবে আরও ১ ঘণ্টা ৬ মিনিট ধরে।
তার মানে, পূর্ণ আর আংশিক চন্দ্রগ্রহণ মিলে মোট ৩ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট (১ ঘণ্টা ৪৩ মিনিট + ১ ঘণ্টা ৬ মিনিট + ১ ঘণ্টা ৬ মিনিট) আলো-আঁধারিতে ঢাকা থাকবে চাঁদ। এই দীর্ঘতম পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ কলকাতায় দেখা যাবে ২৭ জুলাই মধ্য রাত থেকে ২৮ জুলাই ভোর রাতের ওই এক ঘণ্টা ৪৩ মিনিট। দেখতে পারবেন এশিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ইউরোপের মানুষও।
আরও খবর: নোবেলজয়ী গবেষণা প্রকল্পে বাঙালি বিজ্ঞানী
স্মার্টফোনকেই মাইক্রোস্কোপ বানিয়ে ফেলল খুদে পড়ুয়ারা
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আগামী ২৭ জুলাই ভারতীয় সময় রাত ১১.৫৪ মিনিটে শুরু হবে আংশিক চন্দ্রগ্রহণ। চলবে রাত ১টা পর্যন্ত। তার পর রাত ১টায় শুরু হবে শতাব্দীর দীর্ঘতম পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। তা শেষ হবে রাত ২.৪৩ মিনিটে। রাত ২.৪৩ মিনিটে ফের শুরু হবে আংশিক গ্রাস। যা শেষ হবে রাত ৩.৪৯ মিনিটে।
কেন শতাব্দীর দীর্ঘতম হবে এই পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ?
সল্টলেকের ‘পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টার’-এর অধিকর্তা সঞ্জীব সেন আনন্দবাজারকে জানালেন, পৃথিবীকে কেন্দ্র করে উপবৃত্তাকার (অনেকটা ডিমের মতো) কক্ষপথে পাক খায় চাঁদ। পৃথিবীকে এক বার পাক খেতে তার গড়ে সময় লাগে সাড়ে ২৭ দিন। এই সাড়ে ২৭ দিনের মধ্যে চাঁদ এক বার পৃথিবীর কাছে চলে আসে আর তার পরে দূরে চলে যায়। দূরত্বটা যখন সব থেকে কমে যায়, সেটাকে বলে ‘অনুভূ’ (এপিজে) অবস্থান। আর পৃথিবী ও চাঁদ যখন একে অন্যের থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে থাকে, সেই অবস্থানকে বলে ‘অপভূ’ (অ্যাপোজে) অবস্থান।
আরও পড়ুন: মানুষ এড়াতে বদলে যাচ্ছে বন্য জীবন!
তাকিয়ে না-দেখলে আকাশে চাঁদটাও নেই!
২৭ জুলাই সেই ‘অ্যাপোজে’-তেই থাকবে চাঁদ ও পৃথিবী। একই সরলরেখায় থাকবে চাঁদ, সূর্য আর পৃথিবী। চাঁদ আর পৃথিবী কারওই নিজের আলো নেই। সূর্যের আলোতেই তারা আলোকিত হয়। সূর্য আর চাঁদের মাঝে তাই পৃথিবী এসে পড়লে মুখ ঢেকে যায় চাঁদের। হয় চন্দ্রগ্রহণ।
চেহারায় বড় কোনও বস্তুর সামনে কোনও বস্তু এসে পড়লে ছায়ার দু’টি এলাকা তৈরি হয়। প্রচ্ছায়া (আমব্রা) আর উপচ্ছায়া (পেনাম্ব্রা)।
সূর্যের আলো পৃথিবীর উপর পড়লে তেমনই একটি প্রচ্ছায়া কোণ তৈরি হয়। পৃথিবীকে অতিক্রম করতে করতে কোণের মাঝামাঝি অংশ দিয়ে চাঁদ অতিক্রম করলে তখন চাঁদের গতি মন্থর হয়ে যাবে। পৃথিবীকে অতিক্রম করতে বেশি সময় লাগবে। তাই দীর্ঘতম হচ্ছে এই চন্দ্রগ্রহণ।
ভারতে ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই একটি চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে, তবে তা আংশিক। ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি একটি পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ হবে। তবে তা ভারত থেকে দেখা যাবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy