দৈর্ঘ্যের দিক থেকে সবচেয়ে লম্বা গাড়ি হিসাবে গিনেস বুকে নাম তুলে নজির গড়েছে ‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’। আশির দশকে এই গাড়িটি তৈরি করা হয়। ২০০৩ সালে গিনেস বুকে দীর্ঘতম গাড়ি হিসাবে নজির গড়েছে সেটি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:৪৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
কথায় বলে, ‘পড়াশোনা করে যে, গাড়িঘোড়া চড়ে সে’। বিলাসবহুল গাড়িতে চড়ার শখ যে কমবেশি অনেকের রয়েছে, তা অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু কখনও ভেবেছেন, জীবনে এমন কোনও গাড়িতে চেপে ঘুরবেন যার দৈর্ঘ্য নীল তিমির চেয়েও বেশি?
০২১৯
হলিউডি ছবিতে বার বার দেখা মেলে সাদা রঙের লিমোজিনের। সাধারণত চরিত্রের বিলাসিতার প্রমাণে বড় পর্দায় এই গাড়ির ব্যবহার হয়। হিন্দি সিনেমাতেও মাঝেমধ্যে লিমোর ব্যবহার দেখা গিয়েছে। কিন্তু আশির দশক থেকে যে পরিমাণে এই গাড়িগুলির ব্যবহার ছবিতে দেখা যেত, বর্তমানে তা কমে গিয়েছে অনেকটাই।
০৩১৯
দৈর্ঘ্যের দিক থেকে সবচেয়ে লম্বা গাড়ি হিসাবে গিনেস বুকে নাম তুলে নজির গড়েছে ‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’। আশির দশকে এই গাড়িটি তৈরি করা হয়। ২০০৩ সালে গিনেস বুকে দীর্ঘতম গাড়ি হিসাবে নজির গড়েছে সেটি।
০৪১৯
১৯৮৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার বারবাঙ্কে তৈরি করা হয় লিমো ক্যাডিলাক এলডোরাডোস। বিশেষ বরাত দিয়ে এই গাড়িটি তৈরি করান জে ওহরবার্গ।
০৫১৯
এই লিমোর দৈর্ঘ্য ছিল ৬০ ফুট। ২৪ চাকার এই গাড়ির সামনে এবং পিছনের দিকে এক জোড়া ভি৮ ইঞ্জিন বসানো ছিল।
০৬১৯
নব্বইয়ের দশকে হলিউডের বহু ছবিতে দীর্ঘতম লিমোর ব্যবহার দেখা গিয়েছে। কিন্তু ধীরে ধীরে লিমোর ব্যবহার কমে যেতে থাকে। গাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রচুর খরচ হত। এমনকি এত লম্বা গাড়ি পার্কিংয়ের অসুবিধাও হতে শুরু করে। পড়ে থাকতে থাকতে এক সময় ভগ্নাবশেষে পরিণত হয় গাড়িটি।
০৭১৯
জিনিসপত্র বিক্রির একটি ওয়েবসাইটে পুরনো লিমো গাড়িটির খোঁজ পান নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা ম্যানিং। কিন্তু গাড়িটি কেনার মতো পর্যাপ্ত টাকা তাঁর কাছে ছিল না। ২০১৯ সালে ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোর একটি গাড়ি সংগ্রহশালার মালিক মাইকেল ডেজ়ার গাড়িটি ম্যানিংয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে কেনেন।
০৮১৯
পুরনো লিমো গাড়িটি আবার নতুন করে তৈরির সিদ্ধান্ত নেন ম্যানিং এবং মাইকেল। গাড়িটি দু’ভাগে ভাগ করে অরল্যান্ডো পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে গাড়ি নির্মাণকারীদের একটি দল নিয়ে হাজির হন ম্যানিংও। স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, গাড়ি সারাই করতে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
০৯১৯
তিন বছর ধরে পুরনো লিমো গাড়িটির ভোলবদল করেন ম্যানিং। পুরনো গাড়ির আসন থেকে শুরু করে ড্যাশবোর্ড-সহ আরও অনেক কিছু খুলে ফেলেন তিনি। অন্য পুরনো গাড়ির অংশ লিমোর সঙ্গে জুড়ে দেন ম্যানিং এবং তাঁর দল।
১০১৯
লিমো গাড়িটি নতুন করে তৈরি করতে তার দৈর্ঘ্যও বাড়িয়ে ফেলেন ম্যানিং। নীল তিমির দৈর্ঘ্য সাধারণত ৮০ থেকে ৯০ ফুট পর্যন্ত হয়। ‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’-এর দৈর্ঘ্য গিয়ে দাঁড়ায় ১০০ ফুট দেড় ইঞ্চিতে।
১১১৯
গাড়ি বিশেষজ্ঞদের দাবি, পর পর ছ’টি হন্ডা সিটি সেডান গাড়ি দাঁড় করানোর পর সেগুলির পাশে ‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’ রাখলে দৈর্ঘ্যের দিক থেকে এগিয়ে থাকবে লিমো গাড়িটি।
১২১৯
ভোলবদল হওয়া লিমো গাড়িটি এখনও পর্যন্ত বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়ির নজির গড়েছে। গাড়ির সামনের দিকে তিন জোড়া, মাঝখানে চার জোড়া এবং পিছনের দিকে পাঁচ জোড়া চাকা রয়েছে। ২৪টি চাকাযুক্ত এই গাড়ির ওজন ৯০০০ কিলোগ্রামেরও বেশি।
১৩১৯
‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’-এর ওজন বজায় রাখতে লোহার তৈরি বার ব্যবহার করা হয়েছে। গাড়ির চালকের আসনে দরজা খুলে বসতে গেলেই এই ধরনের বার নজরে পড়ে।
১৪১৯
‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’ গাড়ির ভিতর একসঙ্গে ৭৫ জন বসতে পারেন। গাড়ির ভিতরে রয়েছে বাথটাব, একাধিক টেলিভিশন সেট, রেফ্রিজ়ারেটর, বসার জন্য আরামদায়ক সোফা।
১৫১৯
পিছনের দিকের দরজা দিয়ে গাড়ির ভিতর বসতে চাইলে সেই দরজা রিমোট দিয়ে খুলতে হয়। স্লাইডিং পদ্ধতির মাধ্যমে সেই দরজা খোলাবন্ধ হয়।
১৬১৯
‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’ গাড়িটির পিছনে রয়েছে একটি হেলিপ্যাড। খুব সহজেই এই হেলিপ্যাডে হেলিকপ্টার অবতরণ করতে পারে।
১৭১৯
হেলিপ্যাডের সামনের দিকে রয়েছে ছোট সুইমিং পুল। অন্তত দুই থেকে চার জন এই পুলের ভিতর একসঙ্গে নামতে পারেন।
১৮১৯
সুইমিং পুলের সামনে রয়েছে খেলার জায়গা। কেউ চাইলে সুইমিং পুল থেকে উঠে আসার পর সেই ফাঁকা জায়গায় বসে বিশ্রামও নিতে পারেন।
১৯১৯
তবে ভোলবদল করার পরেও ‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’কে রাস্তায় চালানো যাবে না বলেই জানিয়েছেন ম্যানিং। বর্তমানে অরল্যান্ডোর একটি সংগ্রহশালায় গাড়িটি রাখা রয়েছে, যেখানে সারা বিশ্বের অনন্য এবং বিরল গাড়ি সংগ্রহ করে রাখা হয়।